লিবিবায় গুলি করে যুবক হত্যার ঘটনায় গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থানায় ৩ মানব পাচারকারী বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ সোমবার (১ জুন) দুপুরে লিবিয়ায় গুলিতে মুকসুদপুর উপজেলার বামনডাঙ্গা গ্রামের নিহত সুজন মৃধার পিতা কাবুল মৃধা বাদী হয়ে মুকসুদপুর থানায় এ মামলা দায়ের করেন ।
এ মামলায় মানব পাচারকারী গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার সুন্দরদী গ্রামের ওসমান শেখের ছেলে লিয়াকত শেখ ওরফে লেকু শেখ (৪৫), একই উপজেলার যাত্রাবাড়ী গ্রামের মৃত রজব আলী মোড়লের ছেলে রব মোড়ল (৪৫) ও মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার সত্যবর্তী গ্রামের আ: মজিদ সরদারের ছেলে জুলহাস সরদারকে আসামী করা হয়ে ।
মামলার বাদী কাবুল মৃধা জানান, গত ১ জানুয়ারী তার ছেলে সুজন মৃধা ও ভাগ্নে ফরিদপুর জেলার সালথা থানার আলমপুর গ্রামের কবির শেখের ছেলে কামরুল শেখকে ৮ লাখ টাকা ও মুকসুদপুর উপজেলার সুন্দরদি গ্রামের কালাম শেখের ছেলে ওমর শেখকে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে লিবিয়া পাঠিয়ে ভাল বেতনে চাকুরী দেবার পলোভন দেয় রব মোড়ল । এ সম্মত হয়ে ১৫ জানুয়ারী তিনি ২ লক্ষ ৫০ হাজার ও কালাম শেখ ৫০ হাজার টাকা দালাল রব মোড়কে দেন। পরে রব মোড়ল অপর দু’ আসামীর কাছে এ টাকা পৌঁছে দেন। গত ৫ ফেব্রুয়ারী আসামীরা লিবিয়া পাঠানোরে উদ্দেশ্যে সুজন মৃধা, কামরুল শেখ ও ওমর শেখকে বাড়ী থেকে ঢাকায় নিয়ে যান। এরপর ভারত থেকে দুবাই, কুয়েত ও মিশর হয়ে লিবিয়া তাদের পাঠানো হয় । ১১ ফেব্রুয়ারী আসামীদেরকে ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা দেয়া হয়। লিবিয়া যাওয়ার এক মাস পর চুক্তি ভেঙ্গে লিবিয়ার বেনগাজীর মিজদাহ শহরে নিয়ে সুজন, কামরুল ও ওমর শেখকে আটক করে। পরে মুক্তিপনের দাবীতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। দালাল চক্রটি সুজন মৃধা, কামরুল শেখ ও ওমর শেখের পরিবারের কাছে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করে নির্যাতনের ভয়েস ম্যাসেজ তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে প্রেরণ করে। পরে ম্যাসেজ পেয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যানের বিষয়টি আসামী ৩ দালালকে জানালে তারা দাবীকৃত টাকা না দিলে কিছেই করতে পারবে না বরে জানিয়ে দেয়। এরপর ২৮ মে সুজন মৃধা ও কামরুল শেখকে গুলি করে হত্যা করে । এ সময় ওমর শেখ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হন।
এ ব্যাপারে মুকসুদপুর থানার ওসি মীর্জা আবুল কালাম আজাদ জানান, দুই যুবককে গুলি করে হত্যা ও অপর এক যুবককে গুলি করে আহত করার ঘটনায় ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পরপরই পুলিশ আসামীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে । কিন্তু আসামীরা পলাতক রয়েছে। আসামীদের ধরতে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। দ্রুত আসামীদের গ্রেফতার করে আইনে আওতায় আনা হবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি লিবিয়ায় গুলি করে ২৬ বাংলাদেশিকে হত্যা করা হয়। নিহতদের মধ্যে গোপালগঞ্জের মুকসদুপুর উপজেলার সুজন মৃধা রয়েছেন। মুকসুদপুরের অপর যুবক ওমর শেখ গুলিবিদ্ধ হয়ে লিবিয়ার ত্রিপলির একটি হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষনণ রয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন