জামালপুর জেলা সংবাদদাতা : বন্যার পানিতে ভেসে আসা ভারতীয় বন্যহাতিটি দীর্ঘ সময় পানিতে থেকে এবং পর্যাপ্ত খাবার না পেয়ে ধীরে ধীরে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে। এমনটাই জানিয়েছেন বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের ভেটোরনারি সার্জন। গত ৪ দিন ধরে জামালপুরের সরিষাবাড়ী সাতপোয়া ইউনিয়নের উত্তর চুনিয়ার পটল গ্রামে বন্যার পানিতে অবস্থান নিয়েছেন। খাবার সন্ধানে বার বার লোকালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে এলাকাবাসীর বাধার মুখে দিগি¦দিক ছুটছে হাতিটি। হাতির আক্রমণের ভয়ে দিন-রাত আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে ওই গ্রামের মানুষ।
গত ২৮ জুন ভারতের আসাম রাজ্যের গহীন অরণ্য থেকে আসামের উজান থেকে নেমে আসা পানিতে ভেসে আসে হাতিটি। এরপর গত ১ মাস ৫ দিন ধরে হাতিটি প্রথমে আটকা পড়ে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের নয়াচরে। সেখান থেকে হাতিটি জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ হয়ে বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলার যমুনা নদীর দুর্গমচরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ছুটে বেড়ায় নিরাপদ আশ্রয় ও খাবারের খোঁজে। এদিকে বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের একটি দল গত ২৫ দিন ধরে হাতিটি পর্যবেক্ষণ করে রাখছেন। হাতিটি কোন শুকনো স্থানে না উঠায় বন্যপ্রাণী দলটি হাতিটি উদ্ধারে বার বার ব্যর্থ হচ্ছে। তবে হাতিটি তা-ব চালিয়ে যাতে কোন বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি করতে না পারে সেই জন্য সকল প্রস্তুতি রেখে কাজ করছেন দলটি। তবে গত ৪ দিনে গ্রামের ফসল ও আখের ক্ষেতের ক্ষতি করছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তবে হাতিটিকে দেখতে উৎসুক নারী-পুরুষসহ শিশুরা নৌকায় চড়ে হাতির আশপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যে মুহূর্তে এইসব উৎসুক মানুষ হাতির আক্রমণের শিকার হতে পারেন।
এলাকাবাসী যে কোন সময় হাতির আক্রমণ থেকে নিজের রক্ষা করতে দিন-রাত আতংকের মধ্যে রয়েছে। তারা টিন, ড্রাম এবং আগুনের বোন্ধা নিয়ে হাতিটিকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। গতকাল বুধবার ভারতীয় বন বিভাগের ৩ সদস্যের দলটি বন্য প্রাণী উদ্ধারের জন্য সকাল ৯টায় বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক হযরত শাহ্ জালাল বিমান বন্দরে পৌঁছার কথা থাকলেও তারা বিকাল ৩.৩০ মিনিটে এসে পৌঁছেছেন আজ সরিষাবাড়ী উপজেলায় হাতিটিকে উদ্ধারের জন্য আসবে উদ্ধারকারী দল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন