নেছারাবাদ উপজেলার সেহাংগলে একটি খালের উপর সড়ক বিভাগের বেইলিব্রীজ চালু থাকার পরেও মাত্র চার থেকে পাঁচশত ফুট ব্যবধানে একই খালের উপরে নির্মিত হচ্ছে ৩৩ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি গার্ডার ব্রিজ। নবনির্মিত ওই ব্রীজটির ব্যয় ধরা হয়েছে সোয়া চারকোটি টাকা। উপজেলার সমদেয়কাঠি ইউনিয়নের সেহাঙ্গল বাজারের দক্ষিন পার্শ্বের খালের উপরই ব্রীজটি নির্মান করা হচ্ছে। ইউনিয়ন সড়কের সংযোগ দেয়ার অজুহাতে অপ্রয়োজনীয় একটি ব্রিজ নির্মান করার নামে সরকারের চার কোটি ১৪ লাখ ১৪ হাজার টাকার অপচয় করা হচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয় সুধীজন সহ সুশিল সমাজ।
অথচ,খালের ত্রিমোহনায় নির্মানাধীন ওই ব্রিজের দক্ষিন পাড়ে মাত্র ৩/৪ শ‘ ফুট সরু একটি মাটির রাস্তার পাশে কোনো বসত বাড়ি নেই। ওই রাস্তায় মানুষের তেমন একটা যাতায়াতও করে না। বাজারের মধ্যের সড়ক দিয়ে মানুষ পূর্বের বেইলী ব্রিজটি পার হয়ে যাতায়াত করে থাকেন। তাই ওই সোয়া চারকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হতে যাওয়া ব্রীজটি মানুষেরকোন কাজে আসবে না বলে স্থানীয় বাসিন্দা সহ পথচারিরা।
টি এন-এ এস আই (জেবি) নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চলতি মাসের শুরুতে ওই ব্রিজের কাজ শুরু করেছেন। তারা কাজ শুরুর পর মানুষ জানতে পারে ওই জায়গায় একটি ব্রিজ নির্মান করা হচ্ছে। গুরুত্বহীন জায়গায় ৪ কোটি টাকার ব্রিজ নির্মান করায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃস্টি হয়েছে। এদিকে ওই বাজারের উত্তর পার্শ্বে রাজবাড়ি খেয়াঘাটে যাতায়াতের জন্য জনগুরুত্বপূর্ন সড়কের খালের উপর একটি জরাজীর্ণ আয়রন ব্রিজ নির্মানের উদ্যোগ নেয়নি এলজিইডি।
জানাগেছে, নেছারাবাদ পিরোজপুর সড়কের পাশে সেহাংগল একটি ছোট বাজার। ওই বাজারের খালের উপর সড়ক বিভাগের একটি বেইলী ব্রিজ দিয়ে গত ১৫ বছর যাবত যানবাহন চলাচল করছে। সড়ক বিভাগ ওই জায়গায় পাকা ব্রিজ নির্মানের জন্য প্রক্কলন তৈরীসহ টেন্ডার আহবানের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। সড়ক বিভাগের রাস্তা চালু হওয়ার আগে বাজারের পশ্চিম পাশের মাটির রাস্তা দিয়ে মানুষ যাতায়াত করত। সেভাবেই রাস্তাটি ইউনিয়ন সড়ক হিসেবে এলজিইডির আইডিভুক্ত হয়। ওই স্থানে ব্রিজের গুরুত্ব বিবেচনা না করেই এলজিইডি টেন্ডার আহবান করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়।
সমদেয়কাঠি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো.হুমায়উন বেপারী বলেন, দক্ষিন পাড়ের মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়া ছাড়া ওইখানে পুলের কোনো প্রয়োজন পরেনা। তিনি বলেন ওই জায়গায় একটি লোহার পুল ছিল এবং সেটি মেরামত করলেই চলত। তাছাড়া একান্ত জরুরী মনে করলে ৩০/৪০ লাখ টাকা খরচ করে একটি পুল তৈরী করলেই যথেষ্ট হতো বলে মনে করেন হুমায়উন।
এ বিষয় এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মীর আলী শাকির বলেন, ওই জায়গায় গার্ডার ব্রিজ নির্মানের প্রস্তাব তার আগের ইঞ্জিনিয়ার সাহেব দিয়েছেন। উপজেলা প্রকৌশলী বলেন, তিনটি খালের মোহনা ভাঙ্গন কবলিত এবং দক্ষিন পাড়ে মসজিদ থাকায় ব্রিজের এ্যাপ্রোস সড়ক করা জটিল বলে তিনি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। এ বিষয় এলজিইডি পিরোজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী সুশান্ত রঞ্জন রায় বলেন, তিনি আগামী সপ্তাহে (জুলাইর প্রথম) ঘটনা স্থলে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন। সে পর্যন্ত কাজ বন্ধ থাকবে বলে ঠিকাদারকে জানিয়েছেন। তবে সরেজমিনে দেখাযায় ঠিকাদার পাইলিংসহমাটি ভরাটের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে নির্বাহী প্রকৌশলী সুশান্ত রঞ্জন রায় এর বক্ত্যব্যেনুযায়ি ওই ঠিকাধারি প্রতিষ্ঠান তার নিষেধ উপেক্ষা করেও তাদের মত করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন