পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের প্রশ্রয় দেয় বলে আন্তর্জাতিক মহলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছিল ভারত। তাতে পাত্তা না পেয়ে শনিবার ভারতের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দাবি করা হয়, ৮৮ ‘জঙ্গি’কে নিষিদ্ধ করেছে পাকিস্তান। তবে ভারতের এই দাবি ভিত্তিহীন বলে জানিয়ে দিয়েছে পাকিস্তান।
শনিবার এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র জাহিদ হাফিজ চৌধুরি জানান, তালেবান বা ইসলামিক স্টেট, যা দায়েশ নামে পরিচিত কোন সংগঠন বা ব্যক্তির উপরে কোনও নতুন নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়নি। তিনি জানান, গত ১৮ আগষ্ট তালেবান, আল-কায়েদা এবং আইএসের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কিত দুটি বিস্তৃত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। তালিকায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞায় থাকা ব্যক্তি ও সংস্থার নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এটি নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পর পর এই ‘এসআরও’ প্রকাশ করা হয়।’ তিনি জানান, আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতা থেকে এই জাতীয় এসআরওগুলো আগেও জারি করা হয়েছে। গত বছরে সর্বশেষ এসআরও জারি করা হয়ে। পাকিস্তান এই এসআরওগুলোর আওতায় নতুন করে কোন নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দিচ্ছে না।
ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি যে, পাকিস্তান তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের উপস্থিতি স্বীকার করেছে ও তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এই দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এসআরও-তে তালিকাভুক্ত ব্যক্তি বা সংস্থাগুলো আগে থেকেই নিষেধাজ্ঞার অধীনে রয়েছে এবং এই বিধিনিষেধও নতুন নয়।’ পাকিস্তানের গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, আফগান তালেবান, হাক্কানি নেটওয়ার্ক, দায়েশ এবং আল-কায়েদার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞাগুলো সম্পূর্ণ মেনে চলার নির্দেশ দিয়ে শুক্রবার পাকিস্তান সরকার এসআরও জারি করেছিল। এই সংগঠনগুলোর লেনদেন স্থগিতের, ভ্রমণ নিষিদ্ধকরণের এবং অস্ত্র নিষিদ্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এসআরওর ১০ নম্বর ধারায় নতুন এসআরও জারি করার উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের (নিরাপত্তা পরিষদ) ১৯৪৮ সালের আইনের (১৯৪৮ সালের ১৪) ধারা ২ দ্বারা প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে তালেবান নেতাদের এবং তাদের সাথে সম্পর্কিত তালিকাভুক্ত সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে ‘রেজোলিউশন ২২১৫ (২০১৫)’ সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়নের আদেশ দেয়া হল।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে ক্ষমতায় এসেই প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এফএটিএফ’র ‘ধূসর’ তালিকা থেকে বের হয়ে আসার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। সেই অনুযায়ী সম্প্রতি পাকিস্তানের সংসদে সন্ত্রাসবাদের বেশ কয়েকটি আইন পাস করা হয়েছে। সন্ত্রাসীদের অর্থায়ন ও অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে পাকিস্তান যে অগ্রগতি করেছে, বিশ্বব্যাপী অবৈধ-অর্থায়ন দীক্ষা সংস্থা ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সে (এফএটিএফ) তার আগাম পর্যালোচনার আগে এই এসআরও জারি করা হয়। উল্লেখ্য, তালেবানদের সাথে যে কোনও সম্পর্ক পাকিস্তান সবসময় অস্বীকার করে এসেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জারি করা নিষেধাজ্ঞা দেশটি পুরোপুরি মেনে চলছে। সূত্র: পাকিস্তান ট্রিবিউন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন