শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

উত্তরা-বনশ্রীতে রাজউকের উচ্ছেদ অভিযান

প্রকাশের সময় : ২ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:২৪ এএম, ২ আগস্ট, ২০১৬

স্টাফ রিপোর্টার
রাজধানীতে রাজউকের উচ্ছেদ অভিযান চলছে। গতকাল উত্তরা ও বনশ্রী আবাসিক এলাকায় রাজউক অভিযান চালিয়ে কয়েকটি হোটেল ও রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দিয়েছে। রাজউক জানায়, যে সকল প্লট, ভবন, ফ্ল্যাট ইত্যাদিতে অননুমোদিত/অবৈধভাবে গেস্ট হাউজ, রেস্টুরেন্ট, হোটেল, বারসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে এবং ফুটপাতে অবৈধ র‌্যাম্প নির্মিত হয়েছে, সে সকল অননুমোদিত স্থাপনা ব্যবহার বন্ধকরণে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
উত্তরার ৪নং সেক্টরের শায়েস্তা খান এভিনিউ ও ১১নং রোডে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার জাকির হোসেনের নেতৃত্বে গতকাল উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানে আবাসিক এলাকায় অবৈধভাবে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়ে ২টি আবাসিক হোটেল বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং এগুলোর মধ্যে একটি হোটেলের অভ্যর্থনা কক্ষ ভবনের পার্কিংয়ের স্থানে থাকায় তা উচ্ছেদ করা হয়। এ সময় অন্যান্য সেবাদানকারী সংস্থা এসব প্রতিষ্ঠানে তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।  
রাজউকের জোন-৬-এর অধীনে বনশ্রী আবাসিক এলাকায় বি-ব্লক ও ডি-ব্লকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ভবনের পার্কিংয়ের স্থানকে বাণিজ্যিক ব্যবহারের কারণে ২টি সুপার শপকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয় এবং তাদের এক মাসের মধ্যে পার্কিং স্থান খালি করে দেওয়ার জন্য সময় দেওয়া হয়। এছাড়া ৩৫টি ভবনের সামনের ফুটপাতের উপর নির্মিত অবৈধ র‌্যাম্প অপসারণ করা হয়।
রাজউকের এই উচ্ছেদ কার্যক্রমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ অন্যান্য সেবাদানকারী সংস্থা সহায়তা প্রদান করে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার আবাসিক এলাকায় অননুমোদিত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদে রাজধানীর উত্তরা মডেল টাউন ও বনশ্রী আবাসিক এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষÑরাজউক। উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরের ৬ ও ১৩ নম্বর সড়কে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার জাকির হোসেনের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। এ সময় পাঁচটি হোটেল-রেস্টুরেন্ট, একটি বিউটি পার্লার ও একটি বায়িং হাউজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় অন্যান্য সেবাদানকারী সংস্থা এসব প্রতিষ্ঠানে তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
বনশ্রী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাসির উদ্দিন। বনশ্রীর বি-ব্লক ও সি-ব্লকের প্রধান সড়ক এবং ৩ ও ৫ নম্বর সড়কে অভিযান পরিচালনা করে একটি সুপার শপকে কার-পার্কিংয়ে অবৈধভাবে বাণিজ্যিক ব্যবহারের কারণে দেড় লাখ টাকা জরিমানা এবং এক মাসের মধ্যে পার্কিংয়ের জায়গা খালি করার জন্য মুচলেকা নেন মোবাইল কোর্ট। পাশাপাশি ২০টি ভবনের সামনের ফুটপাতের ওপর নির্মিত অবৈধ র‌্যাম্প অপসারণ করা হয়। অভিযানকালে পুলিশ, ওয়াসা, ডেসা ও তিতাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা থেকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নিতে হাইকোর্টের রায় আপিলে বহাল

রাজধানীর ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা থেকে অননুমোদিত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো সরিয়ে নিতে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
এ বিষয়ে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ম্যাপললিফ ইন্টারন্যাশনালের করা লিভ টু আপিল খারিজ করে গতকাল সোমবার বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে মূল রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন মনজিল মোরসেদ। ম্যাপললিফ ইন্টারন্যাশনালের পক্ষে ছিলেন ড. আবুল বাশার। ২০১২ সালের ১১ জুন ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা থেকে অননুমোদিত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো সরিয়ে নিতে রায় দেন হাইকোর্ট। তবে ইতিপূর্বে বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে ঘোষণা করায় ধানমন্ডি-২, ২৭ নম্বর সড়ক, সাত মসজিদ ও মিরপুর সড়কের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো সরাতে হবে না। ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার বৈশিষ্ট্য রক্ষার নির্দেশনা চেয়ে সেখানকার দুই বাসিন্দা এম এ মাসুদ এবং এম এ মতিন হাইকোর্টে ২০১১ সালের রিট আবেদনটি করেন। এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারি করেন। একই সঙ্গে ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় নতুন স্কুল, কলেজ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও অনুমোদনের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১২ সালের ১১ জুন এ রায় দেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের রায়ের মনজিল মোরসেদ বলেছিলেন, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা থেকে সব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নিতে রাজউকের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ধানমন্ডি এলাকায় ম্যাপললিফ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ১১টি শাখা রয়েছে। তিন বছরের মধ্যে স্কুলের শাখাগুলো একত্র করে অন্যত্র সুবিধাজনক জায়গায় সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। শাখাগুলো স্থানান্তর না করা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট এলাকায় স্কুল কর্তৃপক্ষকে নিজস্ব লোকবলের মাধ্যমে যানজট নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় ভবিষ্যতে সিটি করপোরেশন বা রাজউককে কোনো ধরনের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন না দিতে বলা হয়েছে।
গতকাল মনজিল মোরসেদ বলেন, ২০১৫ সালে তিন বছর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এখন যেহেতু আপিল বিভাগে আবেদন খারিজ হয়ে গেছে, তাই যতো দ্রুত সম্ভব আবাসিক এলাকার বাণিজ্যিক স্থাপনা সরিয়ে নিতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন