শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

৮ মাস থেকে তেল শূন্য চিলমারী ভাসমান ডিপো বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা পড়েছে বিপাকে

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১০:৪০ এএম

দীর্ঘ প্রায় ৮ মাস থেকে তেল শূন্য হয়ে পড়ে আছে চিলমারীর ভাসমান ডিপো। অবহেলা অযত্মের অভাবে পড়ে থাকলেও নেই কর্তৃপক্ষের নজর। ব্যাপক চাহিদা থাকলেও দীর্ঘদিন থেকে তেল সরবরাহ বন্ধ থাকায় শতশত শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। পরিবার পরিজন নিয়ে করছে মানবেতর জীবন যাপন। এদিকে তেল সরবরাহ বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের সাথে বন্যা ও করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরাও পড়েছে বিপাকে। এমনকি অজ্ঞাত কারনে ট্যাংক লড়িতে তেল দেয়া বন্ধ থাকায় প্রায় ৮ মাস থেকে বেকার হয়ে কষ্টের সময় কাটচ্ছেন লড়ি শ্রমিকরা। ডিপো স্থায়ীকরণ, নিয়মিত তেল সরবরাহসহ সকল প্রকার সমস্যার সমাধান চান এলাকাবাসী। 

জানা গেছে, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, দিনাজপুরসহ কয়েকটি জেলার জ্বালানী তেলের চাহিদা মেটাতে ১৯৮৯ সালে তিনটি কোম্পানী চিলমারীতে স্থাপন করেন ভাসমান ডিপো। স্থাপনের কিছুদিন পর মেরামতের অজুহাতে পদ্মা ওয়েল কোঃ লিঃ তাদের বার্জ সরিয়ে নেয়। তবে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিঃ ও যমুনা অয়েল কোঃ লিঃ এর ভাসমান ডিপো নিয়মিত তেল সরবরাহ করে আসছিল। দিনের সাথে তাল মিলিয়ে তেলের চাহিদাও বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং ডিপো দু’টি থেকে তা পুরণ করা চেষ্টা করে কোম্পানী। কিন্তু কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীরা নিজেদের লাভের আশায় ভিন্ন ভাবে নেয় অনিয়মের আশ্রয়। শুধু তাই নয় ডিপো দু’টি থেকে পাশ্ববর্র্তী জেলা লালমনির হাট, দিনাজপুর, রংপুরের বিভিন্ন স্থানেও ট্যাংক লড়ির মাধ্যমে তেল সরবরাহ করা হলেও সেটিও কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ছত্রছায়ায় কৌশলে বন্ধ করে দেয় ট্যাংক লড়ি। ট্যাংক লড়ি বন্ধের হওয়ায় কয়েক বছর থেকে প্রায় দুই শতাধিক লড়ি শ্রমিক বেকার সময় কাটাচ্ছে। ট্যাংক লড়ি বন্ধ হওয়ায় পর থেকে কুড়িগ্রামসহ কয়েকটি জেলায় তেল সরবরাহ বন্ধ হওয়ায় শ্রমিকদের সাথে সাথে ডিলারসহ বিপাকে পড়ে কৃষক। ফলে তেলের চাহিদা মেটাতে উক্ত এলাকার ডিলারগন বাঘাবাড়ি, পার্বতিপুরসহ দুর থেকে তেল নিয়ে আসলেও মূল্য বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রায় সময় তেল শূন্য হয়ে পড়ে পুরো এলাকা। এদিকে ট্যাংক লড়ি বন্ধ হওয়ায় কুড়িগ্রামের চিলমারী, রৌমারী, রজিবপুরসহ জামালপুর, গাইবান্ধার কিছু এলাকায় ডিপো দু’টি থেকে তেল সরবরাহ করা হলেও দীর্ঘ প্রায় ৮ মাস থেকে তেল সরবরাহ বন্ধ থাকায় জ্বালানী তেলের চাহিদা পূরন হচ্ছেনা এবং বাড়ছে কৃষকদের মাঝে হতাশ। এদিকে তেলের চাহিদা মেটাতে ডিলারগন অতিরিক্ত ব্যয়ে দূরদূরান্ত থেকে তেল আনলেও এদিকে সময় মতো তেল পারছেনা ক্রেতা অন্যদিকে বেড়েছে মূল্য। সেই সাথে শতশত শ্রমিক হয়ে পড়েছে বেকার করছে মানবেতর জীবন যাপন। পুটিমারী, সরদারপাড়াসহ বেশ কিছু এলাকার কৃষকরা জানান, জনগনের সুবিধার জন্য তেল ডিপো স্থাপন করা হলেও তেল সরবরাহ না থাকায় চড়া মূল্যে তেল কেনা লাগছে এছাড়াও ১লিঃ তেল আনতে পাম্পে বা সদরে যেতেও ১৫/২০ টাকা খরচ হচ্ছে। রংপুর বিভাগ ট্যাংক লড়ি শ্রমিক ইউনিয়ন চিলমারী সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা রিয়াজুল হক বলেন, তেলের চাহিদাসহ সরকারী নির্ধারিত মূল্যে এই অঞ্চলের কৃষক যেন তেল পায় এই জন্য প্রায় ৩০ বছর আগে ভাসমান ডিপো স্থাপন করা হয়। কিন্তু নজরদারী অভাব আর দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে লড়ি বন্ধ করার সাথে সাথে তেল সরবরাহও বন্ধ রাখায় শতশত মানুষের রুজি বন্ধ হয়ে গেছে। কাজ বন্ধ রোজগার বন্ধ নেই ঘরে খাবার উল্লেখ করে শ্রমিক খয়বার, সুলতানসহ অনেকে জানান এই অঞ্চলে থেকে প্রায় ৫মাস কাজ থাকে বাকি সময় কাজ না থাকায় অনেকে এলাকা ছেড়ে বাহিরে গেলেও অনেকে বেকার সময় কাটান আর এই ডিপো দু’টির উপর অনেকের রুজি হতো কিন্তু সেটিও অচল হওয়ায় কষ্ট বাড়ছে। যমুনা ওয়েল কোঃ লিঃ চিলমারী ভাসমান ডিপো সুত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারী মাস থেকে তেল শূন্য রয়েছে ডিপো।।মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের কর্মকর্তা (অপারেশন) মোঃ আইয়ুব আলী জানান, চলতি বছরের জানুয়ারী প্রথম সপ্তাহ থেকে চিলমারী ভাসমান তেল ডিপোতে তেল আসেনি তবে এ মাসের মধ্যে চিলমারী ভাসমান ডিপোতে তেল আসবে।
বিষয়টি নিয়ে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ্ বলেন ডিপো দু’টি স্থায়ীকরণের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে আর তেল সরবরাহ বন্ধ আছে বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তবে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখবেন বলে তিনি জানান। ডিপো দু’টি স্থায়ীকরণ করা হক প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত আলী সরকার বীরবিক্রম বলেন শ্রমিক, কৃষকদের কথা চিন্তা করে আমরা চেষ্টা করছি এর সমাধানের জন্য।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন