রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ফেসবুক-মোদি আঁতাত ছড়াচ্ছে মুসলিম বিদ্বেষ

টাইম | প্রকাশের সময় : ২৯ আগস্ট, ২০২০, ১২:০১ এএম

ফেসবুকের মাধ্যমে মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেয়ার বিষয়ে অভিযোগ বাড়তে শুরু করেছে ভারতে। অভিযুক্তরা নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতাসীন দলের সদস্য হওয়ায় ফেসবুক তার ঘৃণা সংক্রান্ত নীতিমালা কার্যকর করেনি। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে এই সোশাল মিডিয়া জায়ান্টের স্বচ্ছতা নিয়ে।

সম্প্রতি মুসলিম বিদ্বেষের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেছেন যে, ফেসবুক কিছু নীতি নির্ধারক বিজেপির খুব ঘনিষ্ঠ। ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিবিদরা জড়িত থাকায় এই সংস্থাটি তার প্ল্যাটফর্ম থেকে মুসলিমদের প্রতি ঘৃণামূলক বক্তৃতা অপসারণের পরিবর্তে সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করেছে। টাইম ম্যাগাজিনের নথি অনুসারে, ২০১৪ সালে ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার জন্য ফেসবুকের পাবলিক পলিসি ডিরেক্টর শিবনাথ ঠাকরাল বিজেপির নির্বাচনী প্রচারে সহায়তা করার জন্য দলীয় নেতৃত্বের সাথে কাজ করেছিলেন।

গত ১৪ আগস্ট ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বর্তমান এবং প্রাক্তন ফেসবুক কর্মীদের বরাত দিয়ে জানায় যে, বিজেপির সরকারি আইনজীবি টি. রাজা সিং মুসলিম অভিবাসীদের গুলি করার আহ্বান জানান। এরপর তাকে বিপজ্জনক বলে অভিহিত করে ফেসবুকে নিষিদ্ধ করতে চেয়েছিলেন এমন অন্য ফেসবুক কর্মীদের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টি করেছেন ভারতে ফেসবুকের শীর্ষ নীতি নির্ধারক আঁখি দাস।

তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে, সরকারি আইনজীবিকে শাস্তি দেওয়ার ফলে ভারতে ফেসবুকের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। ভারতে ফেসবুকের ব্যবসায়িক সম্ভাবনাগুলো সহজেই অনুমেয়। ভারতে ৩২৮ মিলিয়ন ফেসবুক ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানটির বৃহত্তম বাজার। প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ভারতীয় ফেসবুকের মেসেজিং পরিষেবা হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে। প্ল্যাটফর্মগুলো ভারতের রাজনীতিতে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

২০১৪ সালের নির্বাচনের পরে আঁখি দাস বলেছিলেন যে, মোদি তার নির্বাচনী প্রচারণায় ফেসবুক ব্যবহার করেছিলেন বলেই জিতেছিলেন। তবে, ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপকে বিজেপির ঘৃণামূলক বক্তৃতা এবং ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যও ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফলে সংস্থাটিকে ভারত জুড়ে ক্রমবর্ধমান সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার মধ্যে সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর উপর মারাত্মক হামলা চালাতে সহায়তা করার জন্য দায়ী করা হচ্ছে।

অবশ্য হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের দ্বারা বিদ্বেষমূলক বক্তব্য পর্যবেক্ষণ ও প্রতিবেদন করার জন্য নিয়োজিত ফেসবুক কর্মীরা টাইমকে বলেছে যে, ফেসবুক বিজেপির সদস্য ও সমর্থকদের আপলোড করা পোস্টগুলিতে নজরদারি করতে অনীহা প্রকাশ করেছে। কারণ প্রতিষ্ঠানটি ভারতে তার বৃহত্তম বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সরকারের সাথে লড়াই করতে চায় না।

ফেসবুকের হয়ে কাজ করার আগে ঠাকরাল বিজেপির একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। যদিও ক্ষমতাসীন দলের সাথে সংযোগ স্থাপনে দালাল ভাড়া করা এ ধরণের সংস্থাগুলোর জন্য একটি সাধারণ বিষয়। তবে আন্দোলনকারীরা বলছেন, ফেসবুকের ভারত নীতি সংক্রান্ত কর্মীদের ইতিহাস থেকে প্রতীয়মান যে, সরকারকে খুশি রাখতে তাদের উৎসাহ বিজেপির রাজনীতিবিদদের বিদ্বেষমূলক বক্তৃতাগুলোর পক্ষে কাজ করেছে। বর্তমানে ঠাকরালের কাজের ব্যাপ্তি আরো বেড়েছে।

চলতি বছরের মার্চে তাকে ফেসবুকের চাকরি থেকে পদোন্নতি দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপের ইন্ডিয়া পাবলিক পলিসি ডিরেক্টর করা হয়। নয়াদিল্লির প্রযুক্তি নীতি বিশেষজ্ঞরা টাইমকে বলেছেন, ঠাকরালের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হল মোদি সরকারের সাথে কোম্পানির সুসম্পর্ক রাখা। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কারণ ফেসবুক তার বার্তা অ্যাপ্লিকেশনটিকে ডিজিটাল পেমেন্ট প্রসেসরে পরিণত করার চেষ্টা করছে। যা শত শত কোটি ডলারের লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হবে।

গত এপ্রিলে ফেসবুক ঘোষণা করে যে, এটি ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানির মালিকানধীন দেশটির বৃহত্তম টেলিকম সংস্থা রিলায়েন্স জিওর ১০ শতাংশ অংশীদারীত্বে জন্য ৫.৭ বিলিয়ন ডলার দেবে। তবে ভারতে পেমেন্ট অ্যাপ্লিকেশন হিসাবে হোয়াটসঅ্যাপের ভবিষ্যত জাতীয় পেমেন্ট নিয়ন্ত্রকের চূড়ান্ত অনুমোদনের উপর নির্ভর করে, যা এখনও বিবেচনাধীন রয়েছে। নতুন ভ‚মিকায় ঠাকরালের অন্যতম অগ্রাধিকার হল হোয়াটসঅ্যাপ পে’র জন্য ফেসবুকের বড় উচ্চাকাক্সক্ষাটিকে বাস্তবায়িত করা।

ইয়েল ল স্কুলের প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্ম নিয়ন্ত্রণ বিষয়ের রেসিডেন্ট ফেলো চিন্ময়ী অরুণ এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘ভারতে কোনও বিদেশি সংস্থা সরকারের কালো তালিকায় থাকতে চায় না। অতীতে ফেসবুক বলেছিল যে, এটির প্ল্যাটফর্মে ঘৃণামূলক বক্তব্য দেওয়ার অনুমতি দেওয়ার কোনও ব্যবসায়িক আগ্রহ নেই। ভারতে যা চলছে তা থেকেই বোঝা যায় যে এটি সম্পূর্ণ সত্য নয়।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
Md. Shohel Rana ২৯ আগস্ট, ২০২০, ১:০২ এএম says : 0
Facebook news block Kore dice
Total Reply(0)
Nazera Zahir Chowdhury ২৯ আগস্ট, ২০২০, ১:০২ এএম says : 0
He is a man of evil
Total Reply(0)
কামাল ২৯ আগস্ট, ২০২০, ১:০৩ এএম says : 0
মোদি হচ্ছে গুজরাটের কুখ্যাত কসাই। মুসলিমদের রক্তা ছাড়া যার পেট ভরে না।
Total Reply(0)
জাহিদ খান ২৯ আগস্ট, ২০২০, ১:০৪ এএম says : 0
সন্ত্রাসী মোদির হাত থেকে ভারতের মুসলিমদের উদ্ধার করা জরুরি।
Total Reply(0)
রাজিব ২৯ আগস্ট, ২০২০, ১:০৪ এএম says : 0
মোদির উগ্রবাদী হিন্দুত্ববাদি সন্ত্রাসী কার্যক্রম গোটা তক্ষিণ এশিয়াকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
Total Reply(0)
রাগিনী মেয়ে ২৯ আগস্ট, ২০২০, ১:০৬ এএম says : 0
মুল কথা হলো ইহুদি ও মোদি মিলে মুসলিম ধ্বংসের প্রকল্প হাতে নিয়েচে। কিন্তু তা আর বাস্কবায়ন হবে না।
Total Reply(0)
নাজারেথ স্বনন ২৯ আগস্ট, ২০২০, ১:০৭ এএম says : 0
মোদির জন্ম থেকে বেড়া ওঠা ও প্রধানমন্ত্রী হওয়া সবই মুসলিম বিদ্বেসের ওপর নির্ভ র করে হয়েছে।
Total Reply(0)
abul kalam ২৯ আগস্ট, ২০২০, ৮:২৬ এএম says : 0
ভারতের হিন্দুরা ......., তারা ভাল হবে না
Total Reply(0)
Jack Ali ২৯ আগস্ট, ২০২০, ১২:১৭ পিএম says : 0
O'Allah curse modi and his supporter and again give us power to rule Our India again with Justice so India people will live in peace.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন