পাকিস্তান ও তুরস্কের মধ্যে সম্পর্ক আদিকাল থেকে। ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে সে সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। তুরস্কের ইস্তাম্বুলের ঐতিহাসিক আয়া সোফিয়া মসজিদকে ৮৬ বছর পর ফের মসজিদে রূপান্তর করায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এজন্য তুরস্ক ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়িব এরদোগানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় সময় শনিবার এক টুইটে পাক-প্রধানমন্ত্রী এ অভিনন্দন জানান। এসময় তিনি মন্তব্য করেন, আয়া সোফিয়া পুনরায় খুলে দেয়ার দিনটি একটি ঐতিহাসিক দিন।
একইসঙ্গে আয়া সোফিয়ার এই পুনর্জীবন দানে তুর্কি জনগণের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছেন পাকিস্তানের একাধিক সংগঠন ও তার নেতৃবৃন্দ। এদের মধ্যে রয়েছেন পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামির আমির সিনেটর সিরাজুল হক, পাঞ্জাবের প্রাদেশিক মন্ত্রী ওসমান বোজদার প্রমুখ।
এছাড়া, ইউরোপের বিভিন্ন দেশের মুসলিমরাও এরদোগানের সাহসী এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বের তুমুল জনপ্রিয় এই নেতার দীর্ঘায়ুও কামনা করছেন এদের অনেকে।
গত শুক্রবার পবিত্র জুমার নামাজের মধ্য দিয়ে ৮৬ বছর পর পুনরায় মসজিদ হিসেবে যাত্রা শুরু করলো তুরস্কের ইস্তাম্বুলের ঐতিহাসিক আয়া সোফিয়া।
সকাল থেকেই আয়া সোফিয়া অভিমুখে মানুষের ঢল নামে। ঐতিহাসিক এই স্থাপনার বাইরে ও রাস্তায় মানুষ নামাজ আদায় করেন। সোশ্যাল মিডিয়াতে এই মসজিদে নামাজের জায়গা পেতে রাতেই মানুষের জমায়েতের ছবি ভাইরাল হয়।
জুমার নামাজের আগেই উপস্থিত হন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান। মসজিদে প্রবেশ করে তিনি পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করেন। এসময় তিনি সুরা আল-ফাতিহা ও সুরা আল-বাকারা থেকে কয়েকটি আয়াত তেলাওয়াত করেন।
এরপরে, মসজিদের চারটি মিনার থেকে চারজন মুয়েজিন আজান দেয়। অতঃপর উপস্থিত লোকেরা জুমার নামাজ শুরু করে।
দেশি-বিদেশী পর্যটকদের জন্য তুরস্কের সর্বাধিক দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে আয়া সোফিয়া অন্যতম।
১৯৮৫ সালে, যাদুঘর হিসেবে স্থাপনাটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকাযর অন্তর্ভুক্ত হয়।
ইস্তাম্বুলে অবস্থিত এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটি ৯১৬ বছর টানা চার্চ হিসেবে ব্যবহ্রত হয়েছে। আর ১৪৫৩ সাল থেকে শুরু করে ১৯৩৫ সাল প্রায় পাঁচ শ' বছর ধরে মসজিদ হিসেবেই পরিচিত ছিল এটি। এরপর ৮৬ যাবত এটা জাদুঘর হিসেবে পরিচিত ছিল।
গত ১০ জুলাই তুর্কি আদালতের রায়ে ১৯৩৪ সালের তৎকালীন মন্ত্রী পরিষদের জাদুঘরে রুপান্তরিত করার আদেশটি রহিত করার পর পুনরায় মসজিদ হিসেবে চালু করতে আর কোন বাধা রইল না।
এরপর ১৬ জুলাই তুরস্কের ধর্ম বিষয়ক অধিদপ্তর এটি মসজিদে রূপান্তরিত হওয়ার পরে আয়া সোফিয়া পরিচালনার জন্য সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাথে একটি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
এই চুক্তির অধীনে দেশটির সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয় আয়া সোফিয়ার সংস্কার ও সংরক্ষণের কাজ তদারকি করবে এবং ধর্ম বিষয়ক অধিদপ্তর ধর্মীয় সেবা তদারকি করবে।
সূত্র : আল জাজিরা আরবি
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন