১৩ দিনের মাথায় এবার দেশের এক মাত্র সরকারি কুমির প্রজনন কেন্দ্রে মা কুমির “পিলপিল এবার ৪৪টি ডিম পেড়েছে। এর আগে গেল ২৯ মে ওই কুমির প্রজনন কেন্দ্রের মা কুমির ‘জুলিয়েট’ ৫২টি ডিম পেড়েছিল। আগামি ৮৫ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে এ ডিম থেকে বাচ্চা ফোটার কথা রয়েছে। বাচ্চা ফোটানোর জন্য ২১ টি ডিম কুমিরটির নিজস্ব বাসা, ১২টি ডিম কেন্দ্রের পুরাতন ইনকিউবেটরে ও ১১ টি নতুন ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছে।
বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির নোনা পানির কুমিরের প্রজনন বৃদ্ধি ও তা সংরক্ষণে ২০০২ সালে পূর্ব সুন্দরবনের করমজল পর্যটনকেন্দ্রে বন বিভাগের উদ্যোগে গড়ে তোলা হয় দেশের একমাত্র সরকারি এ কুমির প্রজননকেন্দ্র। বায়োডাইভারসিটি কনজারভেশন প্রকল্পের আওতায় ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮ একর জায়গার ওপর গড়ে তোলা হয় কেন্দ্রটি।
শুরুতেই জেলেদের জালে ধরা পড়া ছোট-বড় পাঁচটি কুমির দিয়ে কেন্দ্রে প্রজনন কার্যক্রম শুরু হয়। এই কেন্দ্র থেকে ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, পটুয়াখালী বন বিভাগ ও সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী-খালে ৯৭টি কুমির অবমুক্ত করা হয়।
করমজল বণ্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, শুক্রবার রাত পর্যন্ত মা কুমির “পিলপিল এবার ৪৪টি ডিম পেড়েছে। এর আগে মা কুমির ‘জুলিয়েট’ ৫২টি ডিম পেড়েছিল। বর্তমানে করমজল বন্যপ্রানী প্রজনন কেন্দ্রে ছোট বড় মিলিয়ে মোট ১৯৫ টি বাচ্চা কুমির রয়েছে। এর মধ্যে বড় কুমির রয়েছে ৬টি। কেন্দ্রের পুকুরে প্রজননের জন্য দুটি স্ত্রী ও একটি পুরুষ কুমির রয়েছে। বাকী কুমিরগুলো কেন্দ্রের প্যানে রেখে লালন পালন করা হচ্ছে। বংশ বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে বিলুপ্ত প্রায় নোনা পানির এ কুমিরগুলোকে পরবর্তিতে বনের অভ্যন্তরের বিভিন্ন নদ নদীতে ছেড়ে দেয়া হবে । প্রতি বছর প্রজনন মৌশুম মে ও জুন মাসে এ কুমির দুইটি ডিম পাড়ে। গত বছর মা কুমির জুলিয়েট ও পিলপিল ডিম দিলেও তা থেকে কোন বাচ্চা ফোটানো সম্ভব হয়নি বলে জানায় এ কর্মকর্তা।
সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোঃ বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে তিন প্রজাতির কুমিরের অস্তিত্ব ছিল। লবণ পানির কুমির, মিঠা পানির কুমির ও গঙ্গোত্রীয় কুমির বা ঘড়িয়াল। এর মধ্যে মিঠা পানির কুমির ও ঘড়িয়ালের বিলুপ্তি ঘটেছে। এখন শুধু লবণ পানির কুমিরের অস্তিত্বই আছে। এরা সাধারণত ৬০-৬৫ বছর পর্যন্ত ডিম দিতে পারে। আর ৮০-১০০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন