শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

বাউফলে নির্মাণের পর মাস যেতে না যেতেই রাস্তার বেহাল অবস্থা!

এডিপির প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম

বাউফল উপজেলা (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ জুলাই, ২০২০, ৭:৩৫ পিএম

নির্মাণের পর মাস যেতে না যেতেই একটি সোলিং রাস্তা বেহাল অবস্থায় পরিণত হয়েছে। রাস্তাটি কাদামাটির সাথে মিলিয়ে গেছে। বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় (এডিপি) গত ২০ জুন রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে ৩০ জুন বিল পরিশোধ করা হয়েছে।
জানা গেছে, বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় (এডিপি) উপজেলায় ৩৪টি প্যাকেজ প্রকল্পের দরপত্র আহবান করা হয়। এর মধ্যে ১১ নম্বর গ্রুপের প্যাকেজের বাউফল সদর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিলবিলাস গ্রামের মোবারক মোল্লা বাড়ির পশ্চিম পাশের সোলিং রাস্তা থেকে রাজা বাড়ি অভিমুখে একটি মাটির রাস্তায় সোলিং করা হয়। মেসার্স মদিনা এন্টার প্রাইজ নামের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজটি করেন। ২০ জুন শত ভাগ কাজ দেখি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধ করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, সোলিং করার পর এক মাস যেতে না যেতেই রাস্তার ইট কাদামাটির সাথে মিলিয়ে গেছে। অতি নি¤œমানের ইট দিয়ে রাস্তাটি সোলিং করা হয়। একই প্যাকেজে গোসিংগা জনৈক সুমনের বাড়ির সামনে একটি টিউবওয়েল, বাউফল হাসপাতালে একটি হোন্ডা জেনারেটর ও বাউফল আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের বাস ভবন মেরামত কাজ রয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, গরিব ও দুস্থ্য পরিবারের জন্য সুমনের বাড়ির সামনে টিউবওয়েলটি বসানোর কথা থাকলেও তা বসানো হয়েছে সুমনের ঘরের পিছনে। তার বাড়ির সামনে আগ থেকেই একটি টিউবওয়েল রয়েছেন। বাউফল হাসপাতালে হোন্ডা জেনারেটরের পরিবর্তে দেয়া হয়েছে কম অন্য ব্রান্ডের একটি জেনারেটর। আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষকের বাস ভবনটি গত ফেব্রুয়ারি মাসে সহকারী প্রধান শিক্ষক ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ব্যায়ে মেরামত করে বর্তমানে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। অথচ ওই বাস ভবন মেরামত দেখিয়ে বিল উত্তোলন করে নেয়া হয়েছে। সহকারী প্রধান শিক্ষক আবু হানিফ জানান, তিনি ব্যক্তিগত খরচে প্রধান শিক্ষকের বাসভবনটি মেরামত করেছেন। একদিন লিংকন নামের এক ব্যক্তি তার বাসায় এসে মেরামত বাবদ ৫০ হাজার টাকা দেয়ার কথা বললেও তা এখন পর্যন্ত দেয়া হয়নি। এই গ্রুপের প্যকেজে ৩ লাখ ২৭ হাজার ৭শ ৫০ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে।
কালিশুরী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুর রহমার সরদারের বাড়ি সামনে আয়রন ব্রিজটি গত ফেব্রুয়ারি মাসে মেরামত কারা হলেও এডিপি প্রকল্পের আওতায় নতুন করে প্রকল্প দেখিয়ে ইজি এন্টার প্রাইজের নামে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা উত্তোলন করে নেয়া হয়েছে। অথচ এই বরাদ্ধ দিয়ে ব্রিজের কোন মেরামত কাজ করা হয়নি।
নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের (এডিপির) আওতায় গত ৩০ জুনের মধ্যে (১৯-২০ অর্থ বছর) ওই সব প্রকল্পের প্যাকেজের কাজগুলো শেষ করে ঠিকাদারদের বিল পরিশোধ করার কথা। কোন ঠিকাদার নিদৃষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারলে ওই প্রকল্পের অনুকুলে বরাদ্ধকৃত সমুদয় বরাদ্ধ ফেরৎ পাঠানোর কথা। গত ৮,৯ ও ১০ জুলাই সরেজমিন উল্লেখিত অধিকাংশ প্রকল্প পরিদর্শন করে দেখা গেছে, কাজ শেষ হয়নি। ১০ নম্বর গ্রুপের একটি প্যাকেজে মদনপুর ইউনিয়নের দ্বিপাশা গ্রামের নুর হোসেন হাওলাদার বাড়ির সামনে মসজিদের পুকুরের ঘাটলা নির্মাণের কাজ চলছে। যেনতেন ভাবে কাজটি করা হচ্ছে। এ ভাবে অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ শেষ না করেই ঠিকাদারকে বিল দেয়া হয়েছে।
এ ব্যপারে উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ সুলতান হোসেন বলেন,‘ পে-অর্ডারের মাধ্যমে বিশেষ জামানত রাখা হয়েছে। কাজ শেষ হলে তাদেরকে বিল পরিশোধ করা হবে। ঠিকাদারদের কাছ থেকে বিশেষ জামানত রেখে জুন বান্ডিংসের কাজ করানো যায় কিনা, এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘উপজেলা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ি এ বিশেষ জামানত রাখা হয়েছে।’ তবে তিনি লিখিত কোন সিদ্বান্তের দেখাতে পারেননি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন, বিশেষ জামানত রেখে কাজ কারার কোন বিধান নেই । ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ না হলে বিধি অনুযায়ি টাকা ফেরৎ পাঠানোর কথা।’ তিনি এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া কথা জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন