সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

হালদায় এক মাসের ব্যবধানে আবারো ডিম ছাড়লো মা মাছ

এম বেলাল উদ্দিন, রাউজান (চট্টগ্রাম) থেকে | প্রকাশের সময় : ২০ জুন, ২০২০, ৪:১৩ পিএম

দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে এক মাসের ব্যবধানে আবারও দ্বিতীয়বারের মতো ডিম দিয়েছে মা মাছ। শুক্রবার (১৯ জুন) দিবাগত রাত ১২টার দিকে সীমিত পরিসরে ডিম ছাড়ে মা মাছ। রাউজান-হাটহাজারী উপজেলার দুইপাড়ের কিছু ডিম সংগ্রহকারী ডিম পেয়েছেন। তবে ডিম পাওয়ার পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে কম বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
এ দুই উপজেলার বাসিন্দাসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেল থেকে নমুনা দেয়। এরপর ভাটার সময় রাত ১২টার দিকে নদীর রাউজান অংকুরিঘোনা থেকে রামদাস মুন্সিরহাট পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটারজুড়ে ডিম ছাড়ে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাইশ জাতীয় মা মাছ। গভীর রাত হওয়ায় ডিম সংগ্রকারীর সংখ্যা কম ছিল নদীতে। ডিম ছাড়ার স্থায়ীত্বও ছিল স্বাভাবিকের ছেয়ে কম।
এ প্রসঙ্গে রাউজান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা পীযুষ প্রভাকর শনিবার সকালে বলেন ‘শুক্রবার সন্ধ্যায় ৬টার দিকে নমুনা দেয়ায় সংগ্রহকারীরা ডিম ধরতে নদীতে নেমেছিল। কিন্তু তখন ডিম না পাওয়ায় তারা নদী থেকে উঠে যান। তবে গভীর রাতে মা ডিম ছাড়লেও অনেকে তা জানেনা। এ জন্য নদীতে মৎস্যজীবির সংখ্যা ছিল কম।’
হালদা নদীতে ডিম সংগ্রহকারী রামদাশমুন্সির হাট এলাকার মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, ‘আগে একসময় দফায় দফায় তিন বার মা মাছ ডিম দিত। জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে এখন সেটা ঘটে না।’
‘গতকাল হালদা নদীর দুই পয়েন্টে মা মাছ ডিম ছেড়েছে। যদিও পরিমাণে নগণ্য, তবে সেটাও আশা জাগানিয়া ঘটনা’, বলেন তিনি। আজ গভীর রাতে ডিম সংগ্রহকারীরা ৩০টির মতো নৌকা নিয়ে ডিম সংগ্রহ করতে নেমেছেন। সর্বোচ্চ ১০ বালতি বা ১০০ কেজির মতো ডিম হবে বলে ধারণা ইলিয়াসের।
হালদা বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া রাতভর নদীতে অবস্থান করছিলেন। তিনি শনিবার (২০ জুন) সকালে জানান, দ্বিতীয়বারের মতো হালদার মা মাছ ডিম দিয়েছে। তবে এর পরিমাণ কতো তা হিসেব করে জানাতে সময় লাগবে।’
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২২ মে হালদা নদী থেকে রেকর্ডসংখ্যক ২৫ হাজার ৫৩৬ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়। যা গত এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল।
উল্লেখ্য যে, হালদা নদীতে প্রতিবছর চৈত্র, বৈশাখ, জৈষ্ট্য মাসের কোন একসময় প্রাকৃতিক বৈরী পরিস্থিতি যেমন ঝড়ো-বজ্র বৃষ্টি, পাহাড়ী ঢল সৃষ্টি হলে মা মাছ ডিম দেয়। নদীর দুই পাড়ের শত শত ডিম সংগ্রহকারী এ ডিম সংগ্রহ করে হ্যাচারী এবং নিজস্ব কুয়ায় (মাটির গর্ত) বিশেষ পদ্ধতিতে রেণু ফুটিয়ে মৎস্যজীবিদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করে। প্রাকৃতিক পরিবেশে ডিম থেকে পাওয়া বলে হালদার রেণুর চাহিদা রয়েছে সারাদেশে। একারণে প্রতিবছর হাজার হাজার মৎস্যজীবি এ রেণু পেতে উন্মুখ থাকে। প্রতিবছর বিভিন্ন জেলা থেকে মৎস্যজীবিরা এসে এ রেণু সংগ্রহ করেন রাউজান-হাটহাজারীর সংগ্রহারীদের কাছ থেকে। এ ডিম সংগ্রহের উপরই হালদা পাড়ের অনেক পরিবারের সারা বছরের আয় রোজগার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন