রুমু, চট্টগ্রাম ব্যুরো : একের পর এক আক্রমণ ঢাকা মোহামেডানের। প্রতিপক্ষ রহমতগঞ্জের প্রাণ ওষ্ঠাগত। কিন্তু গোলোর দেখা পাচ্ছিল না সাদা-কালো জার্সিধারীরা। তারওপর উল্টো একটি গোল হজম করে বসে তারা। সময় দ্রæতই ফুরিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় কাক্সিক্ষত গোলের দেখা পেল তারা পেনাল্টি থেকে। বাঙ্গুরা গোল করে ম্যাচে সমতা আনার পাশাপাশি মোহামেডান শিবিরে এনে দেন স্বস্তি। গতকাল এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচটিতে ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ১-১ গোলে রহমতগঞ্জের সঙ্গে ড্র করে হারিয়েছে মূল্যবান পয়েন্ট।
ম্যাচের ১৪ মিনিটে আক্রমণে যায় মোহামেডান। রক্ষণভাগ থেকে উপরে উঠে আসা দিদারুল আলম ডি-বক্সের বাইরে থেকে যে শট নেন তা কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন রহমতগঞ্জের গোলরক্ষক মাসুম। ৩ মিনিট পর রহমতগঞ্জের ঝটিকা আক্রমণে গোল হজম করে বসে সাদা-কালো জার্সিধারীরা। ডানপ্রান্ত থেকে মিডফিল্ডার নয়নের লম্বা ক্রসে পা লাগিয়ে বিদেশি ফরোয়ার্ড জুলপিউ দলকে এগিয়ে নেন ১-০। ২৫ মিনিটে গোল পরিশোধের সুযোগ পায় মোহামেডান। তবে ডি-বক্সের বাইরে থেকে গোলমুখে নেয়া ফরোয়ার্ড সজিবের জোরালো শট দক্ষতার সঙ্গে প্রতিহত করেন গোলরক্ষক মাসুম। পরের মিনিটেই মোহামেডানের বিদেশি ফরোয়ার্ড ইসমাইল বাঙ্গুরার নেয়া শটও ঠেকিয়ে দেন মাসুম। রহমতগঞ্জের এই গোলরক্ষকের কারণেই ০-১ গোলে পিছিয়ে থেকে প্রথমার্ধ অস্বস্তি নিয়ে শেষ করে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী দল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। বিরতির পর গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে উঠে মোহামেডানের খেলোয়াড়রা। ৫২ মিনিটে বামপ্রান্ত দিয়ে এগিয়ে গিয়ে বাঙ্গুরার ক্ষিপ্র গতির শট প্রতিহত করে আবারও দলকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক মাসুম। মিনিট তিনেক পর মোহামেডানের ফরোয়ার্ড সজিবের ছোট পাস থেকে ডি-বক্সের ভেতরে বল পেয়ে গোলমুখে শট নেন মিডফিল্ডার জনি। আবারও সেই মাসুমের বিশ্বস্ত হাত আটকে দেয় মোহামেডানের নিশ্চিত গোলের সুযোগ। ৬৪ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে যায় রহমতগঞ্জ। বামপ্রান্ত দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়ে নয়নের শট মোহামেডানের গোলরক্ষক নেহাল ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিহত করেন। ৪ মিনিট পর মোহামেডানের ফরোয়ার্ড বাঙ্গুরার গোলমুখে নেয়া শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ম্যাচের বয়স যখন ৮১ মিনিট তখন পেনাল্টি থেকে সমতাসূচক গোলটি পায় মোহামেডান ১-১। মোহামেডানের একটি জোরালো আক্রমণ থেকে দলকে রক্ষা করতে গিয়ে ডি-বক্সের ভেতরে রহমতগঞ্জের এক ডিফেন্ডারের হাত বল স্পর্শ করে। যদিও সেটি দেখে মনে হয়নি ওই ডিফেন্ডার ইচ্ছে করে হাত দিয়ে বল স্পর্শ করেছেন, তবুও রেফারি ভরত চন্দ্র পেনাল্টির নির্দেশ দেন। পেনাল্টি থেকে গোল করে মোহামেডান শিবিরে স্বস্তি এনে দেন বাঙ্গুরা। ম্যাচে সমতা আনার পর একবারই শুধু নিশ্চিত গোলের সুযোগ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিল মোহামেডান। শেষ বাঁশি বাজার ২ মিনিট আগে মোহামেডানের বদলি খেলোয়াড় বাবু বামপ্রান্ত দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে গোলমুখে সজোরে শট নেন। গোলরক্ষক মাসুম কর্নারের বিনিময়ে দলকে বিপদমুক্ত করেন। ফলে ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় ঐতিহ্যবাহী মোহামেডানকে।
ম্যাচ শেষে মোহামেডানের কোচ কাজী জসিমুদ্দিন জোসি বলেছেন, ‘পুরো খেলায় বল বেশিরভাগ সময় ছেলেদের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও ভুল পাসিং ও ফিনিশিংয়ের অভাবে কাক্সিক্ষত জয় আসেনি। খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সে আমি সন্তুষ্ট নই।’ মোহামেডানের পাওয়া পেনাল্টি মনপুত হয়নি রহমতগঞ্জের কোচ কামাল আহমেদ বাবুর। তার দাবি, ওই ডিফেন্ডার বুকে বল রিসিভ করেছিল, তার হাতে লাগেনি। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘আমরা খেলা চলাকালে রেফারির কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা বললে ভিডিও দেখতে বলে। এখন আমার অনুরোধ, এই খেলার ভিডিওটা যেন ওনারাই দেখে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন