ঈদ-উল-আযহা পালিত হবে এক মাসের কম সময়ের মধ্যে। প্রতিবছর এ সময়ের আগেই গরু-ছাগল কেনা-বেচা বেশ জমজমাট হয়ে ওঠে।
বিগত বছরগুলোতে পাশের দেশ ভারত থেকে অবৈধ পথে গরু এসে দেশের হাটবাজারগুলো ভরে গেলেও এবার কোরবানির পশু চোরাপথে কোনোভাবেই যেন দেশে ঢুকতে না পারে সে জন্য কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার। কোরবানির পশু বিক্রেতাদের স্বার্থ রক্ষায় দেশের আইনশৃঙ্খখলা বাহিনী সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করেছেন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতর বলছেন, দেশে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি গরু মজুদ রয়েছে। এর মধ্যে চোরাপথে কোরবানির পশু দেশে ঢুকলে খামারিদের স্বপ্ন মাঠে মারা যাবে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে দেশে মোট গরু, মহিষ ও ছাগলের সংখ্যা ২ কোটি ৪৯ লাখ। এর মধ্যে কোরবানির জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ১ কোটি ১৮ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০টি। ২০১৯ সালে কোরবানির জন্য গরু, ছাগল ও মহিষের চাহিদা ছিল ১ কোটি ৪ লাখের মতো। প্রতিবছর ৫ শতাংশ হারে কোরবানির চাহিদা বাড়ার হিসেবে এবার ১ কোটি ১২ লাখের মতো গরু, মহিষ ও ছাগলের চাহিদা থাকার কথা। কিন্তু করোনার কারণে চাহিদা বাড়ার কারণ দেখছে না প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। এবার কোরবানির চাহিদা ধরা হয়েছে আনুমানিক ১ কোটি ৫ লাখের মতো।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পরিচালক (সম্প্রসারণ) আরিফুল ইসলাম বলেন, বিদেশ থেকে কোরবানির পশু আনার বিষয়টি অনেক আগে থেকেই নিরুৎসাহি করা হচ্ছে। দেশীয় উৎস থেকেই আমরা পর্যাপ্ত গরু, মহিষ ও ছাগল পাচ্ছি। আশা করি কোনো সমস্যা হবে না। তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে ডিজিটাল মাধ্যমে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়েছে।
বৈঠকে ৮টি এজেন্ডার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয় আর তা হলো কোরবানি উপলক্ষে অবৈধ পথে পশু আমদানি ঠেকানো। দেশে খামারি ও গৃহস্থালি পর্যায়ে পর্যাপ্ত কোরবানির পশু রয়েছে। বৈঠকের আরও আলোচনা হয় কোরবানির হাটে ভেটেরিনারি সেবা দেয়ার জন্য স্টল বরাদ্দ এবং ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম গঠন, গবাদি পশুতে স্টেরয়েড বা হরমোনের অপপ্রয়োগ বন্ধ করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশ বান্ধব কোরবানি নিশ্চিত।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অন্য দেশের পশু চোরাপথে দেশে আনতে না দেয়ার জন্য বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কথা বলা হয়েছে। ঈদ সামনে রেখে মূলত সীমান্ত পথ দিয়ে চোরাই পশু ঢোকানোর হিড়িক পড়ে। এটা কঠোরভাবে বন্ধ করতে হবে। গত চার-পাঁচ বছর ধরে ভারত থেকে পশু আনা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এরপর দেশি চাহিদা, বিশেষ করে কোরবানির চাহিদা পূরণ হবে কি না তা নিয়ে সংশয় ছিল। বিগত বছরগুলোতে দেশি খামারি ও গৃহস্থালি পর্যায়ের পশু দিয়েই চাহিদা পূরণ হয়েছে। তারপরও চোরাচালানিসহ বিভিন্নভাবে কিছু পশু দেশে আনা হচ্ছে। কিন্তু এবার করোনার কারণে একদিকে কোরবানির চাহিদা কম, তার ওপর পর্যাপ্ত পশু দেশেই আছে। তাই এবার চোরাই পশু ঠেকাতে আগেভাগেই তৎপর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতর।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন