নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের মহিশাহপাড়া এলাকায় মধুমতি নদীতে ড্রেজার দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ফসলি জমিসহ বসতবাড়ি বিলীন হচ্ছে নদীতে। প্রতিনিয়ত তীব্র হচ্ছে ভাঙন। ভাঙন রোধে দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহণসহ বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানিয়েছে গ্রামবাসীরা। খবর পেয়ে লোহাগড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মধুমতি নদীর পানির স্রোতে এমনিতেই নদীরপাড় ভেঙে যাচ্ছে। তারপর আবার নদীর কূল দিয়ে একাধিক ড্রেজার ম্যাশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বালু মহল ইজারা নিয়ে সংশ্লিষ্ট ইজারাদার একাধিক ড্রেজিং ম্যাশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। অপরিকল্পিতভাবে এ বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙন আরো তীব্রতর হচ্ছে। মহিশাহপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নড়াইল জেলা পরিষদের সদস্য ও আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সস্পাদক শেখ সাজ্জাদ হোসেন মুন্না ও ছাত্রলীগ নেতা জামান সিকদার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ইতোমধ্যে দুই শতাধিক বসতবাড়ি নদী গর্ভে চলে গেছে। আরো প্রায় দুই হাজার পরিবার নদী ভাঙনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। দ্রæত ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নিলে ওই পরিবারগুলোর বসতবাড়িও নদী গর্ভে চলে যাবে। বালু মহলের ইজারাদার তরিকুল বিশ^াস জানান, নদীর মাঝখানে চর জেগেছে। সরকারের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে আমি ম্যাশিন দিয়ে ওই চর থেকে বালু কাটছি। সতর্কতার সাথে বালু কাটছি তারপরও নদীর পাড় কিছুটা ভাঙছে। গ্রামের লোকেরা বালু কাটতে বাধা দিয়েছে। আমি গ্রামের লোকের সাথে সমঝোতা করেই বালু কাটতে চাই।
লোহাগড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাখী ব্যানার্জী বলেন, খবর পেয়ে মধুমতিপাড়ে গিয়ে দেখেছি ভাঙন তীব্র হচ্ছে। বসতবাড়িও ভেঙে যাচ্ছে। এলাকাবাসী ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। উর্দ্ধতন কর্তৃক্ষের নিকট একটা প্রতিবেদন পাঠাচ্ছি। আপাতত ওই এলাকায় বালু না কেটে অন্যত্র থেকে বালু কাটা যায় কিনা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ নেওয়াজ তালুকদার বলেন, স্থায়ী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তাবনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কাজী মাহাবুবুর রশীদ বলেন, লোহাগড়ার অ্যাসিল্যান্ডকে বলেছি সরেজমিন প্রতিবেদন দিতে। আর আপাতত ওই ভাঙনকবলিত এলাকা থেকে বালু উত্তোলন না করতে ঠিকাদারকে বলে দেবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন