বর্ষার রিমঝিম বৃষ্টিতে প্রকৃতি ভেজা থাকে। সব জায়গায় স্যাঁতস্যাঁতে ভাব। অন্যান্য সময় থেকে এ সময়ে শিশুদের অসুখ-বিসুখে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। এ কারণে বর্ষায় শিশুর বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। এ সময় শিশুর খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে গোসল ও পোশাক নির্বাচনের সময় অভিভাবকদের বিশেষ যত্নবান হতে হবে।
রাজধানীর শনির আখরার লাইফ হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. জহুরুল হক সাগর বলেন, বাচ্চাদের স্বভাব হচ্ছে হাত বাড়িয়ে বৃষ্টির পানি ধরবে। বৃষ্টিতে জমে থাকা পানিতে পা ডোবাবে। আর একটু খেয়াল না করলে দৌড়ে কোন ফাঁকে ভিজে গোসল সেরে আসবে সেটা আপনি টেরই পাবেন না। তাই বর্ষাকালে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে বাচ্চাদের ওপর। বর্ষায় রোগবালাই বেশি ছড়ায়- বিশেষ করে শিশুদের বেলায়। বর্ষায় শিশুর স্বাস্থ্য সমস্য দেখা দিলে হেলাফেলা না করে শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুল করবেন না।
বৃষ্টির পানিতে যেন শিশু না ভিজে সেদিকে সর্তক দৃষ্টি রাখতে হবে। বৃষ্টির কারণে শিশুরা সহজেই ভিজে যেতে পারে। বৃষ্টি থেকে তাদের দূরে রাখতে হবে। বৃষ্টির পানিতে ভিজলে শিশুর সর্দি-কাশি হতে পারে; নিউমোনিয়াসহ আক্রান্ত হতে পারে জ্বরেও। পানিবাহিত রোগের সম্ভাবনাও থাকে বেশি। এ সময়ের জ্বর শিশুর ভোগান্তির কারণ। এছাড়া ভেজা ও স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশের কারণে শিশুদের নানা রকমের ত্বকের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই শিশুর প্রতি বিশেষ যত্নবান হলে ত্বকের অনেক সমস্যা সহজেই এড়ানো সম্ভব।
শিশুর ভেজা কাপড় পাল্টে দিতে হবে। শরীর পাতলা ও নরম কাপড় দিয়ে মুছে দিতে হবে। ভেজা ও ঠান্ডা আবহাওয়া থাকলেও এ সময় শিশুকে প্রতিদিন গোসল করাতে হবে। তবে অত্যধিক সাবান ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। শিশুর কোমল ত্বকের ওপর এক ধরনের সাহায্যকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে, তা অত্যধিক সাবান ব্যবহার করে নষ্ট না করাই ভালো। কারণ এরা নানারকম সংক্রমণ থেকে শিশুর ত্বককে রক্ষা করে। সব সময় শিশুকে হালকা সুতির জামা পরানো উচিত।
শিশুর খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রেও সচেতন হতে হবে। অতিরিক্ত পানি পান করতে দেয়া উচিত। আইসক্রিম, জুসসহ ঠান্ডা জাতীয় খাবার বর্জন করা উচিত। পোশাকের ক্ষেত্রে শুকনো পোশাক পরিধান করানো উচিত। প্রয়োজনীয় স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি ঘরে তৈরি নানারকম ফলের জুস, লেবুর শরবতও, গরম দুধ, পুষ্টিকর খাবার দেয়া উচিত।
বর্ষায় সব জায়গা ভেজা থাকে। সাপ, কেঁচো, তেলাপোকাসহ বিভিন্ন পোকামাকড়ের উপদ্রব বাড়ে। এগুলো থেকে শিশুকে দূরে রাখতে হবে। মশার কামড় এ সময়ে বিপজ্জনক হতে পারে। মশারি ব্যবহারের পাশাপাশি রুমটাও যেন মশামুক্ত থাকে, সেদিকে নজর দিতে হবে।
আলম শামস
মফস্বল সম্পাদক
দৈনিক ইনকিলাব, ঢাকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন