প্রথম পরিচয়েই একেবারে বন্ধুত্ব। এরপরেই শুরু সর্বনাশ। চা, সিগারেট, পান অথবা শরবতের সাথে কৌশলে খাইয়ে দেন চেতনানাশক। অতঃপর সর্বস্ব ছিনতাই। এভাবে চালকের কাছ থেকে অটোরিকশাও লুট করে তারা। পরে মালিকের কাছ থেকে মোটা অংকের ‘মুক্তিপণ’ আদায় করে এ চক্রটি। অজ্ঞান করে ছিনতাইয়ের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হতেই তারা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। অস্ত্র, ছোরার ভয় কিংবা চোখে-মুখে মলম লাগিয়ে তাদের অপারেশন সফল করে। ভয়ঙ্কর অজ্ঞান, মলমপার্টি ও অটোরিকশা ছিনতাই পার্টির ছয় সদস্যকে পাকড়াও করার পর এসব তথ্য জানান পুলিশের কর্মকর্তারা। বন্দর নগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামে এমন ১৪টি গ্রুপের শতাধিক সদস্য সক্রিয় রয়েছে। তারা একদিনে এমন বেশ কয়েকটি অপরাধ করে একযোগে গা ঢাকা দেয়। টাকা শেষ হয়ে গেলে ফের তারা মাঠে নামে। তবে লোকজনের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের চেয়ে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের পর মালিকের কাছ থেকে কয়েক লাখ নিয়ে তা ফেরত দিয়ে আয় বেশি বলেও জানান তারা। তারা স্বীকার করেছেন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে তাদের গ্রুপের সদস্যরা এখন সক্রিয়। এসময়ে তাদের টার্গেট গরুর বেপারি ও হাটে গরু কিনতে যাওয়া কিংবা ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ফেরা সাধারণ মানুষ।
গত সোমবার রাতে নগরীর পুরাতন স্টেশন রোড থেকে ওই ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- দলনেতা মো. সিরাজ (৫৫), আবু তাহের রকি (৩০), মো. মোজাম্মল হক রাসেল (২৮), কাজী নজরুল ইসলাম ফয়সাল (৩০), মো. আজিজুল হক (৪৫) ও মো. রাশেদ সোহেল (২৮)।
নগর পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, মো. সিরাজ (৫৫) চট্টগ্রামে অজ্ঞান পার্টির লিডার হিসেবে কাজ করেন। তারা সহজ সরলদের ছিনতাই করার জন্য প্রথমে টার্গেট করে। পরবর্তীতে টার্গেটকৃত ব্যক্তির গতিবিধি লক্ষ্য করে পিছু নেয়। ওই ব্যক্তি যদি চা খেতে যান তখন তার সাথে তাদের একজন কথা বলা শুরু করে। কথা বলার একপর্যায়ে চা খাওয়া বা জুস খাওয়ার অফার করে। চা বা জুস খাওয়ার আগে কৌশলে তাতে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে দেয়া হয়। ওই ব্যক্তি ঝিমিয়ে পড়তেই তার কাছে থাকা মোবাইল, মানিব্যাগ ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে নেয়। গ্রেফতার ছয়জনের বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। চক্রের অন্য সদস্যদের ধরতে অভিযান চলছে বলে জানান নগর পুলিশের কর্মকর্তারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন