পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার মানিকখালী গ্রামে যৌতুকের দাবিতে পুত্রবধূ তানজিলা বেগমের (২৬) ওপর শ্বশুর ও শাশুড়ির অমানুষিক শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর নিন্দার ঝড় ওঠে। তানজিলার স্বামী নাসির মুন্সি সউদী প্রবাসী।
গত শনিবার রাতে তানজিলার বাবা মো. সিদ্দিক মীর বাদী হয়ে মেয়ের শ্বশুর মো. ধলু মুন্সী ও শাশুড়ি আলেয়া বেগম ও চাচা শ্বশুর নুর মোহাম্মদ মুন্সীকে আসামি করে মঠবাড়িয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে এ মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ রাতেই নির্যাতিতা গৃহবধূর শাশুড়ি আলেয়া বেগমকে গ্রেফতার করে গতকাল দুপুরে আদালতে সোপর্দ করেছে।
জানা যায়, উপজেলার মানিকখালী গ্রামের ধলু মুন্সীর ছেলে সউদী প্রবাসী নাসির মুন্সীর সঙ্গে একই ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের সিদ্দিক মীরের মেয়ে তানজিলার বিয়ে হয়। নাসির প্রবাসে থাকা অবস্থায় সম্প্রতি শ্বশুর ও শাশুড়ি বসত ঘর তোলার জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা যৌতুক আনার জন্য দীর্ঘদিন ধরে তানজিলার ওপর চাপ দিয়ে আসছিল। এ নিয়ে পুত্রবধূর সঙ্গে প্রায়ই শ্বশুর-শাশুড়ির ঝগড়া হয়। তানজিলা বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে অস্বীকার করলে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্বশুরের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শ্বশুর তার পুত্রবধূকে টানাহেঁচড়া করে মাটিতে ফেলে প্রকাশ্যে মারধর করেন। এ সময় শাশুড়ি ও চাচা শ্বশুরও তানজিলাকে মারধর করেন।
এসময়ে তানজিলার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। গত চারদিন ধরে দু’সন্তানের জননী তানজিলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদিকে মারধরের এই ঘটনা অজ্ঞাত প্রত্যক্ষদর্শী মুঠোফোনে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দিলে নিন্দার ঝড় উঠে। এ ঘটনার পর থেকে তানজিলার শ্বশুর পালিয়ে যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সের আবাসিক চিকিৎসক ফেরদৌস ইসলাম বলেন, তানজিলা বেগমের শরীরে জখমের চিহ্ন আছে। তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। মঠবাড়িয়া থানা ওসি মাসুদুজ্জামান মিলু বলেন, গৃহবধূ তানজিলাকে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর মামলা নিয়েছি। মামলার এজাহারভুক্ত ওই গৃহবধূর শাশুড়ি আলেয়া বেগমকে গ্রেফতার করে গতকাল দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন