শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পরস্পরের ওপর দায় চাপাচ্ছেন

ডা. সাবরিনা-আরিফ মুখোমুখি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০২০, ১২:০১ এএম

করোনা টেস্ট কেলেঙ্কারিতে কার্ডিয়াক সার্জন থেকে খলনায়িকা

জেকেজি হেলথ কেয়ারের দুর্নীতিতে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক (বরখাস্ত) ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীর সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখতে তার স্বামী আরিফুল চৌধুরীকে মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ সময় একে অন্যের ওপর দোষ দিয়েছেন। তবে তারা দু’জনই প্রতারণার কথা স্বীকার করেন।

এদিকে, ডা. সাবরিনা জেকেজি হেলথ কেয়ারের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকার দাবি করলেও তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসেবে মাসে মাসে বেতন নিতেন বলে প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। প্রতি মাসে তিনি ত্রিশ হাজার টাকা করে বেতন নিতেন। ইতোমধ্যে বেতনের তিনটি সিøপ উদ্ধার করেছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। সূত্র জানায়, জেকেজি হেলথ কেয়ারের দুর্নীতিতে ডা. সাবরিনার সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখতে তার স্বামী আরিফুল চৌধুরীকে ফের রিমান্ডে নেয়া হয়। গত বুধবার রাত ও গতকাল তাদের কয়েকবার মুখোমুখি করা হয়েছে। এসময় সাবরিনা বলেন, আরিফের জন্যই আজ তার এই অবস্থা। সূত্র আরো জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে সাবরিনা দাবি করেন, জেকেজি ও ওভাল গ্রুপের অনেকেই এই অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত। আরিফ চৌধুরীর এই কর্মকান্ড এবং ব্যক্তিগত হয়রানির কারণে তিনি তাকে ডিভোর্সও দিয়েছেন। তবে আরিফ বলেছেন, সাবরিনার কারণে এই অপকর্মে জড়িয়েছেন তিনি।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, তারা পরস্পরকে তুই-তুকারি করছিলেন, একজন অপরজনের জীবন ধ্বংসের জন্য দায়ী করছিলেন। সাবরিনা তার স্বামীকে বলছিলেন, সবকিছু করে এখন আমাকে ফাঁসিয়েছিস। আরিফুল কিছুক্ষণ নীরব থেকে বলেন, তুমিতো চেয়ারম্যান, তোমার কি দায় নেই? আরিফুল এ সময় মোটামুটি শান্ত থাকলেও সাবরিনাকে অস্থির দেখাচ্ছিল।

গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন সাংবাদিকদের বলেন, আরিফ ও সাবরিনা করোনাকে কেন্দ্র করে তাদের জেকেজি হেলথ কেয়ারের ভুয়া রিপোর্টের কথা স্বীকার করলেও কী পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন সেটা বলেননি। আরিফ বা সাবরিনার কার কি ভ‚মিকা কিংবা কার কি দোষ ছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, কি পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে সেটি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। সাবরিনার তিন দিনের রিমান্ডে এ তথ্য উদ্ধার না করা হলে তাকে ফের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

পুলিশ জানায়, জেকেজি হেলথ কেয়ার থেকে এখন পর্যন্ত ২৭ হাজার রোগীকে করোনাভাইরাস পরীক্ষার প্রতিবেদন দেয়া হয়। এর মধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের নমুনা আইইডিসিআরের মাধ্যমে পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০টি প্রতিবেদন তৈরি করা হয় জেকেজি কর্মীদের ল্যাপটপে। যার মাধ্যমে জেকেজি হাতিয়ে নেয় প্রায় ৮ কোটি টাকা। বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহের কথা থাকলেও প্রতিটি পরীক্ষার জন্য নেয়া হতো সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা। আর বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে ১০০ ডলার। তদন্ত পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, জেকেজির অফিস থেকে জব্দ করা ডেস্কটপে দুই হাজারের বেশি কোভিড পরীক্ষার জাল রিপোর্ট পাওয়া গেছে। এগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ২৩ জুন সাবরিনার স্বামী আরিফ চৌধুরীসহ ৬ জনকে গ্রেফতারের পর তেজগাঁও থানায় ৪টি মামলা করা হয়। গত রোববার ডা. সাবরিনাকে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তেজগাঁও ডিসি অফিসে আনা হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদে কোনো সদুত্তর দিতে না পারায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এরপর তাকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Sakawat Hossain Alamgir ১৭ জুলাই, ২০২০, ১:৩১ এএম says : 0
মুখোমুখি না পিঠাপিঠি
Total Reply(0)
Nazmul Haque Sapun ১৭ জুলাই, ২০২০, ১:৩১ এএম says : 0
এটা কোন সিনেমার স্যুটিং?
Total Reply(0)
তরুন সাকা চৌধুরী ১৭ জুলাই, ২০২০, ১:৩২ এএম says : 0
একটা বাজে নোংরা চরিত্রের মানুষ কিভাবে ডাক্তার হয় বুঝে আসে না।
Total Reply(0)
কামাল ১৭ জুলাই, ২০২০, ১:৩৩ এএম says : 0
তাহলে তো বোঝায় যাচ্ছে দুজনই সমান দোষী। ভালো করে থেরাপি দেয়া হোক সব ঠিক হয়ে যাবে।
Total Reply(0)
হোসাইন এনায়েত ১৭ জুলাই, ২০২০, ১:৩৩ এএম says : 0
এদের কটোর শাস্তি দেয়া হোক।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন