উপচেপড়া ভিড় থাকতো প্রাকৃতিক রূপবৈচিত্র্য ও সৌন্দর্যের লীলাভ‚মি সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে। যদিও করোনাভাইরাস মহামারির কারণে টানা ৫ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে অর্থনীতির অপার সম্ভাবনাময় এ খাত। গত ১৭ আগস্ট কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র খুলে দিলেও সিলেটের পর্যটনকেন্দ্র খোলার ব্যাপারে আসেনি কোন নির্দেশনা।
অথচ সিলেট ও মৌলভীবাজারে রয়েছে আধুনিক মানের প্রায় ৫ হাজার হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউস। এছাড়া ২৫০০ গাড়ি পর্যটকের ওপর নির্ভরশীল। নিষেধাজ্ঞার কারণে এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রায় ৫০ হাজার কর্মী এখন বেকার। সব মিলিয়ে এখাতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকারও বেশি।
সিলেটে স্থানে স্থানে টিলা পাহাড় ঘেরা সবুজের হাতছানি, আছে জাফলং, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, ৭১ বধ্যভূমি, বিছনাকান্দি, ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর, রাতারগুল, লালাখাল, পাংথুমাই, মাধবকুন্ড জলপ্রপাত, চা গবেষণা ইনস্টিটিউট ও টাঙ্গুয়ার হাওর, শিমুল বাগান, নিলাদ্রী লেকসহ নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপারতা। সেই অপারতায় মুগ্ধতা ছড়ায় পর্যটকদের মধ্যে। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতির প্রভাবে গত ৮ মার্চ থেকে এসব পর্যটনকেন্দ্রে ও দর্শনীয় স্থান ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে প্রশাসন। এরপর থেকেই ধস নামে এ খাতে। চরম লোকসানের মুখে পড়ে বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র ও দর্শনীয় স্থান সংশ্লিষ্ট আবাসিক হোটেল-মোটেলসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সিলেট হোটেল অ্যান্ড গেস্ট হাউজ ওনার্স গ্রুপের সাবেক সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ জানান, বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠেছে অসংখ্য হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট। এর মধ্যে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শহরেই গড়ে উঠেছে শতাধিক রিসোর্ট। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন হোটেল-রিসোর্টের উদ্যোক্তারা। সবচেয়ে সম্ভাবনাময় খাতই এখন সবচেয়ে সঙ্কটে। সিলেটের পর্যটন মোটেল ব্যবস্থাপক কাজি ওয়াহিদুর রহমান বলেন, গত মার্চ মাস থেকে পর্যটকশূন্য রয়েছে সিলেট। সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে দ্রুত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবি জানান তিনি।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন সুলতানা জানান, এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি পর্যটন স্পটসমূহ খুলে দেয়ার। সিলেট চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সভাপতি আবু তাহের মো. সুয়েব বলেন, টেকসই অর্থনীতির ভিত্তি নেই সিলেটে। পর্যটন নির্ভর অর্থনীতির দ্বার এখন করোনায় বাঁধাগ্রস্থ। নিষেধাজ্ঞা দ্রæত তুলে না নিলে আরো ভয়াবহ বিপর্যয়ে পড়বে এখাত। স্থানীয়ভাবে পর্যটন নির্ভর বিনিয়োগের এ সুগম পথ বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন