শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

সখীপুরে মুক্তিযুদ্ধের শপথস্তম্ভ সংরক্ষণ-জাদুঘর নির্মাণ জরুরি

ইনকিলাবকে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী

টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৬ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম সখীপুর উপজেলার বহেড়াতৈলে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভের সৌন্দর্যবর্ধন ও জাদুঘর নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন। টাঙ্গাইল শহরের নিজ বাস ভবনে দৈনিক ইনকিলাবকে দেয়া একান্ত স্বাক্ষাৎকারে তিনি এ দাবি জানান। 

জানা যায়, ১৯৭১ সালের ১০ জুন বহেড়াতৈল এলাকায় কাদেরিয়া বাহিনী একত্রিত হয়ে ধর্মগ্রন্থ হাতে নিয়ে শপথ গ্রহণ করেন দেশ স্বাধীন না করে ঘরে ফিরে যাবেন না। এ স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে স্বাধীনতার ইতিহাসের সাথে পরিচয় করে দেয়ার উদ্দেশে তৎকালীন টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনের এমপি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী এখানে একটি শপথস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ১৯৯৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী শপথস্তম্ভের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। উদ্বোধন করার কথা ছিল তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদের। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তা আর হয়ে উঠেনি। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর বনিবনা না হওয়ায় শপথস্তম্ভের কার্যক্রম স্থিমিত হয়ে যায়। অবহেলার কারণে বর্তমানে এর চারপাশে ঝোপঝাড়ে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে বিশাল অধ্যায় জুড়ে রয়েছে সখীপুরের বহেড়াতৈল। বহেড়াতৈল ছিলো কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান ঘাটি। স্মৃতিস্তম্ভের সৌন্দর্যবর্ধন ও জাদুঘর নির্মাণের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার সুযোগ সৃষ্টি করা প্রয়োজন। ব্যক্তি উদ্যোগে সৌন্দর্যবর্ধন ও জাদুঘর নির্মাণের নকশাও তৈরি করেছিলাম। কিন্তু সময় উপযোগী না হওয়ায় তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। তিনি আরো বলেন, বহেড়াতৈল শপথস্তম্ভের সামনে ইউনিয়ন ভ‚মি অফিসের নতুন ভবন নির্মাণের ঘটনায় বিস্মিত ও মর্মাহত। এটি জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক। তিনি এ ধরনের কাজ বন্ধ করার আহবান জানান।
এদিকে, গত ১১ জুন লাকী এন্টারপ্রাইজ ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড ও এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে সখীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার আসমাউল হুসনা লিজা গত বৃহস্পাতিবার ওই ভবনের নির্মাণ কাজ সাময়িক বন্ধের নির্দেশ প্রদান করেন। এ নির্দেশকে অমান্য করে লাকী এন্টারপ্রাইজ ভবনের বেইস ঢালাই করলে ইউএনও গত শনিবার উপজেলা প্রকৌশলী এসএম হাসান ইবনে মিজানকে শোকজ করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আসমাউল হুসনা লিজা বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের দাবির মুখে ভূমি অফিসের নবনির্মিত ভবনের কাজ সাময়িক স্থগিত করা হয়।
অপরদিকে, বহেড়াতৈল বাজারের পাশে নির্মিত শপথস্তম্ভের সামনে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নতুন ভবন নির্মাণকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদ, মানববন্ধন ও আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনার পরে বহেড়াতৈল মুক্তিযুদ্ধের শপথস্তম্ভ পরিদর্শন করেন টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম। এসময় তিনি মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং ভূমি অফিসটি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার আশ্বাস দেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন