পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে দৌলতদিয়া পাটুরিয়া নৌরুটে তৈরি হয়েছে তীব্র স্রোত। স্রোতের কারণে ফেরিগুলোকে ঘাটে ভিড়তে সময় লাগছে দ্বিগুণ। এছাড়াও রয়েছে ফেরি সঙ্কট। যে কারণে প্রতিনিয়ত ঘাট এলাকায় তৈরি হচ্ছে যানবাহনের লম্বা সাড়ি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মায় পানি ১২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রভাহিত হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পানি বৃদ্ধির ফলে ফেরিঘাটগুলো এখন তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। দৌলতদিয়া ঘাটে ৬টি ফেরিঘাটের মধ্যে ১ ও ২ নম্বর ঘাট গত বছরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত চলাচলের উপযোগি হয়নি। বাকি ৩, ৪, ৫ ও ৬ নম্বরঘাট সমান পানি দেখা যাচ্ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে পানি যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে হয়তো ২-১ দিনের মধ্যে তলিয়ে যাবে সচল থাকা ৪টি ঘাট।
পানি বৃদ্ধির ফলে নদীতে তৈরি হওয়া প্রবল স্রোতের বিপরীতে ১৬টি ফেরির মধ্যে বিকল হয়েছে ৪টি। বাকি ১২টি ফেরি দিয়ে চলছে এই নৌরুটের পারাপার। এছাড়াও প্রবল স্রোতের কারণে ৩০ মিনিটের এই নৌপথ পারি দিতে সময় লাগছে এক ঘণ্টাও বেশি।
গতকাল দুপুরে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দৌলতদিয়া জিরো পয়েণ্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার এলাকায় অন্তত তিন শত ট্রাক আটকে আছে। এছাড়াও ঘাট থেকে ১২ কিলোমিটার পেছনে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গোয়ালন্দ মোড় থেকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার রাজবাড়ী জুট মিল পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার পর্যন্ত ৪ শত ট্রাক পারাপারের অপেক্ষায় আছে।
গোয়ালন্দ মোড়ে আটকে থাকা ট্রাকের চালক হাবিবুল্লাহ শেখ বলেন, বিআইডবিøটিসির গাফিলতির কারণে ঘাটে এসে বিপদে পড়তে হয় মাঝে মধ্যেই। এটা কোনো নতুন বিষয় নয়? শীতে কুয়াশায় ফেরি বন্ধ আবার বর্ষায় স্রোতে ফেরি নষ্ট হয়। এ ব্যাপারে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই ফেরি কর্তৃপক্ষের।
অপর এক ট্রাক চালক আমীর মন্ডল বলেন, গত সোমবার সকাল থেকে গোয়ালন্দ মোড়ে আটকে আছি। কখন ফেরির নাগাল পাবো বলা মুশকিল। এদিকে ট্রাকের মালিক ও ট্রাকে থাকা মালামালের ব্যাবসায়ী বারবার ফোনে রাগারাগি করছে। তাছাড়া এমন একটি এলাকায় আটকে আছি যেখানে খাবারের হোটেল, প্রসাব পায়খানার কোনো ব্যাবস্থা নেই।
রাজবাড়ীর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মাসুদুর রহমান মৃধা বলেন, প্রবল স্রোত ও ফেরি সল্পতার কারণে চাপ বেড়েছে যানবাহনের। ঘাট এলাকায় যাতে কোনো জটলা তৈরি না হয় সেজন্য গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় ট্রাকগুলোকে সাড়িবদ্ধভাবে রাখা হচ্ছে।
এ ব্যপারে বিআইডব্লিটিসি দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের ব্যাবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ রনি জানান, প্রবল স্রোতে ফেরিগুলোকে নদীপার হতে সময় লাগছে বেশি। যে কারণে কমেছে ট্রিপ সংখ্যাও। তাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করা হচ্ছে কাচামাল বহনকারী ট্রাক। স্রোত প্রাকৃতিক দুর্যোগ এতে কারো হাত নেই। তিনি আরও বলেন, এই নৌরুটে বর্তমানে ১৩টি ফেরি চলাচল করছে। তবে বিকল ফেরি ২টি খুব শিগগিরই বহরে যুক্ত হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন