শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের দুই কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় সিলেট কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে শ্রমিকদের দু’পক্ষের সংঘর্ষে ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৪টা থেকে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। দুইপক্ষই লাঠিসোটা নিয়ে একে অপরকে আক্রমণ ও ভাঙচুর করে। এসময় শ্রমিকদের লক্ষ করে গুলি ছোঁড়া হয় বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ও সিলেট সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিকের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দিয়ে প্রকাশ্যে মাঠে নামে শ্রমিকরা। মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে পুরাতন রেল স্টেশন সংলগ্ন বাবনা পয়েন্টে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে তারা অবস্থান নেন। এ সময় তারা ফলিকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে শ্লোগান দিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়।
জানা যায়, বিকেলে আন্দোলনকারী শ্রমিকরা বাস টার্মিনাল এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করছিলেন। মিছিল থেকে বাস টার্মিনাল এলাকায় অবস্থিত এনা পরিবহনের কাউন্টারের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত ফলিকের অফিস সামনে আসতেই সংষর্ঘে জড়িয়ে পড়েন দুইপক্ষ। আন্দোলনকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, ফলিকের অফিস থেকে তার ছেলে শ্রমিকদের লক্ষ করে গুলি ছুড়েন। সংঘর্ষে বেশকয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, ঈদের আগে কল্যাণ তহবিলের টাকা থেকে পরিবহন শ্রমিকদের ঈদ উপহার হিসেবে খাদ্যসামগ্রী প্রেরণের দাবি জানিয়েছিলেন কয়েকজন শ্রমিক নেতা। কিন্তু সেলিম আহমদ ফলিক এতে রাজি হননি। পরে তার কাছে তহবিলের প্রায় আড়াই কোটি টাকার হিসাব চাওয়া হয়। কিন্তু মাত্র ৪১ লাখ টাকার হিসাব দেন তিনি।
পরিবহন শ্রমিকদের সংগঠন ‘মিতালী শ্রমিক ইউনিয়নে’র সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ আহমদ বলেন, মাত্র ৪১ লাখ টাকার হিসেব দিয়ে বাকি ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। শ্রমিকদের কল্যাণ তহবিলের পুরো টাকার হিসাব না দিলে কার্যালয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না বলে হুশিয়ারী জানান ওই শ্রমিক নেতা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পরিবহন শ্রমিকরা লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পরস্পরের উপর হামলা চালায়। অভিযুক্ত শ্রমিক নেতা ফলিকের ছেলের উসকানী ও নেতৃত্বে আন্দোলনরত শ্রমিকদের প্রথম হামলা ঘটনায় সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে মিতালী পরিবহনের একটি বাস ও এনা পরিবহনের কাউন্টারে ভাঙচুর চালানো হয়। সংঘর্ষ থামাতে র্যাব ও পুলিশ ব্যাপক চেষ্টা চালিয়ে ও ফাঁকা গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিকাল প্রায় ৫টার দিকে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আসে।
মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জেদান আল মুসা জানান, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়েছে। দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি খাইরুল ফজল বলেন, সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে। এছাড়া র্যাব ৩ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন