প্রাণঘাতী করোনা মহামারির কারণে বিদেশে লাখ লাখ প্রবাসী কর্মীরা বেকায়দায় পড়ছে। অধিকাংশ রেমিট্যান্সযোদ্ধা বিদেশে গিয়ে ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে পারছে না। কিছু কিছু দেশে চলমান লকডাউন শিথিল করা হলেও অনেক বাংলাদেশি কর্মীর কাজ না থাকায় তারা দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। চাকরি বহাল রাখার আশায় অনেক অসহায় প্রবাসী কর্মী দেশের আত্মীয় স্বজন ও বন্ধুবান্দবের কাছ থেকে ধার করে টাকা নিয়ে খাবার কিনে খাচ্ছে।
হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে প্রত্যাগত একাধিক প্রবাসী কর্মী এসব অভিমত ব্যক্ত করেছেন। করোনা মহামারির দরুণ কাজ না থাকায় প্রতিদিন চাকরি হারিয়েই দেশে ফিরতে হচ্ছে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের। ধার দেনা, চড়া সুদে ঋণ এবং ভিটেমাটি বিক্রি করে বিদেশে গিয়ে অনেকেই ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে পারছে না। অভিবাসন ব্যয়ের টাকা তুলতে না পেরেই খালি হাতে দেশে ফিরতে হচ্ছে প্রবাসী কর্মীদের। প্রত্যাগত এসব অসহায় প্রবাসী কর্মীরা পরিবারের বোঝা হয়ে দেখা দিচ্ছে। সরকার বিদেশ প্রত্যাগত প্রবাসী কর্মীদের পুর্নবাসনে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে প্রায় সাত শত কোটি টাকাস্বল্প সুদে ঋণ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্ভরযোগ্য সূত্র এতথ্য জানিয়েছে।
গতকাল শনিবার বিমানবন্দর প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক সূত্র জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাত ৯ টা ২৪ মিনিটে ফ্লাইট (বিজি-০৪৮) যোগে দুবাই থেকে ২৩২ জন কর্মী দেশে ফিরেছে। এদের মধ্যে ১৬ জন কর্মী আউট পাস নিয়ে ফিরেছে। রাত ১১ টা ৩৬ মিনিটে দুবাই থেকে ফ্লাইট (ই কে-৫৮৪) যোগে ২৩১ জন দেশে ফিরেছে। এদের মধ্যে ১৩ কর্মী আউট পাস নিয়ে ফিরেছে। রাত পৌনে ১ টায় মালয়েশিয়া থেকে ফ্লাইট (এম এইচ-১৯৬) যোগে চাকরি হারিয়ে ১১৮ জন কর্মী দেশে ফিরেছে। আজ শনিবার সকাল ৮ টা ৪০ মিনিটে দুবাই থেকে ফ্লাইট (ই কে-৫৮২) যোগে করোনার কারণে চাকরি হারিয়ে ২৩৪ জন প্রবাসী কর্মী দেশে ফিরেছে।
এদিকে, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও রেমিট্যান্সে বড় ধরনের রেকর্ড গড়েছেন প্রবাসীরা। গত জুলাই মাসের মাত্র ২৭ দিনেই ২ দশমিক ২৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। আর রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ায় রফতানি আয় কমার পরও প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৭ বিলিয়ন ডলারের সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে যা এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন