বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাস্থ্য

পুড়ে গেলে কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা

প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

পানি ব্যবহার : যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পোড়া জায়গা কলের পানিতে ঠা-া করতে হবে। পোড়াস্থান কল থেকে পড়ন্ত পানির নীচে ১৫-২০ মিনিট রাখতে হবে। এর ফলে ব্যথা বা জ্বালাপোড়া কমে, পোড়াস্থান বিস্তৃত হতে পারে না, ঘা শুকাতে সহজ হয় ও পরবর্তীতে পোড়া জায়গাতে সংকোচন তৈরি হয় না। পোড়াস্থান যদি মুখে, বুকে বা পিঠে হয়, তবে শাওয়ার ছেড়ে পানিতে ভিজাতে হবে। আশেপাশে পুকুর থাকলে প্রয়োজনে সেখানে বুক বা গলা সমান ডুবিয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়। এভাবে যদি ব্যথা না কমে, পোড়াস্থান পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে অথবা সেখানে জলপট্টি দিতে হবে। পোড়া জায়গাতে সরাসরি বরফ লাগানো যায় না। তবে পোড়া কম হলে, বরফশীতল পানিতে কাপড় ডুবিয়ে সেখানে ঠা-া সেক দেয়া যায়।
অ্যালোভেরার যতœ : পোড়া ঘায়ে এর ব্যবহার খু-উ-ব জনপ্রিয়। কোথাও পুড়ে গেলে, অ্যালো গাছ থেকে একটা রসালো পাতা নিয়ে তার সবচেয়ে পুরু অংশের, দুপাশের সবুজ খোসা ছড়িয়ে নিংড়ে সামান্য জেল বের করতে হবে। এই জেল পোড়া অংশে লাগিয়ে আঙ্গুল দিয়ে হালকাভাবে ঘষলে ব্যাথা ক্রমশঃ সেরে যায়। দিনে দুইবার করে কয়েকদিন অ্যালোজেল মাখলে ঘা আস্তে আস্তে শুকিয়ে আসে ও পোড়া চামড়া তার আগের রং ফিরে পায়। বাসায় একটা অ্যালোভেরা গাছ থাকলে তা বিভিন্নভাবে আমাদের উপকার করতে পারে।
ভিনেগার প্রয়োগ : পোড়া চিকিৎসায় ভিনেগার প্রয়োগ চমৎকার কাজ করে। ভিনেগার পোড়া জায়গার ফোলা ও ব্যাথা কমায় এবং জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে। সম পরিমাণ পানির সাথে ভিনেগার মিশিয়ে, তাতে ভাজ করা কাপড় ভিজিয়ে জলপট্টির মত বার বার লাগাতে হয়। বুকে বা পিঠে কোথাও পুড়ে গেলে একটা সুতি কাপড়ের টি-শার্ট উক্ত ভিনেগার পানিতে ভিজিয়ে পরিধান করলে, জ্বালা-পোড়া কমে গিয়ে অনেকটা আরাম পাওয়া যায় ও ভালো ঘুম হয়। যে কোন ধরনের ভিনেগার, আগুনে বা গরম পানিতে পোড়ায় ব্যবহার করা যায়।
টি-ব্যাগ স্থাপন : টি-ব্যাগ (২-৩ টা) ঠা-া পানিতে ভিজিয়ে পোড়া জায়গার উপর গজ দিয়ে আটকে রাখলে ভাল কাজ হয়। চা পাতার ট্যানিক এসিড পোড়া স্থান থেকে দ্রুত তাপ টেনে নিয়ে জ্বালা-পোড়া কমায় ও ফোলা কমাতে সাহায্য করে। টি-ব্যাগ শুকিয়ে আসলে তার উপর ও পোড়ার কিনারে সামান্য ঠা-া পানি দিয়ে ভিজাতে হবে। পোড়ার উপর টি-ব্যাগ বসিয়ে হাটা-চলা করা সহজ হয়।
দইয়ের প্রলেপ : দই পোড়ার প্রতিষেধক হিসেবে পরিচিত। উহা পোড়া উপশম করতে ও তা ঠা-া রাখতে সাহায্য করে। পোড়াস্থানের উপর ঠা-া দই মেখে ১৫-২০ মিনিট পর তা ধুয়ে ফেলতে হয়। ব্যাথা ও ফোলা কমাতে দইয়ের প্রলেপ বার বার লাগানো যায়। সাধারণ টক দই এ চিকিৎসায় ভাল কাজ করে।
অন্যান্য : পোড়া নিরাময়ে চাক-ভাঙ্গা মধুর ব্যবহার বেশ পুরনো ও ফলদায়ক। গরম খাবারে মুখে পোড়া লাগলে ঘন ঘন ঠা-া লবণ-পানির কুলিতে উপকার হয়। তা ছাড়া দুধ, সদ্য কাটা আলু, গাজর ইত্যাদি ঘরোয়া চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
কোথাও পুড়ে গেলে ঘরোয়া চিকিৎসার পাশাপাশি প্রয়োজনে ডাক্তার দেখানো দরকার। অতি মাত্রায় পুড়ে গেলে সাথে সাথে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়।
মনে রাখতে হবে ,
গায়ে আগুন লাগলে , না দৌড়ে মাটিতে শুয়ে পরে গড়াগড়ি দিতে হবে। আশেপাশে কেউ থাকলে, আগুন লাগা ব্যক্তিকে কাঁথা বা কম্বল দিয়ে জড়িয়ে ধরে তার আগুন নিভানো যায়।
পোড়া জায়গায় আংটি বা অন্য কোন জুয়েলারি থাকলে তা অতিসত্তর খুলে ফেলতে হবে। পরে ফুলে উঠলে, তা সরানো খুব কষ্টকর হয়ে যায়।
পোড়া ঘায়ে ফোস্কা পড়লে তা ফুটো করা যাবে না।
বেশি পুড়ে গেলে ধনুষ্টংকারের ইঞ্জেকশান নিতে হয়।
পোড়া ছাড়া শরীরে অন্য কোন আঘাত আছে কিনা তা খেয়াল করা দরকার।
আগুন লাগার স্থান থেকে যথাসম্ভব দূরে ও বাতাসের বিপরীত দিকে অবস্থান করা উচিৎ।
পোড়ার ধরণ অনুযায়ী প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া দরকার।
ষ ডাঃ নাসির উদ্দিন মাহমুদ
হামিদ-নূরজাহান হাসপাতাল, ভূমদক্ষিন, সিঙ্গাইর, মানিকগঞ্জ
গড়নরষব হড়: ০১৯৮০৪৮৫০০৭
হধংরৎঁফফরহ১৫৪৪@মসধরষ.পড়স

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন