শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাড়ছে ছুটি

জেএসসি-জেডিসির সিদ্ধান্ত হবে আজ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ আগস্ট, ২০২০, ১২:০২ এএম

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে এখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ঝুঁকি নিতে চাইছে না সরকার। তাই গত ১৮ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আরও বাড়তে যাচ্ছে। পরিবেশ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ও পরীক্ষা স্থগিত রাখার চিন্তা করছে শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরিবেশ স্বাভাবিক হলেই পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া এবং পরীক্ষার বিষয়ে মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত জানাবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। আজ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে নতুন ছুটির ঘোষণা আসতে পারে। অষ্টম শ্রেণির জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ১৮ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় সরকার। এই ছুটি কয়েকদফা বাড়িয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়েছে। কিন্তু এখনো পরিবেশ স্বাভাবিক না হওয়ায় এই ছুটি আরও বাড়াতে যাচ্ছে সরকার। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী নতুন ছুটির বিষয়ে আজ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এদিকে করোনার কারণে স্থগিত হওয়া চলতি বছরের এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষাও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত গ্রহণ করা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। যখনই অনুকূল পরিবেশ তৈরি হবে তখনই ১৫ দিনের নোটিশে পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার বিষয়ে বিকল্প ৫টি প্রস্তাবনা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠালেও অষ্টম শ্রেণির জেএসসি ও জেডিসির বিষয়ে এখনো প্রস্তাব পাঠায়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আজ মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে প্রস্তাব চূড়ান্ত করে তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে বলে একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শিগগিরই প্রতিষ্ঠান খোলা যাচ্ছে না। বরং আরো ১৫ দিনের মতো ছুটি বাড়তে পারে। সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে এমনটাই চিন্তাভাবনা চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবার পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে না আরো ছুটি বাড়ছে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আকরাম-আল-হোসেন বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার এখনও কোনো পরিবেশ তৈরি হয়নি। তাই এবার কেন্দ্রীয়ভাবে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা না নিয়ে নিজ নিজ বিদ্যালয়ে এই পরীক্ষা নিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, সে বিষয়েও এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। এখন যে অবস্থা, এখনও কিন্তু ২০-২২ শতাংশ (নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্ত রোগীর হার)। স্কুল খুললে অভিভাবকেরা চলে আসবে। তাদেরকে আমরা ঝুঁকির মধ্যে ফেলব কেন? সেটা আমাদের চিন্তা করতে হবে। আমরা মনে করছি যে আসলে তো এখনও পরিবেশ তৈরি হয়নি। তিনি বলেন, আমরা সরকারের সাথে আলোচনা করে দুই মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেব স্কুল কখন খোলা যায়। সেপ্টেম্বরে খোলার মত পরিবেশ হয়নি এখনও।

করোনাভাইরাসের প্রকোপ না কমায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সময় এখনও হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। স্থগিত থাকা এইচএসসি এবং এবারের জেএসসি-জেডিসি এবং প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার নিয়ে সোমবার মন্ত্রিসভায় কোনো আলোচনা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এইচএসসি ও অন্যান্য পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আলোচনা করেছে; তারা দেখবে, দেখে দ্রুত একটা সিদ্ধান্ত নেবে। তবে স্কুল, কলেজ এখনও খোলার মতো সময় এসেছে বলে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে না। পরীক্ষার বিষয়ে উনারা (মন্ত্রণালয়) চিন্তা-ভাবনা করছেন, কীভাবে কী করা যায়।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, এখনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মতো অনুকূল পরিবেশ নেই। অনেক দেশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে পরে আবার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। তাই আমরা বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর জীবন নিয়ে কোন ঝুঁকি নিতে পারি না।

পরীক্ষার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এইচএসসি’র মতো এতো বড় একটি পাবলিক পরীক্ষা এখনো নেয়ার মতো অবস্থা নেই। এই পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যাই শুধু ১৪ লাখ, এর সাথে শিক্ষক, আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা থাকবেন। পরীক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন সাধারণত পরীক্ষার কেন্দ্রে নিয়ে আসেন, নিয়ে যান। তাদের বেশিরভাগই গণপরিবহন ব্যবহার করেন। এই বিপুল সংখ্যক মানুষের এবং তাদের পরিবারের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একটা পরীক্ষা আমরা চাইলেই নিয়ে ফেলতে পারি না। অনেক বিষয় ভাবতে হয়। সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নেয়া আছে। অনুকূল পরিবেশ হওয়া মাত্রই আমরা পরীক্ষার ঘোষণা দেবো। ১৫দিন নোটিশ দিয়ে পরীক্ষা নেবো। এছাড়া স্বাস্থ্যঝুঁকি না কমলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হবে না।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (12)
Mili Khan ২৫ আগস্ট, ২০২০, ২:৪২ এএম says : 0
আর ঘরে থাকতে ভালো লাগে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া উচিত।
Total Reply(0)
Lutfun Nessa ২৫ আগস্ট, ২০২০, ২:৪২ এএম says : 0
যারা স্কুল খোলার কথা বলে তাদের মনে হয় সন্তান নেই।তারা হলো.....
Total Reply(0)
Monjurul Islam ২৫ আগস্ট, ২০২০, ২:৪২ এএম says : 0
শুয়ে-বসে বেতন পেলে কে আর কর্ম করে! সব কিছুই চলছে আগের মতই কেউ কিছুই মানছে না। শিক্ষা বিমুখ করার দারুণ কৌশল মাত্র স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (বড়দের)খোলা যেতেই পারত।
Total Reply(0)
Sayed Aslam Ali ২৫ আগস্ট, ২০২০, ২:৪৩ এএম says : 0
এ দেশে শুধু ছাত্র -শিক্ষক ই মানুষ! আর বাকিরা.....
Total Reply(0)
Shamim Ahmed Shuvro ২৫ আগস্ট, ২০২০, ২:৪৪ এএম says : 0
ছাত্রছাত্রীদের জীবন আগে, পরে শিক্ষা। করোনায় স্কুল খুলে কোন ছাত্র মরলে এর দায়ভার কে নিবে? নিশ্চয়ই তখন সরকার নিবে না। কাজেই, বন্ধ রাখাই উত্তম।
Total Reply(0)
Md MonirBhuiyan ২৫ আগস্ট, ২০২০, ৮:০৭ এএম says : 0
করোনা ভাইরাসের উৎস ভূমি চীন দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে আরও আগেই। করোনা ভাইরাস কি শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই বিরাজমান নাকি? এটা জাতিকে শিক্ষা থেকে দূরে সরানোর কৌশলও হতে পারে। কারন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যেতে পারত।
Total Reply(0)
মো মিতুন ২৫ আগস্ট, ২০২০, ৯:০৩ এএম says : 1
বিশ্বের ৬৭ টি দেশের শিক্ষাপ্রতিস্ঠান আগামী সাপ্তাহ থাকে খুলে দেওয়া হচ্ছে কিন্তু আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিস্ঠান এখানো খুলে দেওয়া হচ্ছেনা।তবে স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রীদের বয়স কম তাদেরটা না খুল্লেও ভার্সিটি খুলে দেওয়া হোক
Total Reply(0)
Yusuf ২৫ আগস্ট, ২০২০, ১০:৩৪ এএম says : 0
It is high time for opening school
Total Reply(0)
Nayemul Haque ২৫ আগস্ট, ২০২০, ৪:৩১ পিএম says : 0
সবকিছুই যেখানে ঠিকঠাকমতো চলছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা সেখানে কতটুকু কার্যকর বা যৌক্তিক? ঐদিন ব্যাংকে গেলাম, সেখানে মানুষের ভীড় দেখে আমি শিহরিত ছিলাম। তবুও ঐ ভীড়েই এক ঘন্টা দাড়িয়ে টাকা উঠাতে হয়েছিল। তাছাড়াও মাছ বাজার, সবজি বাজার সবখানেই উপচে পড়া ভীড়! যারা এসব জায়গায় ভীড় জমাচ্ছেন তারাওতো কোনো না কোনো শিক্ষার্থীর পরিবারের। এতকিছুর পরেওকি শিক্ষার্থীরা ঝুকিমুক্ত? তারপরেও কেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হচ্ছেনা? তাদের জীবনের সময়ের মূল্য নেই? বলবেন আছে বলেইতো 'অনলাইন ক্লাস!' নেটওয়ার্কের সমস্যা, ডিভাইস, সিচুয়েশন, এ সংক্রান্ত আরো সমস্যার সম্মুখীনের কাছে এটা তাদের সাথে প্রহসন ছাড়া কিছুই নয়। আর সবকিছু খুলে দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখাটাও 'আগুন লাগা গাড়িতে পেট্রোলের ট্যাংক নিরাপদ রাখা'র মতো বৃথা চেষ্টা। অথবা বিষ-ঢালা পুকুরের মাছ ঐ পুকুরের পানিতেই নিরাপধ রাখার বৃথা চেষ্টা। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত। কারো সাথে মিলতে হবে এমনটা নয়। #Feeling bored at such lockdown
Total Reply(0)
nawfalforid ২৫ আগস্ট, ২০২০, ৪:৩১ পিএম says : 0
মাদ্রাসা খোলার আনুমতি আছে? কেননা মক্তব ও হিফজ বিভাগ ছারাও কিতাব বিভাগ তো খোলা হয়েগেছ।
Total Reply(0)
Nayemul ২৫ আগস্ট, ২০২০, ৪:৩৬ পিএম says : 0
দেশের সবকিছু খোলে দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখাটা মারাত্মক লেভেলের অযৌক্তিক একইসাথে অকার্যকর। লকডাউন দিলে সবকিছু দেয়া হোক নয়তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও খোলা হোক।
Total Reply(0)
Pranta Deb Sharma ২৫ আগস্ট, ২০২০, ১০:৫৮ পিএম says : 0
বিদ্যালয় না খোলাই উত্তম।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন