বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে আজ সোমবার দুপুরে নগরভবনের সিটি হল সভাকক্ষে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক প্রকাশিত ‘উত্তরবঙ্গে বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থের মোড়ক আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করে সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। বঙ্গবন্ধুর উত্তরবঙ্গে সফরকে কেন্দ্র করে গ্রন্থটি লিখেছেন রাসিকের শিক্ষা কর্মকর্তা আনারুল হক আনা।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মেয়র বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারাদেশে অসংখ্যবার ভ্রমণ করেছেন। রাজশাহীতে তাঁর বিভিন্ন সময়ে ভ্রমণ বিষয়ে রচিত ‘উত্তরবঙ্গে বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থটি বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে আগ্রহী করে তুলবে। বইটি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নতুন লেখক ও গবেষকদের পাথেয় হবে। মেয়র বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অসংখ্য লেখা প্রকাশ করেছেন। তিনি নিজেও বঙ্গবন্ধুর নানাদিক নিয়ে লিখেছেন। বর্তমানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিভিন্ন গ্রন্থ বের হচ্ছে। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তাঁকে নিয়ে কোন লেখা প্রকাশেও লেখকরা ভয় পেতো। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখায় অনেককেই নির্যাতিত হতে হয়েছে। অনুষ্ঠানে গ্রন্থটির লেখক আনারুল হক আনাকে ধন্যবাদ জানান মেয়র।
গ্রন্থটির লেখক আনারুল হক আনা বলেন, উত্তরবঙ্গে বঙ্গবন্ধু গ্রন্থে বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবনের কিছু প্রামাণিক তথ্য ধারণ করেছে। গ্রন্থটির পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। এর চূড়ান্ত নামকরণ করেছেন গ্রন্থটির গবেষণা কর্মের তত্ত্বাবধায়ক রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন। গ্রন্থটির ১৭টি অধ্যায়ে আছে উত্তরবঙ্গ বা বর্তমান রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের মোট ১৬ জেলায় বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতি ও তাঁর পার্থিব জীবন প্রবাহের সংক্ষিপ্ত বিবরণ। সহজভাবে পাঠের উদ্দেশ্যে ১৬ জেলার জন্য পৃথকভাবে নির্মাণ করা হয়েছে ১৬টি অধ্যায়। সপ্তদশ অধ্যায়ে উপস্থাপন হয়েছে বঙ্গবন্ধুর জীবন সংক্ষেপ। ১৭টি অধ্যায়ের মধ্যে শুধুমাত্র রাজশাহী অধ্যায় ৪টি পরিচ্ছেদে ভাগ হয়ে তথ্য বিশেষায়িত হয়েছে। এর কারণে বলা যায়, রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধুর আগমন, রাত যাপন, বিভিন্ন এলাকায় পদার্পণ ইত্যাদি বিষয় যেভাবে আলোচনা হয়েছে অন্য কোনো জেলা এভাবে উপস্থাপন সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন ধরনের সীমাবদ্ধতার কারণে লেখকের অনুসন্ধান অন্য জেলাসমূহে পৌঁছতে পারেনি। রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধু অধ্যায়ে ৪র্থ পরিচ্ছেদে এসেছে বঙ্গবন্ধু কর্নার। উত্তরবঙ্গে বঙ্গবন্ধু পা-ুলিপির কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি এ কর্নারকে কেন্দ্র করেই। বঙ্গবন্ধু সংশ্লিষ্ট স্থানীয় ইতিহাসের তথ্য দ্বারা কর্নারটিকে সমৃদ্ধকরণই ছিল এ অভিযানের প্রাথমিক উদ্দেশ্যে। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের বৃহৎ পরিসরের গবেষণামূলক গ্রন্থ রচনার কার্যক্রম মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের আন্তরিকতার ফলেই শুরু হয়েছে। তাই যুক্তিসঙ্গত ভাবনায় তাঁর কর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘ উত্তরবঙ্গে বঙ্গবন্ধু’ তাঁর উদ্দেশেই উৎসর্গ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানমঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাসিকের প্যানেল মেয়র-১ সরিফুল ইসলাম বাবু, গ্রন্থটির প্রকাশনা কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মো. নূরুজ্জামান টুকু, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন, লেখক আনারুল হক আনা, রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোকবুল হোসেন, স্থানীয় দৈনিক সোনালী সংবাদের সম্পাদক লিয়াকত আলী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাসিকের প্যানেল মেয়র-২ রজব আলীসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরবৃন্দ, রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর হবিবুর রহমান, প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার তাপু, প্রফেসর তানবিরুল আলম, রাসিকের সচিব আবু হায়াত মো. রহমতুল্লাহ, মেয়রের একান্ত সচিব মো. আলমগীর কবির, বাজেট কাম হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম খান, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এফএএম আঞ্জুমান আরা, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ নূর-ঈ সাঈদ, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মো. মামুন ডলারসহ স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মীবৃন্দ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন রাসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোস্তাফিজ মিশু।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন