শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

গুলশান থেকে হোটেল-রেস্তোরাঁ উচ্ছেদ হলে অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে

ফেডারেশন অব হোটেল, গেস্টহাউস অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের দাবি

প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : গুলশান, বনানী ও উত্তরার আবাসিক এলাকা থেকে হোটেল-রেস্তোরাঁসহ অন্যান্য বিনোদন স্থাপনা উচ্ছেদ করলে জাতীয় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে। বিশেষ করে গার্মেন্টস শিল্পের বায়ার এ দেশে আসবে না; কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, চীনসহ অন্যান্য পার্শ্ববর্তী দেশে চলে যাবে। এতে প্রতি বছর দুই বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ক্ষতি হবে। জাতীয় অর্থনীতির স্বার্থে গুলশান, বনানী ও উত্তরার আবাসিক এলাকা থেকে হোটেল, রেস্তোরাঁ ও অন্যান্য বিনোদন স্থাপনা উচ্ছেদ না করে সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছে ফেডারেশন অব হোটেল, গেস্টহাউস অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন।
গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে ‘হোটেল আমারি’তে ফেডারেল অব হোটেল গেস্টহাউস অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সম্প্রতি গুলশানে হামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই সংগঠনভুক্ত অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে সিকিউরিটি আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর ও সিসিটিভি স্থাপনসহ বিভিন্ন নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। অতিরিক্ত নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। উন্নত নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সরকারের সহযোগী হিসেবে এসব প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব পালন করছে। ফলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, নিরাপত্তার কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো উচ্ছেদ নয়, বরং সংরক্ষণই যৌক্তিক ও সঠিক।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের উপদেষ্টা এম এইচ রহমান। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, অভিজাত আবাসিক এলাকায় বাস্তব প্রয়োজনের তাগিদে গড়ে ওঠা হোটেল-রেস্টুরেন্ট উচ্ছেদ পর্যটন শিল্প উন্নয়ন এবং বিদেশি ক্রেতা ও পর্যটকদের আস্থা অর্জনের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। অভিজাত এলাকার বাজেট হোটেল ও উন্নত মানের গেস্টহাউসগুলোতে প্রতিরাতে কমপক্ষে তিন হাজার বিদেশি অবস্থান করে।
এ প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সরকার বৈদেশিক মুদ্রা, মূল্য সংযোজন কর ও কর পাচ্ছে। এ ছাড়া বাণিজ্যিক হারে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির বিল ও অন্যান্য শুল্ক আদায় করছে। সরকারের উচ্ছেদের সিদ্ধান্তে এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায় ধস নেমেছে। প্রতিষ্ঠানের মালিকদের মধ্যে আতঙ্ক ও হতাশা দেখা দিয়েছে। এ সমস্যার সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আলোচনার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে সংবাদ সম্মেলন থেকে।
ফেডারেল অব হোটেল, গেস্টহাউস অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা এম এইচ রহমান বলেন, গুলশান থেকে হোটেল, গেস্টহাউস অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট উচ্ছেদ করলে জাতীয় অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।  
এম এইচ রহমান বলেন, গুলশানের সব হোটেল, গেস্টহাউস অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট বৈধভাবে ব্যবসা করে। তারা নিয়মিত ট্যাক্স, কর ও সিটি করপোরেশনের অনুমতি নিয়েই এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারপরও এগুলো বন্ধ করলে এদেশের পোশাক শিল্পসহ অনেক ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। থাকার জায়গা না পেলে বিদেশী বায়ারেরা আসবে না। ফলে পোশাক শিল্পে ধস নামবে।
তিনি জানান, বাংলাদেশে সরকারি ব্যবস্থাপনায় মাত্র ৩০০ থেকে ৪০০ রুম ভাড়া দিতে পারে। অথচ এর চাহিদা অনেক বেশি। এগুলো আমরাই দিয়ে থাকি। এখন হোটেল বন্ধ করে দিলে বিদেশী ও দেশী ব্যবসায়ীরা কোথায় থাকবেÑসরকারের এ বিষয়টি চিন্তা করা উচিত।  
কোনো হোটেল অবৈধ নেই বলে দাবি করে তিনি বলেন, সরকারের জ্ঞাতসারেই এসব হোটেল, গেস্টহাউস অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ব্যাবসা চলছে। এর সাথে এক লাখ লোক  জড়িত। এগুলো উচ্ছেদ করলে এক লাখ লোক বেকার হবে। এবং ১০ লাখ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এছাড়া হোটেল ব্যবসায়ীরা এ খাতে দুই হাজার কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করেছেন। এ বিনিয়োগের সিংহভাগই ব্যাংক থেকে লোন নেয়া। এখন বন্ধ করে দিলে তারা কীভাবে এ লোন শোধ করবে এ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা।
সরকারকে উদ্দেশ করে এম এইচ রহমান বলেন, এ ব্যবসার জন্য আমরা সবকিছু করতে রাজি আছি। বর্তমান পরিস্থিতির প্রতিনিয়তই পরিবর্তন হচ্ছে। আমরা নিরাপত্তা বাড়িয়ে তিন স্তর করছি। আমরা সরকারের সাথে সহযোগিতা করে ব্যবসা করতে চাই। এরপরও যদি সরকার হোটেল বন্ধ করে দেয়, তাহলে আমরা আইনের আশ্রয় নেব।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি শাহ আলম, যুগ্ম সম্পাদক আশরাফ উদ-দৌলা, আবুল কালাম আজাদ, সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন