শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সম্পাদকীয়

খনিজ সম্পদের নতুন উৎসের অনুসন্ধান জরুরি

মো: আরাফাত রহমান | প্রকাশের সময় : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

ভূ-পৃষ্ঠে অথবা ভূগর্ভের কোনো স্থানে সঞ্চিত খনিজ সম্পদের অবস্থান মূলত সংশ্লিষ্ট স্থানের ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য ও সময়কাল দ্বারা নির্ণীত হয়ে থাকে। ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের ভূতাত্ত্বিক পরিবেশে সঞ্চিত বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদসমূহ হচ্ছেঃ প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা, চুনাপাথর, কঠিন শিলা, নুড়িপাথর, গন্ডশিলা, কাচবালি, নির্মাণকার্যে ব্যবহূত বালু, চীনামাটি, ইটের মাটি, পিট, সৈকত বালি এবং ভারি মণিক।ভূতাত্ত্বিক দিক থেকে বাংলাদেশের ভূভাগের বেশিরভাগই বঙ্গীয় অববাহিকার অন্তর্গত। দেশের অয়েল ও গ্যাস উইন্ডোর মধ্যে বিদ্যমান টারশিয়ারি বরাইল শিলাদল থেকে উৎপন্ন হয়েছে প্রাকৃতিক গ্যাস ও খনিজ তেল। উৎপন্ন হওয়ার পর এ প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেল উপরের দিকে বহু কিলোমিটারব্যাপী বিস্তৃত শিলাস্তর ভেদ করে উত্থিত হয়ে নিওজিন ভূবন ও বোকাবিল স্তরসমষ্টির মধ্যস্থিত সুবিধাজনক বেলেপাথর আধারে সঞ্চিত হয়। নুড়িপাথর, কাচবালি, নির্মাণ বালি, পিট ও সৈকত বালি প্রভৃতি খনিজ হলোসিন পললে পাওয়া যায়। দেশের উত্তরাঞ্চলের ক্ষুদ্র পাহাড়সমূহে বিদ্যমান প্লাইসটোসিন পললে পাওয়া যায় চীনামাটি বা কেওলিন। দেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে ভূ-পৃষ্ঠের অল্প গভীরতায়ও চীনামাটি ও কাচবালির মজুত আবিষ্কৃত হয়েছে। সীমিত মাত্রার উত্তোলনের মাধ্যমে চুনাপাথর, নির্মাণ বালি, কাচবালি, নুড়িপাথর, চীনামাটি ও সৈকত বালি আহরণ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে এ পর্যন্ত বিভিন্ন আকৃতির ২২টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। এদের মধ্যে ২০টি গ্যাসক্ষেত্রে পরিমাপকৃত গ্যাসমজুতের পরিমাণ প্রায় ২৫ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। অধিকাংশ গ্যাসক্ষেত্রের গ্যাসে কন্ডেনসেটের উপস্থিতি অল্প বা অতি অল্প বিধায় এদেরকে শুষ্ক গ্যাস বলা হয়। অল্প কয়েকটি গ্যাসক্ষেত্রে গ্যাসের সঙ্গে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কন্ডেনসেট পাওয়া যায় এবং এদেরকে ভেজা গ্যাস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এ ভেজা গ্যাসক্ষেত্রসমূহ হচ্ছে: বিয়ানীবাজার (প্রতি মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসে ১৬ ব্যারেল কন্ডেনসেট), জালালাবাদ (প্রতি মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসে ১৫ ব্যারেল কন্ডেনসেট) এবং কৈলাশটিলা (প্রতি মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসে ১৩ ব্যারেল কন্ডেনসেট)।

দেশের একমাত্র খনিজ তেলক্ষেত্রটি আবিষ্কৃত হয় ১৯৮৬ সালে সিলেটের হরিপুরে। এ তেলক্ষেত্রে তেলের মোট মজুতের পরিমাণ প্রায় ১০ মিলিয়ন ব্যারেল যার মধ্যে উত্তোলনযোগ্য মজুতের পরিমাণ প্রায় ৬ মিলিয়ন ব্যারেল। ১৯৮৭ সালের জানুয়ারি মাসে হরিপুর তেলক্ষেত্র থেকে তেল উৎপাদন শুরু হয়। উৎপাদন শুরুর পরবর্তী সাড়ে ছয় বছরে এ তেলক্ষেত্র থেকে ০.৫৬ মিলিয়ন ব্যারেল খনিজ তেল উৎপাদন করা হয়। ১৯৯৪ সালের জুলাই মাস থেকে তেল উৎপাদন স্থগিত হয়ে যায়।কৈলাশটিলা ও ফেঞ্চুগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্রে আরও দুটি তেলবাহী শিলাস্তরের সন্ধান পাওয়া গেলেও অর্থনৈতিকভাবে এ দুটি ক্ষেত্র থেকে তেল উৎপাদন লাভজনক হবে কিনা সে বিষয়ে এখনও সম্পূর্ণ জরিপকার্য পরিচালনা করা হয় নি। সাম্প্রতিককালে দেশে একাধিক সংখ্যক আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি হাইড্রোকার্বন অনুসন্ধানে নিয়োজিত রয়েছে। এ সকল কোম্পানির সঙ্গে পেট্রোবাংলার আওতাভুক্ত এবং দেশের একমাত্র তেল-গ্যাস অনুসন্ধানকারী প্রতিষ্ঠান বাপেক্স সফলভাবে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানে নিয়োজিত রয়েছে।

বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর (জি.এস.বি)-এর অব্যাহত প্রচেষ্টায় ৪টি কয়লাক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার যৌথ কোম্পানি বি.এইচ.পি-মিনারেলস আরও একটি কয়লাখনি আবিষ্কার করলে দেশে কয়লাখনির মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ৫টিতে। আবিষ্কৃত সকল কয়লাখনিই দেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। আবিষ্কৃত পাঁচটি কয়লাখনির মধ্যে অন্যতম বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি উন্নয়নের কাজ শুরু হয় ১৯৯৬ সালে। বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির উত্তোলনযোগ্য মজুত ৬৪ মিলিয়ন টন এবং বার্ষিক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ মিলিয়ন টন। ১৯৬০-এর দশকের প্রথমভাগে দেশের উত্তর-পূর্বভাগে অবস্থিত টাকেরঘাট এলাকায় ইয়োসিনযুগীয় চুনাপাথরের একটি ক্ষুদ্র মজুত থেকে চুনাপাথর আহরণ করে তা একটি সিমেন্ট ফ্যাক্টরীতে সরবরাহ করা হয়। প্রকৃতপক্ষে এটিই ছিল দেশের প্রথম খনি যেখান থেকে খনিজ সম্পদ আহরণ করা হয়। একই সময় জিওলজিক্যাল সার্ভে অব পাকিস্তান (জি.এস.পি) জয়পুরহাট জেলায় ভূ-পৃষ্ঠের ৫১৫ থেকে ৫৪১ মিটার গভীরতায় ১০০ মিলিয়ন টন মজুতবিশিষ্ট চুনাপাথরের অন্য আরেকটি খনি আবিষ্কার করে। প্রতিষ্ঠানটি তুলনামূলকভাবে অল্প গভীরতায় চুনাপাথরের মজুত অনুসন্ধানের লক্ষ্যে তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে। জি.এস.পি-এর উত্তরসূরী প্রতিষ্ঠান জি.এস.বি ১৯৯০-এর দশকের মধ্যভাগে নওগাঁ জেলার জাহানপুর ও পরানগর এলাকায় যথাক্রমে ভূ-পৃষ্ঠের ৪৯৩ থেকে ৫০৮ মিটার ও ৫৩১ থেকে ৫৪৮ মিটার গভীরতায় চুনাপাথর আবিষ্কার করে। চুনাপাথরের এ মজুত দুটির পুরুত্ব যথাক্রমে ১৬.৭৬ মিটার এবং ১৪.৩২ মিটার।

নির্মাণ সামগ্রীর সংকটপূর্ণ এ দেশে রয়েছে প্রিক্যাম্ব্রিয়ান যুগীয় গ্রানোডায়োরাইট, কোয়ার্জ ডায়োরাইট, নিস প্রভৃতি কঠিন শিলার বিশাল মজুত। জি.এস.বি দিনাজপুর জেলার মধ্যপাড়া নামক স্থানে ভূ-পৃষ্ঠের ১৩২ মিটার থেকে ১৬০ মিটার গভীরতায় এ সকল কঠিন শিলার মজুত আবিষ্কার করে। এ শিলাসমূহের বিশুদ্ধ অবস্থায় আর.কিউ.ডি ৬০ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত হয়ে থাকে। উত্তর কোরিয়া সরকারের সহায়তায় এ খনির উন্নয়ন কাজ পরিচালিত হচ্ছে।বার্ষিক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১.৬৫ মিলিয়ন টন।

বাংলাদেশের উত্তরপূর্ব, মধ্য ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জলাভূমিতে পিটের মজুত রয়েছে। মোট মজুতের পরিমাণ ১৭ কোটি টনের বেশি। পিটের তাপোৎপাদক মান পাউন্ড প্রতি ৬০০০ থেকে ৭০০০ বিটিইউ। বাংলাদেশে গার্হস্থ্য কাজে, ইটের ভাটায়, বয়লারের জ্বালানি হিসেবে পিট ব্যবহৃত হয়। ধাতব খনিজ মজুত অনুসন্ধান চালিয়ে জি.এস.বি বেশ কটি সম্ভাব্য ধাতব খনিজ বলয় চিহ্নিত করতে সমর্থ হয়েছে। দেশের উত্তরপশ্চিম অঞ্চলের ভূগর্ভস্থ নমুনা থেকে চ্যালকোপাইরাইট, বোর্নাইট, চ্যালকোসাইট, কোভেলাইন, গ্যালেনা, স্ফালারাইটের মতো ধাতব খনিজ পাওয়া গেছে।

নির্মাণ কাজের বালি দেশের বিভিন্ন নদনদীর তলদেশে পাওয়া যায়। প্রধাণত মাঝারী থেকে মোটা দানাদার কোয়ার্টজ সমন্বয়ে এ বালি গঠিত। দালান, সেতু, রাস্তা ইত্যাদি নির্মাণে এ বালি ব্যাপকভাবে ব্যবহূত হয়।নুড়িপাথর দেশের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত এলাকায় হিমালয়ের পাদদেশ বরাবর নুড়িপাথর পাওয়া যায়। বর্ষাকালে উজান এলাকা থেকে এসব নুড়িপাথর নদী দ্বারা বাহিত হয়ে আসে। নুড়িপাথর মজুতের মোট পরিমাণ প্রায় ১ কোটি কিউবিক মিটার। এ মজুত উন্নয়ন কার্যক্রমে ব্যবহার করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের বৃহত্তর রংপুর ও দিনাজপুর জেলার গন্ডশিলাসমুহ মূলত পাললিক শিলাজাত। অপরদিকে বৃহত্তর সিলেট জেলার জৈন্তাপুর ও ভোলাগঞ্জ এলাকার গন্ডশিলাসমূহের উৎসশিলা হলো আগ্নেয় বা রূপান্তরশিলা। এসব অঞ্চল ছাড়াও সংলগ্ন পর্বতমালা থেকে উৎসারিত অসংখ্য পাহাড়ি নদীর তলদেশে ও নদীর কাছাকাছি এলাকায়ও গন্ডশিলা মজুত হয়। সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে এসব পাহাড়ের অধিকাংশ অবস্থিত। টেকনাফের সমভূমি অঞ্চলের তিনটি স্থানে এবং উখিয়া উপজেলার ইনানীতে গন্ডশিলা সঞ্চিত আছে। টেকনাফ-কক্সবাজার সমুদ্রতীরের ৭টি স্থানে গন্ডশিলার আলাদা আলাদা মজুত রয়েছে।

বাংলাদেশে চীনামাটির উল্লেখযোগ্য মজুত রয়েছে। ভূ-পৃষ্ঠের উপরে বা ভূ-পৃষ্ঠের সামান্য নিচে নেত্রকোণা জেলার বিজয়পুর, শেরপুর জেলার ভুরুংগা ও চট্টগ্রাম জেলার হাইটগাঁও, কাঞ্চপুর, এলাহাবাদ এবং ভূ-পৃষ্ঠের অভ্যন্তরে দিনাজপুর জেলার মধ্যপাড়ায় চীনামাটির মজুত আবিষ্কৃত হয়েছে। চীনামাটি বলতে মূলত কেয়োলিন কাদা মণিক দিয়ে গঠিত সিরামিক শিল্পে ব্যবহার্য উন্নতমানের কাদাকে বোঝানো হয়ে থাকে।বাংলাদেশে কাচবালিরও উল্লেখযোগ্য মজুত রয়েছে। ভূ-পৃষ্ঠের উপরে বা ভূ-পৃষ্ঠের সামান্য নিচে বালিজুরী, শাহজিবাজার ও চৌদ্দগ্রামে এবং ভূ-পৃষ্ঠের অভ্যন্তরে মধ্যপাড়ায় ও বড়পুকুরিয়ায় কাচবালির মজুত আবিষ্কৃত হয়েছে। কাচবালি হলুদ থেকে ধুসর এবং সূক্ষ্ম থেকে মাঝারী আকারের কোয়ার্টজ দিয়ে গঠিত।

বাংলাদেশের উপক‚লীয় বলয় ও উপক‚লীয় দ্বীপসমূহে সৈকত বালির মজুত চিহ্নিত করা হয়েছে। এ সৈকত বালিতে বিভিন্ন ধরনের ভারী মনিকের মজুত রয়েছে, যেমন: জিরকন, রূটাইল, ইলমেনাইট, লিউকক্সিন, কায়ানাইট, গারনেট, ম্যাগনেটাইট ও মোনাজাইট। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী জেলার প্লাইসটোসিন ও হলোসিন যুগীয় ইটের মাটির খনিজতাত্ত্বিক, রাসায়নিক ও প্রকৌশলগত গুণাগুণ বহুল প্রমাণিত। হলোসিন ও প্লাইসটোসিন এমনকি নবীন টারশিয়ারি নমুনার সামগ্রিক রাসায়নিক ও প্রকৌশলগত গুণাগুণ উত্তম মানের ইট প্রস্তুতের জন্য সন্তোষজনক।

১৮৫৭ সাল থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত সময়কালে ভূতত্ত্ববিদগণ বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে কয়লাখনির অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা ব্যক্ত করেন। ভূতাত্ত্বিকগণের মতামতের ভিত্তি ছিল পশ্চিমবঙ্গের রাণীগঞ্জের কয়লাসমৃদ্ধ অঞ্চল এবং বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের ভূগর্ভের ভূতাত্ত্বিক সামঞ্জস্য। এ সম্ভাবনা সত্ত্বেও পাকিস্তান আমলে এ অঞ্চলে খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানকার্য ছিল অবহেলিত। ১৯৫৯ সালে আমেরিকার স্ট্যান্ডার্ড ভ্যাকুয়াম অয়েল কোম্পানি- স্ট্যানভাক কর্তৃক তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশে তেল অনুসন্ধান প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন স্থানে কূপ খনন করার সময় এদেশে উন্নতমানের খনিজ সম্পদ প্রাপ্তির অনুমান যথার্থ বলে প্রমাণিত হয়। ১৯৮৫ সালে দিনাজপুর জেলার বড়পুকুরিয়াতে, ১৯৮৯ সালে রংপুর জেলার খালাশপীর নামক স্থানে এবং ১৯৯৫ সালে দিনাজপুরের দীঘিপাড়াতে এবং ১৯৯৭ সালে একই জেলার ফুলবাড়ীতে কয়লাখনি আবিষ্কৃত হয়। ১৯৭৪-৭৫ সালে দিনাজপুর জেলার মধ্যপাড়া নামক স্থানে ও সংলগ্ন এলাকায় ভূ-পৃষ্ঠের অতি অল্প গভীরতায় কঠিন শিলার খনি পাওয়া যায়।
লেখক: সহকারি কর্মকর্তা, ক্যারিয়ার এন্ড প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস বিভাগ, সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন