চট্টগ্রামের আনোয়ারা নিখোঁজ ৩ জেলের সন্ধান মেলেনি ৪ দিনেও। বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাওয়া এসব জেলে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। পুরো এলাকা জুড়ে এখন শুধুই কান্নার রোল।
গত বুধবার সকালে বঙ্গোপসাগরের সাঙগু গ্যাস ফিল্ডের অদূরে ১২ মাঝি মাল্লা নিয়ে মাছ ধরার সময় ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলারটি ডুবে যায়। এ সময় নিখোঁজ হয় আনোয়ারা উপজেলার জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের খুরুস্কুল গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে মোহাম্মদ রফিক (৩৫), একই গ্রামের সিপাহী বাড়ির মৃত আবুল হোসেন প্রকাশ বাঁশির ছেলে কফিল উদ্দিন (৩০) এবং বাঁশখালী উপজেলার হাটখালী এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। তবে তার নাম এখনো জানা যায়নি।
নিখোঁজ জেলে কফিল উদ্দিনের স্ত্রী মোসা. কুনছুমা আকতার (২৫) জানান, বোটের মালিক একবার এসে দেড় হাজার টাকা দিয়ে চলে গেছে। আর কেউ কোনো খবর নেয়নি। নিজের কোনো বাড়ি ঘর নেই, ভাড়া বাসায় থাকে সে। ছোট ছেলে মেয়ে ও বৃদ্ধ মা-দাদাকে নিয়ে এখন তারা দিশেহারা।
ফিরে আসা জেলেদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আনোয়ারা উপজেলার গহিরা গ্রামের ইলিয়াছ ও জুঁইদন্ডী এলাকার আবুল হোসেনের মালিকানাধীন একটি মাছ ধরার ট্রলার ১২ জন মাঝি-মাল্লা নিয়ে গত মঙ্গলবার সকালে সাগরে মাছ ধরতে যায়। বুধবার সকাল ৮টার দিকে বঙ্গোপসাগরের সাঙগু গ্যাস ফিল্ডের অদূরে ট্রলারটি জাল ফেলে নোঙর করে। হঠাৎ সাগরে নিম্ন চাপের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলারটি ডুবে যায়। এ সময় ট্রলারের থাকা ১২ জন মাঝি-মাল্লার মধ্যে ৯ জনকে পার্শ্ববর্তী জেলেরা জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও ৩ জন নিখোঁজ রয়েছে এখনো।
ডুবে যাওয়া ট্রলারের মাঝি জহির উদ্দিন বলেন, আমরা সাগরে জাল ফেলে টানার সময় হঠাৎ ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়লে এটি ডুবে যায়। ওই সময় নিখোঁজ ৩ জন ট্রলারের কেবিনের ভেতরে ছিলেন। পরে আমরা সাঁতরে অন্য একটি ট্রলারে উঠলেও তারা ৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোরশেদুল আলম চৌধুরী খোকা বলেন, নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে নৌ-বাহিনীর সহযোগিতা নেয়া প্রয়োজন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে অর্থ-সহায়তা প্রদান করাও প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে আনোয়ারা থানার অফিসার ওসি দুলাল মাহমুদ বলেন, এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। পুলিশ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের বাড়িতে গিয়ে স্বজনদের সাথে কথা বলেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন