বাঁচলেন না কামরান। আমজনতার প্রিয় নাম ছিল বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। বিনয়ের এক অনুসরণীয় চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ছিল তার চরিত্রে। মানুষকে আপন করে নেয়ার মোহনীয়তা সত্যিকারের নগরপিতার আসনে বলেছিলেন যেন আমৃত্যু। মহানগরে পরিণত হওয়ার পর প্রথম মেয়র হওয়ার গৌরবময় ইতিহাস তারই।
আগ্রাসী মানসিকতার বদলে শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক‚টনীতিক চালে এগিয়ে যাওয়ার এক অনন্য শক্তি ছিল তার। সেকারণে তৃণমূল থেকে শিখরে কোন শাখা-প্রশাখাই দীপ্তমান জীবনে বাধা পড়েনি। কেবল মানুষের প্রতি ভালবাসাতে মহিয়ান হয়েছেন তিনি। এক এগারো পরবর্তী দুঃসময়েও নানা ষড়যন্ত্র সিলেটের মানুষের ভালবাসা থেকে দূরে রাখা যায়নি তাকে।
উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র থাকাবস্থায়ই ১৯৭২ সালে বদর উদ্দিন আহমদ কামরান নির্বাচিত হন সিলেট পৌরসভার কমিশনার। এলাকাবাসীর অনুরোধে অল্প বয়সে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে বিজয়ও ছিনিয়ে নেন তিনি। যেন এক জাত জনসেবক হয়েই জন্ম হয়েছিল তার। কিন্তু তার মরহুম পিতা এমনটি চাননি কামরানের বেলায়। কিন্তু এলাকার লোকজন বিশ্বাস করতেন সুখে-দুঃখে এই ছেলেটিকে কাছে পাবেন তারা। তাদের সে বিশ্বাস ভঙ্গ করেননি কামরান। জনপ্রতিনিধির অগ্নিপরীক্ষায় বরাবরই সিলেটবাসীর ভালোবাসায় উতরে গেছেন তিনি। বদর উদ্দিন আহমদ মেয়রের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি টানা ৩ বার সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন। সর্বশেষ সম্মেলনে মহানগরের সভাপতি থেকে সরে গেলেও স্থান পান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৮১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটিতে। একজন সদস্য হিসেবে কেন্দ্র আওয়ামী লীগে নেতৃত্বেও সংযোগ ঘটে তার। সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদের হাত ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়া কামরান ছিলেন শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও। ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। এর মধ্যে দিয়ে বিচ্ছেদ ঘটলো স্থানীয় রাজনীতিতে এক অমূল্য বটবৃক্ষের।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন