শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

তবুও হাসপাতালে ঠাঁই নেই

চট্টগ্রামে ৮০ ভাগ করোনা রোগী বাসায়

রফিকুল ইসলাম সেলিম : | প্রকাশের সময় : ১৭ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগী বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। শুধুমাত্র যাদের শ্বাসকষ্টসহ জটিল রোগ আছে তারাই হাসপাতালে যাচ্ছেন। অনেকে আবার ঢাকায় চলে যাচ্ছেন। এরপরও হাসপাতালে ঠাঁই নেই। চিকিৎসকেরা বলছেন, ৮০ ভাগের বেশি রোগী বাসায় আছেন। ২০ শতাংশ হাসপাতালে যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ পাঁচ শতাংশের অক্সিজেন বা আইসিইউ সাপোর্ট দিতে হচ্ছে।

অথচ এতো স্বল্পসংখ্যক রোগী নিয়েই হাসপাতালগুলোতে হিমশিম অবস্থা চলছে। সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে তাতে সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে কোভিড-১৯ হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত এবং আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর সুবিধা বাড়ানো না হলে মৃত্যুর হার আরও বাড়বে।

এ পর্যন্ত করোনা এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের বেশির ভাগই অক্সিজেন ও আইসিইউ সুবিধা পাননি বলে অভিযোগ আছে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই মহানগরী করোনার উচ্চঝুঁকিতে থাকার পরও মোকাবেলায় বিশেষ করে চিকিৎসায় তেমন প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি। সরকারের মন্ত্রী, মেয়র এবং এমপিরা তা স্বীকারও করছেন। তারপরও সঙ্কট নিরসনে নেওয়া উদ্যোগ বাস্তবায়নে ধীর গতিতে জনমনে হতাশা বাড়ছে। বিনা চিকিৎসায় বেঘোরে মৃত্যুতে উদ্বেগ-শঙ্কা বেড়েই চলেছে। সিভিল সার্জনের দেওয়া তথ্যমতে গতকাল মঙ্গলবার ৫৬ জনসহ এ পর্যন্ত হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়েছেন ৪৫৭ জন। মারা গেছেন আরো তিন জনসহ ১২৪ জন। বাসায় সুস্থ হয়েছেন প্রায় দেড় হাজার। আক্রান্ত ৫ হাজার ৪০৬ জন। এখন বাসায় আইসোলেশনে আছেন ৪৭৭ জন। ৩৪৩ জন হাসপাতালে ভর্তি। করোনা রোগীদের জন্য ২৯টি আইসিইউ চালু আছে। অথচ রোগীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীর সংখ্যা আরো বেশি। বেরসকারি হাসপাতালে আইসিইউ থাকলেও তারা এখনও সেগুলো করোনা রোগীদের জন্য উম্মুক্ত করেনি।

আইসিইউর মতো অক্সিজেন সঙ্কট রয়েছে। চমেক হাসপাতাল এবং আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল ছাড়া কোন হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা নেই। ফলে সিলিন্ডারে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তীব্র শ^াসকষ্টের রোগীর জন্য দরকার হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানুলা। সেটিও নেই বেশির ভাগ হাসপাতালে। এতে শ^াসকষ্টে রোগীর মৃত্যু বাড়ছে।

গতকাল হাসপাতালে মারা গেছেন রেয়াজুদ্দিন বাজার তামাকুমÐি বণিক সমিতির সভাপতি শামসুল আলম। তার স্বজনদের অভিযোগ তিনি যথা সময়ে আইসিইউ সাপোর্ট পাননি। আগের দিন মারা যান ইসলামী ব্যাংকের এভিপি মোহাম্মদ ঈসা। আইসিইউর জন্য হাসপাতালে ছুটতে ছুটতেই তিনি মারা যান। প্রতিদিন হাসপাতালের সামনে এমন অনেক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।

সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি হাসপাতালে শয্যা সঙ্কট আছে স্বীকার করে বলেন, আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। ছয়টি হাসপাতালে ২৯টি আইসিইউ চালু আছে। এ সংখ্যা বাড়ানো এবং বেসরকারি আরও হাসপাতালে এই সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে। জেনারেল হাসপাতাল ও হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা বসানো হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন