বি এম হান্নান, চাঁদপুর থেকে : দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প বেড়িবাঁধের কয়েকটি স্থানে সুড়ঙ্গ সৃষ্টিসহ বøক ধসে পড়েছে। এতে বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। সেইসাথে মেঘনা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় প্রচÐ ঢেউয়ে বেড়িবাঁধের এখলাছপুর থেকে মোহনপুর পর্যন্ত কয়েকটি জায়গায় বøক ধসে পড়েছে। বেলতলী থেকে গালিমখাঁ ব্রিজ পর্যন্ত অর্ধশত স্থানে সুড়ঙ্গ সৃষ্টি হয়েছে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে বেড়িবাঁধ পার্শ্ববর্তী বাসিন্দারা। কোনো কোনো এলাকার অবস্থা এতোই নাজুক যে, দ্রæত সংস্কার না হলে চলতি বর্ষা মৌসুমের যে কোনো সময় অতিরিক্ত পানির চাপে বাঁধ ভেঙ্গে বিশাল এলাকা প্লাবিত হতে পারে। এ সময় হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল, মৎস্য খামার ভেসে যেতে পারে। হুমকির মুখে রয়েছে ওই সব এলাকার অসংখ্য বসত বাড়িও।
মোহনপুর গ্রামের রফিক সরকার (৬০) জানান, কয়েকদিন ধরে মেঘনা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় প্রচন্ড ঢেউয়ে বাঁধের কয়েকটি স্থানে বøক সরে গিয়ে বাঁধ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। অচিরেই মেরামত না করলে বাঁধ ভেঙে যেতে পারে।
এলাকাবাসী জানান, পাউবোর ঠিকাদার এনায়েতনগর গ্রামের মাহমুুদুল হাসান বেড়িবাঁধ সংলগ্ন ও ধনাগোদা নদীর পাড় থেকে অবৈধভাবে বালু ড্রেজিং করে উত্তোলন করে। ওই বালু পাউবোর জমিতে ফেলে ৫ থেকে ৬ একর জমি দখল করেছে। ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় এনায়েতনগর গ্রামের পূর্ব দিকে বেড়ি বাঁধে ধস ও বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। নয়াকান্দি এলাকার খোরশেদ ভূঁইয়া জানান, আমাদের এলাকার আতঙ্কিত লোকজন রাতে নদী তীরবর্তী বাঁধ পাহারা দিচ্ছে। যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
ঠিকাদার মাহমুদুল হাসান অবৈধভাবে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের জমি দখল করে বিল্ডিং ও বহুতল ভবন করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি জমি বালি ভরাট করে সেতুর পিলারের ন্যায় মোটা করে গেটের পিলার নির্মাণ করছেন। কাঁটা তারের বেড়া দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী আতাউর রহমান জানান, এ জমি কাউকে লিজ দেয়া হয়নি। অবৈধভাবে মাহমুদুল হাসান দখল করেছেন। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে পানি ব্যবহারকারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সরকার মো. আলাউদ্দিন জানান, নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ধসে পড়া এলাকা ঘুরে দেখেছি। ব্যাগ দিয়ে বালি ফেলা হচ্ছে। মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনজুর আহমদ মঞ্জু বলেন, প্রচÐ ঢেউয়ে বেড়িবাঁধের কয়েকটি স্থানে ধসের খবর পেয়ে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে। তিনি ধসে পড়া এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন। আমি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রমকে বিষয়টি অবহিত করেছি। বøক ধসে পড়ারোধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, শুধু এখলাছপুর এলাকা নয়, উপজেলার পুরো বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন