করোনাভাইরাস মহামারীতে মালদ্বীপে ঘরবন্দি প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীরা চরম বিপাকে পড়েছেন। ঘরবন্দি এসব কর্মীদের অনেকেই খাদ্য সঙ্কটের মুখে পড়েছেন। গত রমজানের আগে দেশটিতে বসবাসকারী কর্মীদের জন্য সরকার নৌবাহিনীর একটি জাহাজে করে খাদ্যসামগ্রী পাঠায়। তিন মাসে কর্মসংস্থানের খাতগুলো বন্ধ হওয়ায় অভিবাসী কর্মীদের নিজ নিজ দেশে পাঠাতে উদ্যোগ নিচ্ছে দেশটির সরকার। মালদ্বীপ প্রত্যাগত একাধিক কর্মী দেশে ফিরে এসব তথ্য জানিয়েছে। দেশটিতে লক্ষাধিক বাংলাদেশি কর্মীরাও চাকরি হারিয়ে দেশে ফেরার ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব প্রবাসী কর্মীদের ফিরিয়ে আনতে মালদ্বীপ সরকার বাংলাদেশকে চাপ দিচ্ছে।
গত শুক্রবার রাতে মালদ্বীপ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে ২০০ প্রবাসীকে ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয়েছে। খালি হাতে দেশে ফিরে এদের অনেকেই মানুষিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। বিমানবন্দরস্থ কল্যাণ ডেস্ক বিষয়টি জানিয়েছে।
এছাড়া, গত শুক্রবার গভীর রাতে একাধিক বিশেষ ফ্লাইটে সউদী আরব, কাতার, দুবাই ও ওমান থেকে ১০ প্রবাসী কর্মীর লাশ ঢাকায় পৌঁছায়। হৃদরোগসহ বিভিন্ন কারণে এসব কর্মী মারা যায়। বিমানবন্দরে অপেক্ষমান স্বজনরা এসব লাশের কফিন দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
প্রবাসে মৃত কর্মীরা হচ্ছেন- কিশোরগঞ্জের দুলাল মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আরিফুল ইসলাম, কুমিল্লার হারুনুর রশিদ, আব্দুল আলিম ভ‚ঁইয়া, চট্টগ্রামের লিয়াকত, মহসিন, ফরিদুল আলম, পাবনার ফারুক হাসান ও নেত্রকোণার সুলতান মিয়া। এসব প্রত্যেক প্রবাসী কর্মীর লাশ দাফন ও পরিবহন ভাড়া বাবদ ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে নগদ ৩৫ হাজার টাকার সহায়তা দেয়া হয়েছে।
সউদী আরবসহ বিভিন্ন দেশের হাসপাতালগুলো কয়েকশ’ প্রবাসী কর্মীর লাশ পড়ে রয়েছে। স্বজনদের অনাপত্তি পাঠাতে বিলম্বে হওয়ায় এসব লাশ দাফন-কাফন করা সম্ভব হচ্ছে না। সউদী সরকার দেশটির হাসপাতালে পড়ে থাকা শতাধিক লাশ দ্রুত দাফনের জন্য রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসকে চাপ দিচ্ছে। গতকাল সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে চাকরি হারিয়ে বেশ কিছু প্রবাসী কর্মীর দেশে পৌঁছার কথা।
এদিকে, প্রাণঘাতী করোনা মহামারীতে বিদেশ থেকে চাকরি হারিয়ে যেসব প্রবাসী দেশে ফিরছেন তাদের পুনর্বাসনে দু’দফায় ৭০০ কোটি টাকার ঋণ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে প্রত্যাগত অসহায় কর্মীদের ঋণ সুবিধা দেয়া হবে বলেও প্রবাসী কল্যাণ সচিব ড. আহমদ মুনিরুছ সালেহীন জানান। প্রবাসী মন্ত্রণাললের পক্ষ থেকে ঋণ প্রাপ্তদের যথাযথ প্রশিক্ষণও দেয়া হবে। প্রত্যাগত প্রবাসী কর্মীদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ঋণ বরাদ্দের প্রক্রিয়া এখনো শুরু করা হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন