সিরাজগঞ্জ জেলার সর্বত্র তীব্র গো-খাদ্যের সঙ্কট চরমভাবে দেখা দেয়ায় মহাবিপাকে পড়েছেন কৃষক। গো-খাদ্যের সংগ্রহের জন্য তারা হন্যে হয়ে ঘুরছেন। গো-খাদ্য সঙ্কট তার ওপর এ খাদ্যের মূল্য চরমভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে তারা। অনেকে খড়ের অভাবে অন্যান্য খাদ্য খাওয়ানোর জন্য গরুর রোগব্যাধি দেখা দিচ্ছে। তাই সব কিছু মিলিয়ে গবাদি পশু পালনকারীরা দু’চোখে সর্ষের ফুল দেখছে।
জানা গেছে, জেলার নদী তীরবর্তী কাজিপুর, সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, চৌহালী, শাহজাদপুর, উল্লাপাড়াসহ বিস্তীর্ণ চলনবিল জুড়ে এ সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করছে। ফলে মূল্যবৃদ্ধি চরম পর্যায়ে পৌছে গেছে। বর্তমানে ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার দরে এক পালা (খড়ের গাদা) খড় বিক্রি হচ্ছে।
এত উচ্চ মূল্যে খড়ের গাদা প্রান্তিক কৃষকদের পক্ষে ক্রয় করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সামর্থবান কৃষকেরা উচ্চমূল্যে খড় কিনতে সক্ষম হলেও দরিদ্রের পক্ষে তা কোন ক্রমেই সম্ভবপর হচ্ছে না। বন্যা, করোনা এবং বৃষ্টি বাদলের জন্য যথাসময়ে কৃষকেরা তাদের ইরি-বোরো চাষকরা ধানের খড় সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হওয়ায় এ বছর খড়ের দাম সর্বোচ্চ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। গতকাল রোববার উল্লাপাড়া উপজেলার খাদুলী গ্রামের চলনবিল অঞ্চলের একটি খড়ের পালা ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে।
অত্র এলাকার আব্দুর রাজ্জাক নামের জোতদার জানান, চলতি বছর ইরি-বোরো মৌসুমে লাগাতার বৃষ্টিপাত ঘটায় কৃষকেরা তাদের চাহিদা মোতাবেক কাঙ্খিত ধানের খড় শুকাতে ব্যর্থ হয়। অনেক ধানের খড় পচে নষ্ট হয়ে পড়ে। ফলে গো-খাদ্যের সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। সেই সাথে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বছর খড়ের মূল্য দিগুণ বেড়েছে।
উল্লাপাড়া উপজেলার প্রনীসম্পদ অফিসার মোহাম্মদ মোর্সেদ জানান, এ উপজেলায় দুই লাখ আটত্রিশ হাজার আটাশ মেট্রিক টন খড়ের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা অর্জন করতে পারে নি। সিরাজগঞ্জ জেলার ডি এল ও ডা. আকতারুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, সরকারিভাবে পশু খাদ্যে ভর্তুকি অথবা সহজশর্তে এ খাদ্যের জন্য ঋণ দেয়া হলে কৃষক ও গো খামারিদের বিচলিত হতে হতো না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন