রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

২২ জনের মৃত্যু

করোনা উপসর্গ কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৬ হাজার ৬৩৮ জন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

করোনার উপসর্গ জ্বর, শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হয়েছে সারা দেশে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এদের কারো শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ছিল কিনা তা নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। তবে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৫৫৭ জনকে। ছাড় পেয়েছেন ২১৬ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন সাত হাজার ৮৯৩ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে দুই হাজার ৬০২ জনকে। ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৩৬ জন। এখন পর্যন্ত তিন লাখ ছয় হাজার ২৭ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৬ হাজার ৬৩৮ জন।

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রামে করোনা উপসর্গ নিয়ে আরো দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল গতকাল মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যে জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে এ দুজন মারা যান। নগরীর হালিশহরের বাসিন্দা অর্ধেন্দু দে (৬৫) দুপুর ১২ টায় মারা গেছেন। এর আগে সাড়ে ১১ টায় মারা গেছেন নগরীর অক্সিজেন এলাকার মোহাম্মদ আলী (৬০)। তাদের দুজনের করোনা উপসর্গ এবং সেই সাথে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ ছিলো।
যশোর ব্যুরো জানায়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে গতকাল ঘোষিত করোনার টেস্টের ফলাফলে আরো ১৭জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। যবিপ্রবি সূত্র জানায়, যশোরের ৯২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১২ জনের, ঝিনাইদহের ৩৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪ জনের এবং মাগুরার ২১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১ জনের কোভিড-১৯ পজিটিভ পাওয়া গেছে। অর্থাৎ যবিপ্রবির ল্যাবে মোট ১৫১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৭ জনের করোনা পজিটিভ এবং ১৩৪ জনের নেগেটিভ ফলাফল এসেছে। যশোর সিভিল সার্জন দপ্তর জানায়, যশোরে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৫৪। এর মধ্যে একজন মারা গেছে।
নোয়াখালী ব্যুরো জানায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নোয়াখালীতে মফিজ উল্যাহ (৬০) নামের আরও এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৩১। তবে সেনবাগ পৌরসভার কর্মচারী মৃত ফকির আহমদ (৫০) ঢাকা থেকে পজিটিভ হওয়ায় নোয়াখালীর মৃত্যুর পরিসংখ্যানে তাকে অর্ন্তভ‚ক্ত করা হয়নি। সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা ৩০জন বলা হয়েছে। এদিকে গত ২৪ঘণ্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৬০জন। গতকাল দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মোমিনুর রহমান।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে জেলার ৫টি উপজেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬০জন। যার মধ্যে সদরে ৩০, বেগমগঞ্জে ২৫, হাতিয়ায় ৩, কবিরহাটে ১ ও সেনবাগে ১জন রোগী রয়েছে। জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৬৯জন। যার মধ্যে সুস্থ্য হয়েছেন ২০১জন, আইসোলেশনে রয়েছেন ৮৩৮ জন। মোট আক্রান্তদের মধ্যে বেগমগঞ্জে ৪৮০, সদরে ২৭৩, কবিরহাটে ৭৭, চাটখিলে ৭১, সেনবাগে ৬৭, সোনাইমুড়ীতে ৫৫, সুবর্ণচরে ২৮, কোম্পানীগঞ্জে ৯ ও হাতিয়া উপজেলায় ৯জন।
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ও করোনা ফোকাল পার্সন ডা. নিলিমা ইয়াছমিন বলেন, সদরে নতুন করে ৩০ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যাদের মধ্যে একই পরিবারের ৫জন ও অন্য আরও একটি পরিবারের ৬জন সদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন রয়েছেন। বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অসীম কুমার দাস বলেন, উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মফিজ উল্যা নামের আরও এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তিনি কুতুবপুর ইউনিয়নের এনায়েতপুর গ্রামের বাসিন্দা। গত ১জুন ওই ব্যক্তির করোনা শনাক্ত হওয়ার পর থেকে নিজ বাড়ীতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। ৮জুন সকালে তার মৃত্যু হয়। এদিকে নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ২৫জন। যার মধ্যে বেশির ভাগই চৌমুহনী পৌরসভার বাসিন্দা।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একদিনে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকালে রামেক হাসপাতালে একজন, মিশন হাসপাতালে একজন এবং বিকেলে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে একজন মারা যান।
এরা হলেন, রাজশাহী মোহনপুর উপজেলার বাকশৈল গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক লুৎফর রহমান (৬০), নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের কেশবপুর তেপাড়া গ্রামের মুস্তাফিজুর রহমান (৬৩) ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজলোর জৈয়ন্তিপুর গ্রামে রজিদুল ইসলাম (৫৩)।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক জানান, রোববার করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন মুস্তাফিজুর রহমান। ওই দিন তাকে আইসিইউতে রেখে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সোমবার হাসপাতালের বর্হিবিভাগের করোনা ল্যাবে তার নমুনা পরীক্ষা হয়। এতে তার করোনা পজেটিভ আসে। গতকাল গতকাল পৌনে ৩টার দিকে তিনি মারা যান। এর আগে গতকাল সকাল ৮টার দিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে লুৎফর রহমান (৬০) নামের এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মারা যান। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, সোমবার সন্ধ্যায় লুৎফরের করোনা পজিটিভ আসে। ওইদিন রাত ১১টার দিকে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। গতকাল সকালে তিনি মারা যান। গত শনিবার গ্রামের বাড়ি থেকে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিলো। অপরদিকে, গতকাল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজশাহী খ্রিস্টান মিশন হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে রজিদুল ইসলাম (৫০) নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের জৈয়ন্তিপুর গ্রামে।
এছাড়া রাজশাহীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে লুৎফর রহমান (৬০) নামে মোহনপুর মুহিষকুন্ডি মাদরাসা শিক্ষক গতকাল সকালে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ নিয়ে রাজশাহীতে মোট মৃত্যু হলো চারজনের।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় লুৎফরের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। ওইদিন রাত ১১টার দিকে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। গতকাল সকালে তিনি মারা গেছেন। গত শনিবার তার গ্রামের বাড়ি থেকে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিলো।
এদিকে, রাজশাহী বিভাগের ৮টি জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১২৯ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত ও দুজন মারা গেছে। এখন বিভাগে মোট শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ১ হাজার ৭৩০ জন। এর প্রায় অর্ধেকই বগুড়া জেলার। গতকাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য একথা জানিয়ে বলেন, এই বিভাগে মোট আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ১হাজার ৭৩০ জন। এর মধ্যে মারাগেছেন ১৯ জন। এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় ১০ জনসহ সুস্থ্য হয়েছে মোট ৩৯৮ জন রোগী। হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে ৩৮৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮টি জেলার মধ্যে বগুড়ায় ৮৪ ও সিরাজগঞ্জে ৩৩ ও রাজশাহীতে ৯ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
অপর দিকে, রাজশাহীতে কর্মরত এসএ টিভির ক্যামেরা পার্সন আবু সাইদ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি নিজেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজের করোনা পরীক্ষা ল্যাবে তার নমুনা দিলে গত সোমবার রাতে করোনা পজেটিভ বিষয়টি হাসপাতাল থেকে জানানো হয়। গতকাল সকালে আবু সাঈদ নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমনে আরো ১ জনের মৃত্যুসহ নতুন করে ৭০জন আক্রান্তের মধ্যে দিয়ে এ সংখ্যা হাজার অতিক্রম করার মাধ্যমে আরো ভয়াবহ পরিস্থিতির জানান দিচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ার নয়াপট্টি এলাকার ৩০ বছর বয়সী এক যুবকের মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে জেলায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৫। ফলে বরিশাল বিভাগের মৃত্যুর মিছিলে সংখ্যা ২১-এ দাঁড়াল। অপরদিকে বরিশালের প্রথম শ্রেণির বেসরকারী রাহাত-আনোয়ার হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ডা. আনোয়ার হোসেন করোনা সংক্রমিত হয়ে গত রাতে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। তবে বরিশাল মহানগরীর পরিস্থিতি এখনো ভয়াবহ হলেও স্বাস্থ্য বিভাগের সুপারিশের আলোকে লকডাউন করার কোনো উদ্যোগ নেই।
বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলা হাসপাতাল-এর আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ জনকে ছাড়পত্র দেয়ার পরেও চিকিৎসাধীন রয়েছে ১৮ জন। অপরদিকে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ড থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ জনকে ছাড়পত্র দেয়ার পরেও চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা এযাবাতকালের সর্বোচ্চ ৩৪ জনে উন্নীত হয়েছে। এ হাসপাতালটির আইসোলেশন ও করেনা ওয়ার্ডে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার ৩১৯ জন রোগীকে ভর্তি করার পরে ১০৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। চিকিৎসার পরে ৫৬ জন সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন।
খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুর স্ত্রী অ্যাড. সাবিহা খাতুনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
খুলনা মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক প্রিন্সিপাল তারিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল দুপুরে নিশ্চিত হওয়া গেছে নজরুল ইসলাম মঞ্জুর স্ত্রী সাবিহা খাতুনের করোনা পজিটিভ ধরা পরেছে। তিনি নিজ বাসাতেই চিকিৎসকদের পরামর্শে আইসোলেশনে আছেন। স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর এবং ছেলে ও মেয়ে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টিনে থাকবেন। এদিকে নজরুল ইসলাম মঞ্জুর স্ত্রীর করোনা ধরা পরায় মহানগরীর মিয়াপাড়া মোড়স্থ বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো ইসমাইল হোসেন বলেন, দুপুরে বিএনপি নেতা সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জুর মহানগরীর মিয়াপাড়ার তিনতলা বাড়িটি লকডাউন করা হয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার চাঁদপুর থেকে জানান, চাঁদপুরে করোনা উপসর্গ নিয়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে হাজীগঞ্জে স্বামী-স্ত্রীসহ ৫ ও সদরে ১ জন। তারা জ্বর-সর্দিতে ভুগছিলেন বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নিশ্চিত করেছেন। হাজীগঞ্জ উপজেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে গত একমাসে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর পর তাদের মধ্যে ২জনের করোনা রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে। করোনা উপসর্গে মৃতরা হলেন- উপজেলার ৪নং কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন মল্লিক (৬৫), তার স্ত্রী শাহানারা বেগম (৫০),৩নং কালচোঁ ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের সুনিল চন্দ্র দেবনাথ (৫৫), পৌর এলাকার টোড়াগড় গ্রামের আবুল কাশেম (৫৫) ও খাটরা বিলওয়াই'র সিদ্দিক কাজীর ছেলে সাগর কাজী। এদের মধ্যে সাগর কাজী ঢাকায় মারা যায়। সাগর কাজী গতকাল সকালে ঢাকার বাসায় মৃত্যু হয়। তিনি ঢাকার ওয়াইজঘাট এলাকায় ফলের ব্যবসা করতেন। এছাড়া চাঁদপুর সদরের তেলু গাজি (৩৫)। ৪নং কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের জানান, সকাল ৭টায় রামপুর গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন মল্লিক (৬৫) মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর ১০ ঘণ্টা পর স্ত্রী শাহানারা বেগম (৫০) বিকেল ৫টায় মারা যান। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মৃতদের নিজ নিজ এলাকায় দাফন করা হয়েছে। হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বৈশাখী বড়ুয়া জানান, করোনা উপসর্গে মৃতদের দাফন ও সৎকারের জন্য আমাদের পর্যাপ্ত পিপিই বরাদ্ধ আছে। এনিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোন কারণ নেই।
মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, মাদারীপুর পৌরসভার গোলাবাড়ি এলাকার ব্যবসায়ী কবির কাজী (৬০) করোনা উপসর্গ নিয়ে গতকাল ভোর ৫টার দিকে মারা গেছেন।
ইটেরপুল বাজারের মুরগী ব্যবসায়ী কবির কাজী এক সপ্তাহ ধরে জ¦রে আক্রান্ত হয়ে সোমবার সদর হাসপাতালে গিয়ে করোনা টেস্ট দিয়ে বাড়িতে রাতে ঘুমানোর পর ভোর রাতে তিনি মারা যায়। স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসন মৃতের বাড়ি লক ডাউন করে। পরে সকাল ১০টায় স্বাস্থ্য বিধি মেনে ইসলামি ফাউন্ডেশনের লোকজনের উপস্থিতিতে জানাজা শেষে মিলগেট পৌর কবর স্থানে দাফন করা হয়।
মাদারীপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ইকরাম হোসেন বলেন, মৃতের করোনা টেস্টের জন্য নমুনা ঢাকাতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে, মাদারীপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরো ৪০ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সদরে ২৫ জন, কালকিনিতে ৭ জন, রাজৈরে ৮ জন। এ নিয়ে জেলার করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৫৪ জনে। গতকাল দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
মৌলভীবাজার জেলা সংবাদদাতা জানান, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কাগাবলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মাছ ব্যবসায়ি নিমাই উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গত সোমবার মধ্যরাতে সদর উপজেলার কাগাবালা ইউনিয়নের সাতপাক কুনাপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। নিমাই ঔই এলাকার বলা মিয়ার ছেলে। মৌলভীবাজার জেলায় মোট ১৫২ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়েছেন ৫৮ জন, করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃতু হয়েছে ১৬ জনের।


টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরো ১৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সদর উপজেলার তিনজন, গোপালপুর উপজেলার চারজন, মির্জাপুর উপজেলা তিনজন, মধুপুর উপজেলার একজন, কালিহাতী উপজেলার একজন ও দেলদুয়ার উপজেলার একজন রয়েছেন । এ নিয়ে টাঙ্গাইলে ডাক্তার, পুলিশসহ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৬৬ জনে। আজ মঙ্গবার দুপুরে টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসাপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. সদর উদ্দিন জানান, হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে সর্বমোট ১৬জন ভর্তি হয়। তাদের মধ্যে ১৪জন সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বর্তমানে দুই জন চিকিৎসাধীন রয়েছে।
কুমিল্লা : করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে দুইজন মারা গেছে। মৃতরা হরেন, অনিল দাস ও আনোয়ারা বেগম।
লক্ষীপুর : লক্ষীপুরের রামগতিতে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে কামাল উদ্দিন (৫৩) নামে এক স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকালে নোয়াখালীর একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত শিক্ষক কামাল উদ্দিন রামগতি পৌরসভার বাসিন্দা ও উপজেলার চরমেহার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
নীলফামারী : নীলফামামারীতে করোনার উপর্সগ নিয়ে আলমগীর হোসেন (৫৫) নামে এক মুদি ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল দুপুরে জেলা সদরের সোনারায় ইউনিয়নের বাবুরহাট গ্রামের বাড়িতে মৃত্যু হয় তার। উপসর্গ দেখা দেওয়ায় গত সোমবার নমুনা সংগ্রহ করে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
মুন্সীগঞ্জ : মুন্সীগঞ্জে করোনা উপসর্গ নিয়ে দুজন মারা গেছেন। গত সোমবার রাতে মারা যান তারা। নিহতরা হলেন টঙ্গীবাড়ি উপজেলার সোনারং গ্রামের সুলতান শেখ (৬০) ও সদর উপজেলার গোসাইরবাগ গ্রামের মাকসুদা বেগম (৬৫)। জানা গেছে, গতকাল সোমবার রাতে করোনা উপসর্গ নিয়ে টঙ্গীবাড়ি উপজেলার সোনারং গ্রামের সুলতান শেখ অসুস্থ হলে তাকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাপসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু হাসপাতালটির কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি সোনারং গ্রামের কুদরত আলী শেখের পুত্র। প্রায় একই সময়ে করোনা উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার গোসাইরবাগ গ্রামের মাকসুদা বেগম। তাকেও মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। দুজনই শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যান বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসক। মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সুমন কুমার বনিক জানান, রাতেই দুজনের নমুনাও সংগ্রহ করা হয় করোনা পরীক্ষার জন্য। তাদের ডব্লিউএইচও’র প্রটোকল অনুযায়ী ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে দাফনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
কালিয়াকৈর (গাজীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌরসভার (৭,৮,৯) নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র হাজেরা বেগম (৫৫) কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
কালিয়াকৈর পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম তালুকদার জানান, গত রোববার ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে হাজেরার করোনাভাইরাস পরীক্ষায় পজিটিভ আসে। পরে তাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১১টার দিকে তিনি মারা যান।
কাপ্তাই (রাঙ্গামাটি) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, কাপ্তাই উপজেলার স্বাস্থ্য বিভাগের একজন চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল ঐ চিকিৎসকের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে বলে জানিয়েছে কাপ্তাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাসুদ আহমেদ চৌধুরী।
কালীগঞ্জ : গাজীপুরের কালীগঞ্জ থেকে করোনা উপসর্গ নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পথে দীপঙ্কর সেন (৩৩) নামে স্বর্ণের দোকানের এক কারিগরের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকাল ১০ দিকে তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান খাঁন ফারুক মাস্টার। মৃত দীপঙ্কর সেন জামালপুর ইউনিয়নের কলাপাটুয়া গ্রামের মতি লাল সেনের ছেলে। তিনি ঢাকার তাঁতীবাজারে স্বর্ণের দোকানে কারিগর হিসেবে কাজ করত।
রাজবাড়ী : রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইউসুফ মন্ডল নামে ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। গত সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি মারা যান। রাজবাড়ী সদর হাসপালের চিকিৎসক ডা. নুজহাত সুলতানা এ তথ্য জানিয়েছেন।
পাবনা : পাবনার সুজানগর পৌর এলাকায় করোনা উপসর্গ নিয়ে ইদ্রিস আলী মিয়া (৫৮) মারা গেছেন। নিহত ইদ্রিস আলী সুজানগর পৌরসভার মসজিদ পাড়া মহল্লার নাছির উদ্দিন মিয়ার ছেলে ছিলেন। গত সোমবার দিবাগত রাতে নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়।
অভয়নগর (যশোর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, যশোরের অভয়নগরে দিনদিন বেড়েই চলেছে প্রাণঘাতী করোনা আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় উপজেলার বিশিষ্ট সার ব্যবসায়ী আবদুল গণি সরদার ও তার স্ত্রীসহ দশজনের শরীরে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। দুপুর পর্যন্ত করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭জনে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন