চট্টগ্রাম ব্যুরো : বন্দরনগরী চট্টগ্রামে পানির চাহিদা মেটাতে ওয়াসার চারটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে ২০২১ সাল থেকে চট্টগ্রাম নগরীতে পানির সংকট থাকবে না। নগরবাসী ২৪ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্নভাবে পানি পাবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ। গতকাল (বুধবার) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে ওয়াসার চলমান প্রকল্পসমূহের অগ্রগতি বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
বর্তমানে চলমান এ চারটি প্রকল্প হলো ঃ কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প, চিটাগাং ওয়াটার সাপ্লাই ইমপ্রুভমেন্ট অ্যান্ড স্যানিটেশন প্রকল্প, কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প (ফেজ-২) এবং ভা-ালজুড়ি পানি সরবারহ প্রকল্প। এ চারটি প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ওয়াসার দৈনিক পানি সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে ৪৩ কোটি লিটার। এর মধ্যে কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষপর্যায়ে। বর্তমানে নগরীতে পানির চাহিদা রয়েছে ৫৫ কোটি লিটার। তবে ওয়াসা জরুরি প্রয়োজন মেটাতে পানি সরবরাহ নামক প্রকল্পের মাধ্যমে ৩০টি গভীর নলকূপ স্থাপন করে পানির উৎপাদন ২১ কোটি লিটারে উন্নীত করেছে। ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ২০০৬ সালে একনেকে অনুমোদন পাওয়া এ প্রকল্পের ৯৬ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এ প্রকল্পের তিনটি প্যাকেজের মধ্যে দুটিই ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। আরেকটির কাজ ১৪ শতাংশ বাকি আছে। এপ্রিল মাসের শুরুতেই এ প্রকল্পের টেস্টিং শুরু হবে। প্রায় দু’মাসের টেস্টিং শেষে আগামি জুন থেকে এ প্রকল্প থেকে পানি সংগ্রহ করা যাবে। এর মধ্য দিয়ে রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় অবস্থিত এ প্রকল্প থেকে পুরো নগরে পানি সরবরাহ করা যাবে। ১ হাজার ৮৪৮ কেটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ওয়াসার পানি উৎপাদন ১৪ কোটি লিটার বৃদ্ধি পাবে। ওয়াসার দ্বিতীয় প্রকল্প চিটাগাং ওয়াটার সাপ্লাই ইম্প্রুুভমেন্ট অ্যান্ড স্যনিটেশন প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২১ সালের মধ্যে। ২০১১ সালে একনেকে অনুমোদন পাওয়া এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এ প্রকল্পের অধীনে ১০টি প্যাকেজ রয়েছে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নগরে দৈনিক ৯ কোটি লিটার পানি সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি প্রণীত মাস্টার প্লান অনুসারে ড্রেনেজ ও স্যানিটেশন প্রকল্প গ্রহণ করার পথ সুগম হবে। এছাড়া ২০১৩ সালে অনুমোদন পাওয়া কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প (ফেজ-২) প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২১ সালের মধ্যে। ছয়টি প্যাকেজের এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৪৯১ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এ প্রকল্প শেষ হলে ১৪ কোটি লিটার পানি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
সংবাদ সম্মেলনে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ বলেন, ২০২১ সালের মধ্যেই ওয়াসার চলমান চারটি প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। পাশাপাশি এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ২০২২ সাল থেকে ভূগর্ভস্থ পানি নেয়া বন্ধ করে পরিবেশের সুরক্ষা ফিরিয়ে আনতে গভীর নলকূপগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্রশাসন) গোলাম হোসেন, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্রকৌশলী) রতন কুমার সরকার, সচিব মো. সামসুদ্দোহা, বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য খোকন, প্রধান প্রকৌশলী (চঃদাঃ) মুহাম্মদ জহুরুল হক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা কাজী নুরজাহান শীলা প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন