শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আরেক দফা কঠোর লকডাউন

আহবান অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০২০, ১২:০২ এএম

করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় সুন্দর অর্থনীতির স্বার্থে আরেক দফা কঠোর লকডাউন দেয়ার আহবান জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা। গতকাল ‘রিসারজেন্ট বাংলাদেশ’ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তারা এ আহবান জানান।
‘রিসারজেন্ট বাংলাদেশ’ কোভিড-১৯ পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে কৌশল ও নীতি-সহায়তা প্রণয়নের স্বার্থে গঠিত একটি প্ল্যাটফর্ম। মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), বিল্ড এবং পলিসি এক্সচেঞ্জের যৌথ উদ্যোগে এই প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠিত।

লকডাউন প্রস্থান কৌশল কাঠামো উপস্থাপনের অংশ হিসেবে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এ আলোচনার আয়োজন করে ‘রিসারজেন্ট বাংলাদেশ’। আলোচনায় এমসিসিআই সভাপতি নিহাদ কবির সূচনা বক্তব্য রাখেন।
পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ লকডাউন থেকে কিভাবে বের হয়ে আসা যায় তার ওপর প্রস্তাবিত কৌশল কাঠামো এবং রিসারজেন্ট বাংলাদেশের কার্যক্রম, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

আলোচনায় বক্তব্য রাখেন পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর, শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্যসচিব আব্দুল করিম, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভ‚ঁইয়া, সিপিডির সম্মানিত ফেলো প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এনএইচএস ট্রাস্টের ডা. শাকিল ফরহাদ, বেসিসের সাবেক সভাপতি হাবিবুল্লাহ এন করিম, সাবেক আইন সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক, ডেলয়েটের নির্বাহী উপদেষ্টা শরিফ ইসলাম, বিল্ডারের চেয়ারম্যান আবুল কাসেম খান, ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশেদুল ইসলাম, অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আসাদ ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক রাশেদুর রহমান প্রমুখ। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ও ডিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহীম মুক্ত আলোচনা সঞ্চালনা করেন।

এমসিসিআই সভাপতি নিহাদ কবির বলেন, প্রবৃদ্ধি কী হবে, না হবে এটা নিয়ে এখন ভাবার সময় নয়। এখন মূল ভাবনার বিষয় হচ্ছে বৃহত্তর অর্থনীতির স্বার্থে কীভাবে লকডাউন পরিস্থিতি থেকে সর্বোচ্চ জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে বের হয়ে আসা যায়। যদি করোনা পরিস্থিতি খুব একটা স্থিতিশীলতার দিকে সহসাই না যায় তবে অল্প কিছুদিনের জন্য পুনরায় কঠোর লকডাউন দেয়া যেতে পারে। যাতে সামগ্রিক অর্থনীতি সামনে একটি সুদিন দেখতে পায়। চাহিদা ও জোগানের সাপ্লাই চেইন যদি স্বাভাবিক হয়ে আসে তবে অর্থনীতি আবারও তার গতি ফিরে পাবে।
এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বেসরকারি খাতকে সরকারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে যেতে পরামর্শ দেন, যাতে করে একটি সমন্বিত লকডাউন প্রস্থান পদ্ধতি পরিকল্পনা করা যায়।

সিপিডির ফেলো প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দেশ একটি ক্রান্তিলগ্ন অতিক্রম করছে। নীতিমালা সংশোধন প্রক্রিয়ায় কোনো ত্রু টি থাকা যাবে না। আর্থ-সামাজিক খাতে যাতে কোনোরকম অসামঞ্জস্যতা সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ বলেন, কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি এ বছর ৩ শতাংশ কমে যেতে পারে। বৈশ্বিক বাণিজ্যও ১৩-৩০ শতাংশ কমে আসতে পারে। এশিয়ার রফতানি ৩৬ শতাংশ কমে আসতে পারে এবং সারাবিশ্বে প্রায় ১৯৫ মিলিয়ন কর্মজীবী তাদের চাকরি হারাতে পারেন। কিন্তু প্রকৃত ক্ষতি নিরূপণে ও করোনার প্রভাব যাচাই করতে আমাদের সঠিক, নির্ভরযোগ্য ও নির্ভুল তথ্য-উপাত্ত প্রয়োজন।

সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর মধ্যে সুষম সমন্বয় প্রয়োজন বলে অভিমত দেন শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ। একই সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তাও উল্লেখ করেন তিনি। রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ এ মহামারি থেকে উত্তোরণে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির পরামর্শ দেন।

সাবেক আইন সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হকও সরকার ও বেসরকারি খাতের মধ্যে সমন্বয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আব্দুল করিম বলেন, লকডাউন থেকে প্রস্থানের কৌশল নির্ধারণ এ মুহূর্তে জীবন ও জীবিকার জন্য প্রয়োজন। এমন একটি পরিকল্পনা প্রণয়নে আমরা তথ্যপ্রযুক্তি, বিগ ডাটা ইন্টেলিজেন্স ও ব্যাক চেইনের সাহায্য নিতে পারি।

বিল্ডের চেয়ারম্যান আবুল কাসেম খান বলেন, করোনা পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি, যদিও কিছু কিছু অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সীমিত পরিসরে চলছে। লকডাউন-পরবর্তী অর্থনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনায় কৌশল নির্ধারণে আইন ও নীতিমালার কঠোর প্রয়োগ প্রয়োজন। সেজন্য আমাদের দরকার সঠিক, নির্ভরযোগ্য, তথ্য-উপাত্তভিত্তিক নির্ভুল ডাটা যাতে করোনার প্রকৃত প্রভাব পর্যালোচনা করা যায়। কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যতীত জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য নিরাপত্তার বিষয়টিকেও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় রাখতে হবে। ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসাসমূহের সুরক্ষার ওপর জোরারোপ করেন। কর্মসংস্থান সৃষ্টি এখন একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ মন্তব্য করেন তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
মেহেদী হাসান সুমন ৬ জুন, ২০২০, ১:৩৪ এএম says : 0
৭০ হাজার গার্মেন্টস কর্মী ছাটাই। বিভিন্ন সেক্টরে কর্মীরা এখনো বেতন পায় নাই। এরপরও কি শিক্ষা হয় নাই। এরপরও লক-ডাউন চায় কে? জীবিকা না থাকলে জীবনও থাকবে না।
Total Reply(0)
MD Atik ৬ জুন, ২০২০, ১:৩৪ এএম says : 0
এদেরকে লকডাউনে রাখা হোক এদের চিল্লানি আর ভাল লাগে না অসহ্য
Total Reply(0)
Md Jahidul Islam ৬ জুন, ২০২০, ১:৩৫ এএম says : 0
স্যতি কি লকডাউন হবে
Total Reply(0)
Shahin Hossain ৬ জুন, ২০২০, ১:৩৫ এএম says : 0
এপ্রিলের 26 তারিখ থেকেই আসল লকডাউন শুরু হয়েছিল গার্মেন্ট খুলে দিয়ে লকডাউনের অর্থ বুঝে তারপর চিল্লাচিল্লি করেন
Total Reply(0)
MD Bellal Hossain ৬ জুন, ২০২০, ১:৩৫ এএম says : 0
বেচে থাকলে টাকা অনেক কামাতে পারবো। তাই কঠিন থেকে কঠিন লকডাওন চাই।
Total Reply(0)
Mostofa Kamal ৬ জুন, ২০২০, ১:৩৫ এএম says : 0
আবার লকডাউন দিলে সাধারণ মানুষ না খেয়ে মরবে।
Total Reply(0)
Suriya Sharmin ৬ জুন, ২০২০, ১:৩৬ এএম says : 0
I m also agree with it
Total Reply(0)
Abdur Rafi ৬ জুন, ২০২০, ৮:১৮ এএম says : 0
জনগণ আর না খেয়ে থাকতে পারবেনা। লকডাউন দিয়ে সব চালু করে দিন যা মরে যা বাচে। খাবারের অভাবে মরতে হবে আমাদের মত গরিবের।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন