গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে সুদের কারবারের টাকা ভাগবাটোয়ারা নিয়ে সংঘর্ষে মুক্তিযোদ্ধা সাহেব আলী খন্দকার (৬০) নিহত ও কমপেক্ষ ১৫ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে মুকসুদপুর উপজেলার পশারগাতী ইউনিয়নের কাওয়ালদিয়া গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে৷ নিহত মুক্তিযোদ্ধা সাহেব আলী খন্দকার কওয়ালদিয়া গ্রামের খুররম আলী খন্দকারের ছেলে।
মারাত্নক আহত সাহিদুল শেখ, মোফা শেখ, জসিম মোল্যা, লিয়াকত মোল্যা, পান্নু মোল্যা, বরকত মোল্যা, নওশের শেখ, আব্দুল মালেক শেখ, জাফিম মোল্যা ও সুজন শেখকে মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্য আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহন করেছেন।
পশারগাতী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু রাসেল শিমুল জানান, ওই গ্রামের তৈয়ব আলী মুন্সী ২৫ হাজার টাকা একই গ্রামের জালাল মোল্লার কাছে সুদে লগ্নি করেন । এছাড়া জালাল এলাকার আরো বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়ে দেউলিয়া হয় । টাকা পরিশোধ করতে জালালকে পাওনাদাররা চাপ প্রায়োগ করতে থাকে। এ নিয়ে সুদের কারবারীরা সালিশ বৈঠক বসায় । পরবর্তীতে জালালের বোন ১ লাখ টাকা জালালের পাওনাদারকে ভাগ করে দেয়ার জন্য গ্রামের মাতবরদের হাতে তুলে দেন। জালালের পাওনাদারদের ১ লাখ টাকা ভাগ করে দেয়ার দায়িত্ব দেয়া হয় মুক্তিযোদ্ধা সাহেব আলী খন্দকারের ওপর । সাহেব আলী খন্দকার ১ লাখ টাকা পাওনাদারদের ভাগ করে দেন। শুক্রবার সকালে পাওনাদার তৈয়ব আলী মুন্সী কম টাকা পেয়েছেন অভিযোগ এনে জালালের কাছে আরো টাকা দাবি করেন । এ নিয়ে ওই গ্রামের দু’ পাড়ার লোকজন সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। মুক্তিযোদ্ধা সাহেব আলী খন্দকারকে মুকসুদপুর উপজেলা স্বস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারাযান।
মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মোমিন-উল হাবিব বলেন, সংঘর্ষের ১১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। এদর মধ্যে সাহেব আলী মারা গেছেন। তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই।মৃত্যুর কারণ এখনই বলা যাচ্ছেনা। পোষ্টমর্টেম রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ জানাযাবে বলে জানান ওই চিকিৎসক। অন্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
মুকসুদপুর থানার ওসি মীর্জা আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানাগেছে সুদের কারবারের টাকা নিয়ে সালিশ মীমাংসা করা হয়। এ মীমাংসা প্রত্যাখ্যান করে আরো টাকা দাবি করাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী মুক্তিযোদ্ধার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর তার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানাযাবে। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন