অবশেষে মারা গেলো নাগেশ্বরী হলিকেয়ার ক্লিনিক এন্ড ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে জীবিত নবজাতককে মৃত ঘোষণা করা সেই শিশুটি। বৃহস্পতিবার রাত একটার দিকে রংপুর ডর্ক্টস ক্লিনিেিক এনআইসিইউতে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যায় শিশুটি। এ নিয়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ওই পরিবারে।
সোমবার (২০জুলাই) দুপুরে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর হলিকেয়ার ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে জীবিত নবজাতককে মৃত ঘোষনা করে এক ঘন্টা ফেলে রাখার অভিযোগ ওঠে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন অফিসে একটি লিখিত অভিযোগ করেন ওই পরিবার।
অভিযোগে জানা যায়, নাগেশ^রী পৌরসভা এলাকার মালভাঙ্গা গ্রামের আব্দুল আউয়ালের ছেলে হাবিবুর রহমান সাদ্দামের স্ত্রী গর্ভবতী জান্নাতুন ফেরদৌস নিশির সোমবার (২০জুলাই) বেলা ১১টার দিকে পেটব্যথা উঠলে তাকে নাগেশ্বরী হলিকেয়ার ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে নিয়ে আসে। সেখানে চিকিৎসক রোকেয়া আক্তার বিজলি পরীক্ষা নীরিক্ষা করে নিশি ২৫ সপ্তাহের গর্ভবর্তী এবং সে কৃটিক্যাল অবস্থায় রয়েছে, ১০ মিনিটের মধ্যে ক্লিনিকে ভর্তি করতে বলেন।
পরে রোগীকে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করার প্রায় দু’ঘন্টা পর মেয়ে সন্তান প্রসব করলে চিকিৎসক নবজাতককে মৃত ঘোষণা করেন। কিছুক্ষণ পর আরও একটি ছেলে সন্তান প্রসব করলে তাকেও মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক রোকেয়া আক্তার বিজলী। দুই নবজাতককে কাপড়ে ঢেকে রেখে স্বজনরা কান্নাকাটি শুরু করেন। প্রায় ঘণ্টাখানেক পর দুই নবজাতককে দাফন করতে কাফনের কাপড়সহ অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে নবজাতকের দুাদু। এ সময় ছেলে বাচ্চাটির কানে সূরা পড়ে ফুঁ দিতে গিয়ে দেখেন সে জীবিত। বিষয়টি চিকিৎসককে জানানো হলে, ছয় মাসের বাচ্চা বাঁচে না এবং পাঁচ মিনিটের মধ্যে মারা যাবে বলে চিকিৎসক বলেন। পরে নবজাতককে রংপুরের ডর্ক্টস ক্লিনিকে নিয়ে যায় স্বজনরা। সন্ধ্যায় রোগীর স্বজনসহ স্থানীয়রা ক্লিনিকে আসলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এসময় নাগেশ^রী পৌর মেয়র আব্দুর রহমান মিয়া ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
নবজাতকের পিতা হাবিবুর রহমান সাদ্দাম বলেন, রংপুর ডর্ক্টস ক্লিনিকে এনআইসিইউতে থাকাবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে মারা যায়। তবে হলিকেয়ারে ডাক্তার চিকিৎসায় অনেক অবেহলা করেছে। জীবিত বাচ্চাকে মৃত ঘোষণা করে ঠান্ডা ট্রেতে রেখে দেয়ায় সমস্যা হয়েছে। ডাক্তারদরে অবহেলার কারণেই আজ সন্তানকে হারাতে হলো। সঠিক সময়ে সুচিকিৎসা পেলে হয়তো আল্লাহ চোখ তুলে তাকাতো। এই কষ্ট সইতে পারছি না। আমরা এর সঠিক বিচার চাই। যাতে আর কোনো বাবা মায়ের বুক খালি না হয়।
এ ব্যাপারে কথা বলতে চিকিৎসক রোকেয়া আক্তার বিজলির সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তাকে পাওয়া যায়নি।
জেলা সিভির সার্জন মো. হাবিবুর রহমান বলেন, তদন্ত কমিটি করে দেয়া হয়েছে। তদন্ত চলছে। তদন্তের রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন