শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

করোনায় চিরচেনা রূপবদল

পরিবর্তনের ধাক্কা লাগেনি একমাত্র কৃষি সেক্টরে

মিজানুর রহমান তোতা : | প্রকাশের সময় : ৪ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

ভয়ঙ্কর ভাইরাস করোনা। রাতারাতি পাল্টে দিল অনেককিছু। চিরচেনা রূপবদল ঘটালো। দিকবদল আর বাঁকগুলো ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে। এটি রীতিমতো ইতিহাসের পালাবদল। তছনছ হলো মাত্র দুই আড়াইমাসে। সমাজ ও ব্যক্তি জীবনের গতানুগতিক চলাচল ও খাদ্যাভাসও করোনার সূতোয় বাধা পড়ে গেছে। চলছে চারিদিকে ভিন্নধারার জীবনযাত্রা। ধন-সম্পত্তি থাকলেই যে সবকিছু তা নয়, সেক্ষেত্রেও স্বাক্ষর রেখেছে করোনা। ঘটালো সামগ্রিক পরিস্থিতি এবং পরিবেশের পরিবর্তন। আইসোলেশন ও হোম কোয়ারেন্টিনসহ অনেক অপ্রচলিত শব্দের প্রচলন ঘটেছে অতিমাত্রায়। করোনায় পরিবর্তনের ধাক্কা লাগেনি একমাত্র কৃষি সেক্টরে। কৃষি অর্থনীতির চাকা সম্পুর্ণ সচল ছিল স্বাভাবিক গতিতে। এর বাইরে সব সেক্টরই কমবেশি পিষ্ট হয়েছে করোনার যাতাকলে।
কৃষি বিশেষজ্ঞদের কথা, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যারা শিল্প ও বাণিজ্য নির্ভর, তারা করোনার অল্পদিনের ধাক্কায় খাদ্যশস্য নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন। কারণ টাকা থাকলেই খাদ্য পাওয়ার সুযোগ থাকবে না। কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের চিত্র সেক্ষেত্রে ভিন্ন। ধান ও সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের সুপার বাম্পার ফলন ঘটিয়ে কর্মবীর কৃষকরা দেশের মানুষের খাদ্য চাহিদার যোগান দিচ্ছেন। করোনার কারণে প্রয়োজনের তাগিদে কৃষিতে বহুমাত্রিকতা ও গতিশীলতা এসেছে উল্লেখ করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. আখতারুজ্জামান দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, সরকারি পৃষ্টপোষকতায় কৃষি অর্থনীতি ভিন্নমাত্রা পেয়েছে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর প্রতি ইঞ্চি জমির ব্যবহার করার রীতিমতো হিড়িক পড়েছে। বছর খানেক আগে থেকে নানা কারণে ধান আবাদ কমে যায়। এখন ধান আবাদে জোর দেওয়া হয়েছে। বোরোতে ২ কোটি মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের পর চলতি আউশ আবাদ বৃদ্ধিতে দেওয়া হয়েছে ৩৭ কোটি টাকার প্রণোদনা।
মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা করোনায় প্রায় ৭০দিন সার্বক্ষণিকভাবে কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ দিয়েছেন। করোনায় বহু মানুষ কৃষির দিকে ঝুঁকেছেন। বর্গা দেয়া জমি এখন নিজেরাই করছেন। বাড়ির আঙিনায় এমনকি সরকারি অফিস এলাকায় পড়ে থাকা জায়গাতেও আবাদ করা হচ্ছে। ভিন্ন পেশার মানুষও এখন কৃষিকাজ করছেন।
কৃষি ব্যবস্থা করোনা দুর্যোগের মধ্যে আমুল পরিবর্তন ঘটেছে। গতকাল (বুধবার) বারীনগরের মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, আগের সেই দৃশ্য নেই। চাষিরা পাশাপাশি দাঁড়িয়ে বা বসে গুণগুনিয়ে গান গেয়ে কৃষিকাজ করার চিরচেনা ধারা বদলে দিয়েছেন। যে যার মতো আপনমনে সবজিসহ অন্যান্য খাদ্যশস্য উৎপাদন করছেন। সরকারি নিয়ম ও বিধি বিধান মেনে ব্যক্তিক দূরত্ব বজায় রেখে অত্যন্ত শৃঙ্খলার সাথে চাষিরা কাজ করছেন।
হৈবতপুরের চাষি আলিম উদ্দিন জানালেন, প্রথমদিকে কিছুটা থমকে ছিলাম। তারপর বুকে সাহস নিয়ে প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে কাজ করছি। আল্লাহর রহমতে মাঠের কারো করোনা আঘাত করতে পারেনি। আশেপাশের মাঠের চাষিদেরও প্রায় একই ধরণের বক্তব্য। যতদুর চোখ যায় মাঠে মাঠে একেবারে নতুন আঙ্গিকে চাষাবাদ করছেন কৃষকরা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন