এবার সিনেমার ছায়াছবির মতো পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ডে স্বীকার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ধরমন্ডলের লাইজু আক্তার(১৬) নামে এক কিশোরীর হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী পিতা সনু মিয়া,ভাই আদম আলী ও মামা মাজু মিয়া লাইজুকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। সোমবার রাতে জেলা পুলিশের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ জানানো হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ হত্যাকান্ডের রহস্য উম্মোচন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা। তার সাথে ছিলেন নাসিরনগর থানার ওসি(তদন্ত) মোঃ কবির হোসেন,এসআই জুলুস খান পাঠান।
পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে গত রবিবার নিহতের মামা মাজু মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেন। তার তথ্যমতে সোমবার পিতা সনু মিয়াকে ধরমন্ডল লম্বাহাটি থেকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আহমেদের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মামা মাজু মিয়া। এদিকে মঙ্গলবার ভোর রাতে ভাই আদম আলীকে ধরমন্ডল লম্বাহাটি থেকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ভাই আদম আলীও। পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,লাইজু তার মামা মাজু মিয়ার বাড়িতে থাকতো। ২২ জুন লাইজুকে বাড়ির পাশে পাটক্ষেতে একজনের সাথে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেন মাজু মিয়া। বিষয়টি লাইজুর পিতা সনু মিয়া ও মা সাফিয়া আক্তারকে জানান মামা মাজু। এ ঘটনায় সনু মিয়া ক্ষিপ্ত হন। পরদিন (২৩ জুন)সকালে ঘরে বসে পিতা সনু মিয়া ও মামা মাজু মিয়া লাইজুকে হত্যার পরিকল্পনা করেন । পরিকল্পনা অনুযায়ি ওই দিন রাত সাড়ে ৯ টা থেকে সাড়ে ১০ টার মধ্যে লাইজুর পিতা সনু মিয়া মেয়েকে ঘর থেকে ডেকে বাইরে নিয়ে যান। এরপর লাইজুকে তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন করেন পিতা সনু ও মামা মাজু। পিতা ও মামার সাথে হত্যাকান্ডে যোগ দেন লাইজুর ভাই আদম আলী। পরবর্তীতে তারা তিনজন মিলে লাইজুর মরদেহ স্থানীয় একটি ডোবায় ফেলে দেন।
নাসিরনগর থানার পরিদর্শক(তদন্ত)কবির হোসেন জানান,আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন ভাই আদম আলী ও মামা মাজু । এর আগে শনিবার (২৭ জুন) সকালে লম্বাহাটি এলাকার একটি ডোবা থেকে লাইজুর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। লাইজুর মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু প্রথমে পরিবারের কেউ মামলা করতে রাজি হয়নি। পরে হত্যার ঘটনায় কিশোরীর মা সাফিয়া আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এছাড়া লাইজুর জন্য পরিবারের কারও কোন শোকও ছিল না। এসব বিষয়ে আমাদের সন্দেহ আরও তীব্র হয় তাদের প্রতি। মূলত মামাকে টাগের্ট করা হয়।এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে পিতা ও ভাইয়ের সম্পৃক্তার কথা বেরিয়ে আসে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন