শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

৭৬ শতাংশ মানুষের আয় কমেছে

করোনাকালে ব্র্যাকের জরিপ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ জুন, ২০২০, ১:০৩ এএম

অঘোষিত লকডাউন এবং করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ঘোষিত ছুটির ফলে বিপুল সংখ্যক মানুষ কর্মহীন। এ সময়ে দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ উপার্জনের দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের এক জরিপে এ চিত্র উঠে এসেছে।

ব্র্যাকের জরিপে অংশ নেয়া ৫১ শতাংশ কর্মজীবী উত্তরদাতা জানিয়েছেন, তাদের কোনো আয় নেই। এছাড়া, দৈনিক মজুরির ওপর নির্ভরশীল ও স্বল্প আয়ের মানুষদের ৬২ শতাংশ উপার্জনের সুযোগ হারিয়েছেন। আর্থিক কর্মকাÐের দিক থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন ২৮ শতাংশ মানুষ। শুধু তাই নয়, মার্চ মাসে সাধারণ ছুটি শুরু হওয়ার আগের সময়ের তুলনায় মে মাসে খানাভিত্তিক গড় আয় কমেছে ৭৬ শতাংশ। ব্র্যাকের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। এর আগে ডিজিটাল সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের জনমানুষের পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা পেতে ব্র্যাক গত ৯ মে থেকে ১৩ মে পর্যন্ত সময়ে দেশের ৬৪ জেলায় এই জরিপ পরিচালনা করে। বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক অবস্থার ২ হাজার ৩১৭ জন মানুষ অংশ নেন জরিপে। এর ৬৮ শতাংশ গ্রামাঞ্চল ও ৩২ শতাংশ নগর এলাকার বাসিন্দা। অংশগ্রহণকারীদের ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ পুুরুষ, ৬৩ দশমিক ৫ শতাংশ নারী।

জরিপের ফলাফল বিশ্লেষণ করে ব্র্যাক বলছে, সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি শেষ হওয়ার পর নিম্ন আয়ের দৈনিক মজুরির ওপর নির্ভরশীল মানুষ ধীরে ধীরে জীবিকা নির্বাহের পথে ফিরে আসছেন। কিন্তু এসব পরিবারের অনেকের অন্তত আগামী তিন মাসের জন্য ধারাবাহিক খাদ্য বা আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন হবে।

জরিপে উঠে এসেছে, সাধারণ ছুটি শুরু হওয়ার আগে খানাভিত্তিক গড় মাসিক আয় ছিল ২৪ হাজার ৫৬৫ টাকা। মে মাসে ৭৬ শতাংশ কমে তা ৭ হাজার ৯৬ টাকায় নেমে আসে। শহর এলাকায় আয় কমার হার (৭৯ শতাংশ) পল্লী অঞ্চলের (৭৫ শতাংশ) তুলনায় কিছুটা বেশি। পাঁচ জেলার উত্তরদাতারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বলে জরিপে উল্লেখ করা হয়। জেলাগুলো হলোÑ পিরোজপুর (৯৬ শতাংশ), কক্সবাজার (৯৫ শতাংশ), রাঙামাটি (৯৫ শতাংশ), গাইবান্ধা (৯৪ শতাংশ) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া (৯৩ শতাংশ)।

জরিপে উঠে এসেছে, পুরুষ-প্রধান খানার চেয়ে নারী-প্রধান খানাগুলো আর্থিক দিক থেকে বেশি নাজুক। বেশিরভাগ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা আগের মতো আছে। শুধু তাই নয়, ১১ শতাংশ জানিয়েছেন তারা মনে করেন করোনাভাইরাস সংক্রমণের এই সময়ে নারীর প্রতি পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে। ৭৬ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, তারা সংক্রমণরোধী পদক্ষেপগুলো সবসময় মেনে চলেন। বাকিরা অনিয়মিতভাবে অনুসরণ করেন, যা আশঙ্কাজনক। ৭৮ শতাংশ মানুষ মনে করেন, তারা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হবেন না। এ বিশ্বাস গ্রামাঞ্চলের চেয়ে (৮১ শতাংশ) শহরে সামান্য কম (৭১ শতাংশ)। এ উদাসীনতা সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে দিতে ভ‚মিকা রাখবে বলে মনে করছে ব্র্যাক।

আর্থিক ও খাদ্য সহায়তা পৌঁছানো বিষয়ে উত্তরদাতাদের ৩৮ শতাংশ মনে করেন অভাবী পরিবারগুলোর কাছে সহায়তা পৌঁছানোর ক্ষেত্রে আরও সমন্বয় প্রয়োজন। নগর এলাকার অধিবাসী উত্তরদাতাদের (৬২ শতাংশ) তুলনায় গ্রামাঞ্চলের উত্তরদাতাদের (৭২ শতাংশ) মধ্যে সহায়তার প্রয়োজন কিছু বেশি বলে জরিপে উল্লেখ করা হয়।

জরিপের ফল তুলে ধরতে আয়োজিত ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক ছিলেন আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশে ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জী, ব্র্যাকের ঊর্ধ্বতন পরিচালক শামেরান আবেদ, সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান এবং ব্র্যাকের পরিচালক নবনীতা চৌধুরী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন