বাংলাদেশে বিনিয়োগ করা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মুনাফা স্থানান্তর প্রক্রিয়া সহজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও অর্থ বিভাগের সচিবকে আগামী ২ মাসের মধ্যে এটি করতে বলেছেন তিনি। করোনাভাইরাসের অধিক সংক্রমণ এলাকাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জোনভিত্তিক’ লকডাউনের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনে মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ এ তথ্য জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যারা বাইরে থেকে আসবে বিনিয়োগ করতে, একটা কমপ্লিকেসির (জটিলতা) বিষয়ে আমাদের জানিয়েছে। তারা যে বিনিয়োগ করত, একটা চুক্তি (এগ্রিমেন্টের) আন্ডারে মুনাফা পাবে। সেই মুনাফাটা তারা কীভাবে এখান থেকে নিয়ে যায়, আমাদের যে সিস্টেম তাতে আমাদের বিনিয়োগকারী যারা এখানে এসেছেন তারা বলেছেন, এখানে কিছু কমপ্লিকেসি আছে। এই কমপ্লিকেসি যদি কমানো না হয়, তাহলে বাইরে থেকে বিনিয়োগ এর চেয়ে বেশি আসবে না।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমরা যদি জটিলাতা একটু কমাতে পারি, তাদের যে প্রফিটটা থাকবে সেটা যাতে তারা আরও ইজিলি তুলে নিয়ে যেতে পারে তাদের দেশে বা বাইরে অন্য কোথাও। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন, তিনি এ বিষয়ে নির্দেশনাও দিয়েছেন। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং অর্থ সচিবকে এ বিষয়ে কাজ করতে বলেছেন।
তিনি বলেন, আগামী ২ মাসের মধ্যে বিনিয়োগ ও রিটার্নটা আইনানুগভাবে বিদেশে বা কাঙ্খিত জায়গায় নিয়ে যেতে পারে। সহজ করার জন্য বাংলাদেশ ও অন্যান্য ব্যাংক যারা আছে তাদের সঙ্গে কথা বলতে বলেছেন।
তিনি বলেন, পাশাপাশি আমাদের ব্যাংকিং সিস্টেমেও ডিপোজিটের ক্ষেত্রে যে জটিলতা আছে, সেগুলো যাতে একটা সহজ করা যায়, সেটা দেখার জন্য বলা হয়েছে। জোনিং করে লকডাউনের বিষয়ে মন্ত্রিসভায় কোনো আলোচনা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা কেবিনেট মিটিংয়ে আলোচনা হয়নি, মন্ত্রী (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) মহোদয়ের সঙ্গে আমার আলোচনা হয়েছে। আমাদেও যে সংক্রামক ব্যাধি আইন আছে, এটা সেই আইনের মধ্যে দেয়া আছে। সেই অনুযায়ী বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর অথরাইজড (কর্তৃপক্ষ)।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এটা সাধুবাদ করেছেন যে, আইটি ব্যবহার করে যেভাবে জোনিং করার চিন্তাভাবনা হচ্ছে, এটা সারা পৃথিবীতে করা হচ্ছে। এটাতে সুবিধা আছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য এক্সিকিউটিভ মিনিস্ট্রি তারা বসেই যদি মনে করে কোনো জায়গাকে রেড জোন ঘোষণা করা সবার জন্যই ভালো, কারণ সবাই তখন সতর্ক হতে পারবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কোনো এলাকায় যদি অধিক সংক্রমণ থাকে, সেই এলাকাকে যদি স্পেশালি নিয়ন্ত্রণে নেয়া যায়, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন গত রোববারেই। করোনা সংক্রমণ মাত্রা বাড়ার মধ্যে রেড, ইয়োলো ও গ্রিন জোন করে এলাকাভিত্তিক লকডাউনের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার তিন মাসের মাথায় গতকাল পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৬৮ হাজার ৫০৪ জন। আর মোট মৃত্যু হয়েছে ৯৩০ জনের। সুস্থ হয়েছেন ১৪ হাজার ৫৬০ জন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন