শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

অপটিক্যাল ফাইবার কাটা পড়ায় দক্ষিণাঞ্চলে টেলিযোগাযোগ বিপর্যস্ত

প্রকাশের সময় : ৩০ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : রাষ্ট্রীয় টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান- বিটিসিএল’র ট্রান্সমিশন সার্কেলের দায়িত্বশীল মহলের উদাসীনতা ও অবহেলায় গত ৪ দিনে দু’দফায় সারা দেশের সাথে দক্ষিণাঞ্চলের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত রয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বরিশালসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের এনডবিøউডি ও ল্যান্ড ফোন থেকে মোবাইল অপারেটরে সংযোগের পাশাপাশি আইএসডি সার্ভিস পর্যন্ত বন্ধ ছিল। গত মঙ্গলবার সকাল থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের টেলিযোগাযোগ পরিষেবা বন্ধ ছিল। মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে দু’দফায় মাদারীপুরের মোস্তফাপুরের কাছে ভূগর্ভস্থ অপটিক্যাল ফাইবার কাটাপড়ায় এ বিপত্তি ঘটলেও তার দ্রæত মেরামতে বিটিসিএল’র ট্রান্সমিশন সার্কেলের দায়িত্বশীল মহল চরম উদাসীন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এমন কি এ অপটিক্যাল ফাইবার কাটা পড়ার পাশাপাশি বরিশাল-খুলনা মাইক্রোওয়েভ লিংকটিও অকার্যকর হয়ে পড়ায় দক্ষিণাঞ্চলের টেলিফোন গ্রাহকগণ পার্শ্ববর্তী জেলা-উপজেলাগুলোতেও যোগাযোগ করতে পারছেন না। এ বিপত্তির কারণে রাষ্ট্রীয় সেলফোন কোম্পানী-টেলিটক’র ২-জি নেটওয়ার্কও অনেকটা অকার্যকর। ফলে টেলিটক’র সিংহভাগ গ্রাহক কোন কল করাসহ কল রিসিভও করতে পারছেন না। রাষ্ট্রীয় টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান বিটিসিএল ২০০৫-০৬ অর্থবছরে সারা দেশের সাথে দক্ষিণাঞ্চলের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজড করার লক্ষ্যে বরিশাল-ফরিদপুর জাতীয় মহাসড়কের পাশের ভূগর্ভে অত্যাধুনিক অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার যোগসাজশে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ভূগর্ভের নির্দিষ্ট গভীরতার অনেক ওপরে অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করায় তা বারবারই কাটা পড়ছে। এমনকি মহাসড়কের অনেক স্থানেই শিশুরা খেলা করার সময়ও ওই অপটিক্যাল ফাইবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের সাথে সারা দেশের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। শুধু এনডবিøউডি বা আইএসডি কল নয়, বেশীরভাগ সময়ই ইন্টারনেট নেটওয়ার্কও অকার্যকর হয়ে পড়ে।
তবে অপটিক্যাল ফাইবার কাটাপড়া বা ক্ষতিগ্রস্ত হবার চেয়েও ক্ষতিগ্রস্ত এসব ক্যাবল মেরামতে বিপত্তি আরো বেশী। বরিশাল থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে মোস্তফাপুরে ক্ষতিগ্রস্ত অপটিক্যাল ফাইবার মেরামতে সর্বোচ্চ দু’ঘণ্টা সময় লাগার কথা থাকলেও সে কাজটি করতে ঢাকা ট্রান্সমিশন বিভাগ থেকে টেকনিশিয়ান প্রেরণ করা হচ্ছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে ঢাকা থেকে বিটিসিএল’র লোকজন পৌঁছতেই ১২-১৬ ঘণ্টা পার হয়ে যাচ্ছে। অথচ মাত্র ১ ঘণ্টার দূরত্বে বরিশাল কেরিয়ার বিভাগ থেকে দক্ষ কারিগরি লোকবল ক্ষতিগ্রস্ত ক্যাবল মেরামতে পাঠান হচ্ছে না। এক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা পরিহার করে নিজদের অস্তিত্ব ধরে রাখতেই টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা পুনর্বাসনে বিটিসিএল’কে তাগিদ দিয়েছেন সাধারণ গ্রাহকগণ। এসব বিষয়ে গতকাল বরিশালে বিটিসিএল’র কেরিয়ার বিভাগ ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সেল ফোনে যোগাযোগের বহু চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি। তবে বরিশালে বিটিসিএল’র কারখানা অঞ্চলের পরিচালকের সাথে আলাপ করা হলে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন বলে জানিয়ে খুব দ্রæতই দক্ষিণাঞ্চলের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা পুনর্বহালের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন