করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। একারণে পিছিয়ে গেছে এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষা। অষ্টম শ্রেণির জেএসসি ও জেডিসি এবং পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক ও ইবতেদায়ীসহ বার্ষিক পরীক্ষাগুলো চলছে নানা আলোচনা। এছাড়া কবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে তা নিয়েও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা। এদিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আকরাম-আল-হোসেন জানিয়েছেন সেপ্টেম্বর মাসে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো খোলার মত পরিবেশ এখনও সৃষ্টি হয়নি। প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষা কিভাবে হবে সে বিষয়েও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পায়নি মন্ত্রণালয়।
রোববার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নে গণশিক্ষা সচিব বলেন, শিক্ষামন্ত্রী শনিবারও বলেছেন যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে এখনও কোনো পরিবেশ তৈরি হয়নি। আপনারা নিজেরাও বোঝেন আসলে পরিবেশ তৈরি হয়েছে কি হয়নি। এবার কেন্দ্রীয়ভাবে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা না নিয়ে নিজ নিজ বিদ্যালয়ে এই পরীক্ষা নিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, সে বিষয়েও এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। এখন যে অবস্থা, এখনও কিন্তু ২০-২২ শতাংশ (নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্ত রোগীর হার)। স্কুল খুললে অভিভাবকেরা চলে আসবে। তাদেরকে আমরা ঝুঁকির মধ্যে ফেলব কেন? সেটা আমাদের চিন্তা করতে হবে। আমরা মনে করছি যে আসলে তো এখনও পরিবেশ তৈরি হয়নি।
আকরাম-আল-হোসেন বলেন, পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় কিছু কিছু দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর আবার সেগুলো বন্ধ করে দিতে হয়েছে। সেজন্য আমরা মনে করছি আমাদের বাচ্চাদের ঝুঁকির মধ্যে না ফেলাটাই সমীচীন হবে। সেজন্য আমরা সরকারের সাথে আলোচনা করে দুই মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেব স্কুল কখন খোলা যায়। সেপ্টেম্বরে খোলার মত পরিবেশ হয়নি এখনও।
প্রাথমিক সমাপনী নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া গেছে কি না, সেই প্রশ্নে এই সিনিয়র সচিব বলেন, আমরা বলেছি যে স্ব স্ব স্কুলগুলো পরীক্ষা নেবে যদি স্কুল খুলতে পারি। কেন্দ্রীয় পরীক্ষা না নেওয়ার জন্য প্রস্তাব আছে। যদি পরিবেশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, তাহলে স্ব স্ব স্কুল পরীক্ষা নেবে, তবে সেই অনুমোদন এখনও আসেনি। প্রাথমিকের শিক্ষাবর্ষ দীর্ঘায়িত হবে কি না- এই প্রশ্নে সচিব বলেন, না। আমরা বলিনি জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টানব। মুখ্য সচিবের সাথে যে মিটিং হয়েছিল, সেখানেও সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে এই বছরের মধ্যে শেষ হবে। আমরা আশা করছি ডিসেম্বরের আগে স্কুলগুলো খুলতে পারব। খুলতে পারলে আমরা যে ৩৫ শতাংশ পড়িয়েছি এবং ঘরে বসে টিভি ও রেডিওর মাধ্যমে পাঠদান করছি, স্থানীয় শিক্ষকরা পড়াচ্ছেন। তাই আমরা এখনি বলছি না যে অটো পাস। পরীক্ষা নেওয়ার সময় পেলে যে পর্যন্ত পড়িয়েছি সেটার মধ্যে স্কুলগুলো প্রশ্ন করে পরীক্ষা নেবে। তারপরও যদি না নিতে পারি, সেটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে গত ১৮ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। আগামী ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা আছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন