এক সময়ে মাছে ভরপুর ছিল দেশের খাল-বিলগুলো। তবে ক্রমবর্ধমান শহরায়ন ও অপরিকল্পিত মিল-কারখানা করায় হারিয়ে যাচ্ছে খাল-বিলের দেশী প্রজাতির মাছ। বগুড়ার সান্তাহার শহরের বিভিন্ন স্থানে থাকা খাল-বিলের চিত্র অনেকটা এমন। আর মিল-কারখানার দূষিত পানিতে হুমকির মুখে পড়েছে সেখানকার জনস্বাস্থ্য।
এক সময় আত্রাই, রানীনগর উপজেলার বিলকৃঞ্চনপুর, বদলা,পালশা রাজাপুর গ্রাম, সান্তাহার পার্শ্ববর্তী প্রত্যন্ত কদমা, করজবাড়ী, আমপুরা, মূয়রকাশিমালা গ্রামের মানুষের সান্তাহার জংশন শহরে যাতায়াতের একমাত্র পথ ছিল তিয়রপাড়া খাল ও রক্তদহ বিল। সে সময় এই খাল-বিলে পাওয়া যেত প্রচুর পরিমাণ দেশি প্রজাতির মাছ। আশপাশ গ্রামের জেলে পরিবারগুলো এই খাল-বিলে মাছ শিকার জীবিকা নির্বাহ করতো। এছাড়া এলাকার চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি শত শত মণ মাছ দেশের বিভিন্ন জেলাসহ রাজধানীতেও বিক্রির জন্য নিয়ে যেত।
এছাড়া এ খাল-বিল গুলোতে মাছ শিকার করার জন্য আসতো কানি-জেঠেবগ, পানকৈড়, বালিহাঁস, মাছরাঙ্গা, আচ্চোরাসহ বিভিন্ন জাতের অতিথি পাখি। যা পরিবেশ ভারসাম্যে কাজ করে যেতো। তবে শহরের বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিতভাবে রাইস মিলসহ একাধিক মিলকলকাখানা গড়ে তোলায় ভরা বর্ষায় দেখা যাচ্ছে না মাছ আর এসব পাখির। ফলে বেকার হচ্ছে বিল পাড়ের বোদলা, পালশা, সান্দিড়া, কদমা করোজবাড়ী, কাশিমালা গ্রামের প্রায় ৫শ’ জেলে পরিবার। অন্যদিকে মাছ সঙ্কটের মুখে পড়ছে সান্তাহর জংশন শহর, আদমীঘি উপজেলা সদরসহ ব্যস্ততম ও ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র বগুড়া জেলা এবং উত্তরাঞ্চলের বেশকিছু এলাকা।
এলাকাবাসীরা জানান, স্থানীয় খারিরপুল এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে বৈশাখী অটোরাইস মিল, কলাবাগান এলাকয় বুশরা মিল, ছাতিয়ানগ্রাম রোডের মৌ, ইছামতি মিল মাছের খাদ্য তৈরীর কারখানাসহ ভারী স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। এতে ওই মিলগুলোর বর্জ্যে ও দূষিত পানি স্থানীয় তিয়রপাড়া খাল ও রক্তদহ বিলে পড়ায় মাছ মরে যাচ্ছে আর দুর্গন্ধে সেখানে চলাচল করাটাও দায় হয়ে পড়েছে।
আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ কে এম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ তিয়রপাড়া খাল ও রক্তদহ বিল পরিদর্শন কালে বলেন, যেসব মিলের বর্জ্য ও দূষিত পানিতে খাল-বিলের মাছ এবং এলাকার জনস্বাস্থ্যের বিঘ্ন ঘটছে সেসব মিলকে আইনের আওতায় আনা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন