চিকিৎসার অভাবে মুমূর্ষ অবস্থায় সদর হাসপাতালের ফ্লোরে পড়ে আছেন মাদারীপুরের একসময়ের তাজ বিড়ি ফ্যাক্টরির মালিক কোটিপতি ব্যবসায়ী নুরু মাতুব্বর। ৪ দিনেও খোঁজ নিতে আসেননি কোনো সন্তান। অথচ চার সন্তানকে বিঘার পর বিঘা সম্পত্তি লিখে দেয়ার পরও পরিবারের জ্বালাতনে গত ১৫ বছর ধরে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে দুবেলা খাবার খেয়েছেন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, উন্নত চিকিৎসা ছাড়া স্বাভাবিক জীবনে আর ফিরতে পারবেন না নুরু। এদিকে সন্তানদের আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি বৃদ্ধ ওই বাবার চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
জানা যায়, ষাঠোর্ধ্ব হতভাগ্য এক বাবা নুরু মাতুব্বর। মাদারীপুর সদর হাসপাতালের ফ্লোরে গত রোববার থেকে মুমূর্ষ অবস্থায় পড়ে আছেন। পাশে নেই কোনো সন্তান। কি দেননি চার সন্তানকে! বিদেশে পড়াশুনা, বিঘার পর বিঘা সম্পত্তি দিয়েছেন। কিন্তু গত চারদিনেও বাবাকে দেখতে আসার প্রয়োজন বোধ করেননি তারা। সদর উপজেলার ঝিকরহাটি গ্রামের এক সময়ের বিড়ি ফ্যাক্টরি মালিক কোটিপতি ব্যবসায়ী। অজ্ঞাত এক ব্যক্তি অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়ে গেছেন। প্রাথমিক চিকিৎসা চললেও খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে তার। দ্রুত তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন বলে জানান মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার চিকিৎসক ইমরানুর রহমান।
স্থানীয়রা জানান, বেশ কয়েক বছর আগে বন্ধ হয়ে যায় চরমুগরিয়া এলাকার ‘তাজ বিড়ি ফ্যাক্টরি। পরে এর মালিক নুরু মাতুব্বর বাড়ি বিক্রি করে ছেলেকে লন্ডন পাঠিয়ে পড়াশোনা করান। সেখান থেকে ফিরে ছেলে বিয়ে করে ঢাকায় ব্যবসা করছেন। নুরু মাতুব্বরের বিঘার পর বিঘা জমি তিন মেয়ে ও এক ছেলেকে লিখে দেয়ার পাশাপাশি তাদের সভ্রান্ত পরিবারে বিয়েও দিয়েছেন। এতো কিছু করার পরও গত ১৫ বছর ধরে বাড়িছাড়া হতভাগ্য বাবা। মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে খাবার সংগ্রহ করলেও এখন চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুশয্যায়। এমন ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এদিকে, বাবাকে ভরণপোষণ ও তার খোঁজ না নেয়ায় সন্তানদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুদ্দিন গিয়াস।
এ ব্যাপারে নুরু মাতুব্বরের সন্তানদের দাবি, পারিবারিক ঝামেলার কারণে তাদের বাবার সাথে যোগাযোগ অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন