কক্সবাজার শহরতলীর নাজিরারটেক শুঁটকি পল্লীতে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছে প্রায় ১৪ হাজার শিশু শ্রমিক। করোনাকালীন সময় ও বর্ষা মৌসুমে ঋণে জর্জরিত এসব শিশুরা। ৩৮টি খাত শিশু স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত হলেও নেই বিশ্বের বৃহত্তম শুঁটকি পল্লী কক্সবাজারের নাজিরারটেক। যাচ্ছেতাই চলছে এই শুঁটকি পল্লীর শিশু শ্রমিকদের জীবন যাপন।
গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, ছোট বড় সহস্রাধিক বিশাল এই শুঁটকি পল্লীতে করোনা সঙ্কটের আগ পর্যন্ত ১৩ হাজার ৫২৪ শিশু শ্রমিক অত্যন্ত স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে কাজ করে আসছিল। এসব শিশুরা একদিকে যেমন শিক্ষা বঞ্চিত অপরদিকে তুলনামূলক কম মূল্যে মারাত্মক ঝুঁকিতে কাজ করে। এখানে কর্মরত শিশুদের মা-বাবারা অভাবের তাড়নায় শুঁটকি খলার মালিকদের নিকট থেকে অগ্রীম দাদন নিয়ে শিশুদের কাজ দিয়ে থাকেন।
করোনাকালীন সময়ে অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেমন প্রভাব ফেলেছে তেমনি কক্সবাজার নাজিরারটেক শুঁটকি পল্লীতেও পড়েছে লকডাউনের মারাত্মক প্রভাব। এখন চলছে বর্ষা মৌসুম। সাগরে মাছ ধরা এবং শুকানো ও রফতানির উপর নির্ভর করে থাকে শুঁটকি পল্লীতে কাজের ব্যস্ততা। লকডাউন কিছুটা স্বাভাবিক হলেও বর্ষা মৌসুমে শুঁটকি পল্লীতে কাজের ব্যস্ততা কম। শিশু শ্রমিকরা আবারো কর্মহীন। শুঁটকি পল্লীতে এখন কর্মহীন ও দাদন ঋণে জর্জরিত অধিকাংশ শিশু ও তাদের পরিবার।
কক্সবাজার নাজিরারটেক শুঁটকি পল্লীসহ দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখনো শিশু শ্রমের বিষয়টি উদ্বেগজনক বলে জানিয়েছে মার্কিন শ্রম সংস্থা আন্তর্জাতিক শ্রম বিষয়ক ব্যুরোর সাথে কর্মরত উইনরক ইন্টারন্যাশনাল। সংগঠনটির মতে, শিশু শ্রম বিষয়ে বিদ্যমান আইনের প্রয়োগ না থাকায় শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে জড়িয়ে পড়ে। তারা মনে করে শুঁটকি পল্লীতে কর্মরত ১৪ হাজার শিশু শিক্ষা বঞ্চিত ও মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। যে বয়সে স্কুলে যাওয়ার কথা অথচ কোন না কোন কারণে তারা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। এখন তারা একদিকে কর্মহীন অন্যদিকে ঋণগ্রস্ত। বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক বলে জানিয়েছে, সরকারের শিশু শ্রম বিষয়ে চলমান প্রচেষ্টায় অবদান রাখতে এ প্রকল্পে মিডিয়া এবং কমিউনিকেশন পার্টনার হিসেবে কর্মরত বিসিসিপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন