বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪, ০৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ফুলবাড়ীতে করোনার টেস্ট রিপোর্ট পেতে ধীরগতি: বাড়ছে আতঙ্ক

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ জুন, ২০২০, ৪:০৯ পিএম

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে করোনাভাইরাসের নমুনা রিপোর্ট পেতে ধীরগতি ও নমুনা দেয়া ব্যক্তিদের অবাধ চলাফেরার কারণে বাড়ছে করোনা আতঙ্ক। নমুনা দেয়া রোগীদের নমুনা রিপোর্ট আসতে ৭ থেকে ১৩ দিন সময় লাগার কারণে অনেকে পরিবারসহ বাইরের লোকজনের সংস্পর্শে আসছেন।

ফলে উপজেলা জুড়ে ব্যাপকহারে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট দেয়ায় ধীরগতির কারণে বিপাকেও পড়ছেন অনেক উপসর্গ বহনকারী। রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত অন্য চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিতে পারছেন না তারা। সেইসাথে সামাজিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগও আছে অনেকের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ৭ জুন নমুনা সংগ্রহ করে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করার পর গত ১৪ জুন সেই নমুনা পরীক্ষার ফলাফল আসে। এতে দুইজনের করোনা পজিটিভসহ এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ২০ জন। এভাবে রিপোর্টের দীর্ঘ সূত্রতার কারণে অনেক আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রকাশ্যে লোকালয়ে ঘুড়তে দেখা গেছে।

এদিকে স্বেচ্ছায় পরীক্ষার জন্য নমুনা প্রদান করলেও সামাজকিভাবে বিড়ম্বনার কারণে উপসর্গ দেখা দিলেও প্রকাশ করতে চাচ্ছে না অনেকে।

পুর্ব গৌরীপাড়া গ্রামের সমাজকর্মী ডাক্তার আহাদুজ্জামান চৌধুরী সোহাগ বলেন, তার এক প্রতিবেশি করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় তিনি স্বেচ্ছায় নমুনা পরীক্ষা করান। কিন্তু সেই পরীক্ষার ফলাফল না আসা পর্যন্ত তাকে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, উপসর্গ দেখা দেয়া ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়, সেখান থেকে নমুনা পরীক্ষার ফলাফল আসতে ৬ থেকে ৭ দিন সময় লাগে। নমুনা দেয়ার পরেও সময় মতো পরীক্ষার ফলাফল না আসায় করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিরা উপসর্গ নিয়েই বিভিন্ন লোকালয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানোর কারণে করোনা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. এনায়েতুল্যা নাজিম বলেন, নমুনা পরীক্ষার ফলাফল না আসা পর্যন্ত কাউকে করোনা রোগী বলা যাবে না, তবে নমুনা সংগ্রহের সময় নমুনা প্রদানকারীদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, গত ১২ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ৭ জুন পর্যন্ত ২৮২ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে এই প্রতিবেদককে বলেন, গত ৭ জুনের সংগ্রহকৃত নমুনার ফলাফল গত ১৪ জুন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছে। গত ৮ জুন থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত সংগ্রহ কৃত ৫৬ জনের নমুনার ফলাফল গতকাল ১৭ জুন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। গতকাল ১৭ জুন আরও ৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এ বিষযে দিনাজপুর সিভিল সার্জন ডাক্তার আব্দুল কুদ্দুস বলেন, দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে, দিনাজপুরসহ ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলায় সংগ্রহকৃত নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এজন্য প্রতিদিন গড়ে ১৪শ' থেকে ১৫শ' নমুনা এসে জমা হয়। কিন্তু প্রতিদিন ১৮৮টির বেশি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হয় না। যার ফলে নমুনার ফলাফল পেতে একটু সময় লাগে। এক প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন বলেন, জনবল ও উপকরণ সঙ্কট থাকায় সংগ্রহকৃত সকল নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভাব হয় না।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুস সালাম চৌধুরী বলেন, নমুনা সংগ্রহকারীদের হোম কোয়ান্টাইন নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সেই সাথে সকল নাগরিককে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, সামজিক দুরত্ব বজায় রাখতে ও প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়ার জন্য সতর্ক করেন তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন