শতায়ু অবিলাসী বেগমকে তার ভাতিজারা গোয়াল ঘরের পাশে ১৪ বছর ধরে ছাউনিতে রেখেছিল। ঐ ঘর থেকে আলোর মুখ দেখেননি তিনি।
করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি ত্রাণ সহায়তা দিতে গিয়ে এক ভলেন্টিয়ার শতায়ু অভিলাসী বেগমের সন্ধান পান। বিষয়টি তিনি উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ফাহমিদা হককে জানান। ইউএনও বৃদ্ধকে সেখান থেকে উদ্ধার করেন। উপজেলা প্রশাসন থেকে ঘর নির্মাণ করে তাকে থাকার ব্যবস্থা করে দেন।
চাঁদপুর জেলার মতলব পৌরসভার নবকলস এলাকার প্রধানীয়া বাড়ীর আবিলাসী যে একচালা ছাউনিতে থাকতো, তাতে নেই কোন বিছানা,নেই মশারী কিংবা অন্যান্য প্রয়োজনীয় আসবাপত্র। শুধু খাবার দিয়ে যাওয়া হত। তিনি রোদ, বৃষ্টি, ঝড় সবকিছু মোকাবেলা করেছেন এই ছাউনিতে থেকেই।
এছাড়া গত ৪/৫ বছর ধরে কানে শোনেনা,চোখে দেখেনা এবং কথাও বলতে পারে না জনমদুখিনী আবিলাসী। বাড়ীর কোনো মানুষ কিংবা জনপ্রতিনিধির চোখেও পড়েনি আবিলাসীর এ কষ্টের জীবন।
কোভিড ১৯ প্রতিরোধে সরকারি খাদ্য সহায়তা বিতরণ করতে গিয়ে প্রথম বিষয়টি দেখতে পান স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সুমন।পরে সে দলের অন্য সদস্যদের সাথে বিষয়টি আলোচনা করেন।
স্বেচ্ছাসেবক সুমন বলেন, ওই বৃদ্ধ মহিলাকে গোয়াল ঘর লাগোয়া ছাউনিতে দেখে আমি থমকে যাই। তারপর ওই বাড়ীর লোকজনের সাথে কথা বলি। এরপর আবিলাসীর বন্দিদশা জীবনের কথা আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা হক স্যারকে জানাই।
আবিলাসীর ভাতিজা মোঃ শাহ আলম প্রধান বলেন,ওনি শুনেছি জন্ম থেকেই বোবা। প্রায় ২০ বছর আগে জ্বর হওয়ার পর থেকে ওনি কানে শোনে না ও চোখে দেখে না। এছাড়া তাঁর স্বামী ও সন্তানের কথা কেউ বলতে পারছে না
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা হক বলেন, আবিলাসীর কথা শুনেই গত বুধবার রাতে আমি তাঁর কাছে ছুটে যাই। তাঁর থাকার জায়গা দেখে বিস্মিত ও আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ি। ২৯মে শুক্রবার থেকে আবিলাসী থাকবে ২৪ ঘন্টায় উপজেলা প্রশাসন হতে নির্মাণ হওয়া ঘরে।পাবে বয়স্ক ভাতা।ছয়জন ভাতিজা নিয়মিত দেখাশোনা করছে কিনা তাও মনিটরিং করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ২৪ ঘন্টায় কাজটি সমাপ্ত করতে সার্বিক সহযোগিতার জন্য ভলেন্টিয়ার সুমন, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ রুহুল আমিন এবং উপ-সহকারী প্রকৌশলী কামরুল হাসানকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।আমাদেরকে নিজ নিজ পরিবারের বয়োবৃদ্ধ সদস্যদের প্রতি যত্নবান হতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন